বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের কাহিনী: এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা

বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের কাহিনী: এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা
🎧 Listen in Audio
0:00

বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের কাঁপুনি ধরানো অভিজ্ঞতা। ১৯৯৩ সালের অউরঙ্গাবাদ, ২০১০ সালের মঙ্গালুরু এবং ২০২০ সালের কোঝিকোড দুর্ঘটনায় কিভাবে কিছু মানুষ বেঁচে গেলেন—তাদের নিজেদের কথায় ঘটনার বর্ণনা।

বিমান দুর্ঘটনা: বিমান ভ্রমণকে সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হয়, কিন্তু যখন কোনও বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়, তখন শুধু ধ্বংসাবশেষই পিছনে রইয়ে যায় না, গভীরে পুঁতে থাকে স্মৃতি এবং ব্যথার অতল গহ্বর। কিছু বিরল মানুষ আছেন, যারা এই দুর্ঘটনার মধ্য থেকে যেন কোনও অলৌকিক ঘটনার মতো বেঁচে যান। তাদের অভিজ্ঞতা কেবলমাত্র এই ঘটনার ভয়াবহতাকেই উন্মোচন করে না, মানুষের সাহস এবং ভাগ্যের ভূমিকাকেও তুলে ধরে।

১৯৯৩ সালের অউরঙ্গাবাদ বিমান দুর্ঘটনা

১৯৯৩ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের অউরঙ্গাবাদ থেকে মুম্বাইগামী ফ্লাইট ৪৯১ রানওয়েতেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই দুর্ঘটনায় মোট ১১২ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে ৫৫ জনের মৃত্যু হয়। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ছত্রপতি সম্ভাজিনগরের জিনতুরের সাবেক পৌরসভার অধ্যক্ষ বসন্ত শিন্ডে আজও সেদিনের কথা মনে করে কাঁপেন।

বসন্ত শিন্ডে জানান, তিনি শেষ মুহূর্তে টিকিট কিনেছিলেন এবং কংগ্রেস বিধায়ক রামপ্রসাদ বর্দিকারের সাথে ভ্রমণ করছিলেন। তার আসন ছিল ককপিটের কাছে। বিমান যখন উড্ডয়নের জন্য ছুটে চলছিল, তার গতি স্বাভাবিক মনে হয়নি।

ট্রাক ও বিদ্যুৎলাইনের সাথে ধাক্কা

শিন্ডের মতে, উড্ডয়নের চেষ্টায় বিমানের পিছনের অংশ একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা খায় এবং পরে ১১ কেভির বিদ্যুৎ লাইনের সাথে সংঘর্ষ হয়। সৌভাগ্যবশত সেই সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল, যার ফলে বড় বিস্ফোরণ এড়ানো যায়। দুর্ঘটনার পর বিমান খোলা মাঠে গিয়ে তিন খণ্ডে ভেঙে পড়ে।

"বিমানের ভেতরে ঘন অন্ধকার ছিল। যখন একটি দরজা খোলে, তা আমার জন্য আশার আলোর মতো মনে হয়েছিল," বসন্ত শিন্ডে বলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ ভাবনাচিন্তা না করে লাফ দিয়ে পড়েন এবং সামান্য আঘাত নিয়ে বেঁচে যান।

২০২০ সালের কোঝিকোড দুর্ঘটনা: প্রবল বৃষ্টিতে রানওয়ে থেকে সরে গিয়েছিল বিমান

৭ আগস্ট ২০২০-তে দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট কোঝিকোড বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে সরে গিয়ে ৩৫ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। বিমানে মোট ১৯০ জন ছিলেন, যাদের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়।

কেরালার বাসিন্দা আশিক এই দুর্ঘটনায় बाल-বাল বেঁচে যান। তিনি জানান, অবতরণের সময় বিমান কিছুক্ষণ বাতাসে মন্ডরানোর পর আবার অবতরণের চেষ্টা করে। ঠিক তখনই হঠাৎ করে প্রচণ্ড ধাক্কা লাগে এবং বিমান ভেঙে যায়। "শিশুরা মায়ের কোল থেকে পড়ে যাচ্ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবেশ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। সৌভাগ্যবশত বিমানে আগুন লাগেনি, নইলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত," আশিক বলেন।

মঙ্গালুরু দুর্ঘটনা: রানওয়ে অতিক্রম করে গিয়েছিল বিমান

২২ মে ২০১০ সালে মঙ্গালুরু বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট IX ৮১২ একটি বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই দুর্ঘটনায় ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়। ১৫ বছর পরও এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া কে. প্রদীপ আজও সেই দৃশ্য মনে করে কাঁপেন।

প্রদীপ জানান, বিমান রানওয়ে অতিক্রম করে দুর্ঘটনার শিকার হয়। আরেক যাত্রী উসমান ফারুক জানান, তিনি বিমানের ডানার কাছে বসে ছিলেন এবং সেই অংশ ভেঙে যাওয়ায় তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন।

Leave a comment