বিকানেরে অসৎ খাদ্য ব্যবসায়ীদের ৭.৭৫ লক্ষ টাকা জরিমানা

🎧 Listen in Audio
0:00

রাজস্থানের বিকানের জেলায় খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুধ, দই, ঘি, মাওয়া, নারকেল তেল এবং মুঙ পাপড়ি যেসব দৈনন্দিন খাদ্যপণ্যে মিশ্রণ পাওয়া গেছে, সেগুলোর সাথে সম্পর্কিত ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের উপর মোট ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযানের ফলে জেলায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের সাথে ছলনা করার ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ঘটনাটি কীভাবে সামনে এলো

খাদ্য সুরক্ষা কর্মকর্তারা গত মাসে জেলার লালগড়, কোটগেট, গঙ্গাশহর, নোখা এবং শ্রীডুঙ্গরগড় এলাকায় হঠাৎ করে তল্লাশি অভিযান চালায়। এই সময় নমুনা সংগ্রহের জন্য কিছু খাদ্যপণ্য সংগ্রহ করা হয়, যা পরীক্ষার জন্য জয়পুরের রাজ্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে দুধ, মাওয়া এবং ঘিতে মিশ্রণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও নারকেল তেল এবং মুঙ পাপড়িকে সাব-স্ট্যান্ডার্ড (মানকের চেয়ে নিম্নমানের) ঘোষণা করা হয়েছে। এই ভিত্তিতে বিভাগটি ১৩ জন ব্যবসায়ীকে নোটিশ জারি করে উত্তর দাবি করেছে।

জরিমানার ব্যবস্থা

নিয়মিত পদ্ধতি অনুসারে, নোটিশের উত্তর এবং ল্যাবরেটরি রিপোর্টের ভিত্তিতে খাদ্য সুরক্ষা আয়ুক্তালয় মোট ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা নির্ধারণ করেছে। সবচেয়ে বেশি জরিমানা শ্রীডুঙ্গরগড়ের একজন ডেয়ারি ব্যবসায়ীর উপর ১.৫ লক্ষ টাকা, যেখানে ঘিতে ভেষজ তেলের মিশ্রণ পাওয়া গেছে। এর অতিরিক্ত:

  • কোটগেট এলাকার একজন মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারকের উপর ১ লক্ষ টাকা
  • লালগড়ের একজন নারকেল তেল বিক্রেতার উপর ৭৫ হাজার টাকা
  • নোখার একজন মাওয়া বিক্রেতার উপর ১.২৫ লক্ষ টাকা
  • মুঙ পাপড়ি প্রস্তুতকারকের উপর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

কী কী পাওয়া গেল নকল?

  • দুধ ও দই: পানি এবং ডিটারজেন্টের মিশ্রণ
  • ঘি এবং মাওয়া: ভেষজ তেল এবং কৃত্রিম রঙের ব্যবহার
  • নারকেল তেল: পরিশোধিত পাম তেলের মিশ্রণ
  • মুঙ পাপড়ি: অর্ধপাকা ডাল এবং কৃত্রিম রঙ, যা হজমের জন্য ক্ষতিকারক।

কর্মকর্তাদের কী বক্তব্য?

বিকানেরের খাদ্য সুরক্ষা কর্মকর্তা বিনোদ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন: আমরা বিভিন্ন দোকান ও কারখানা থেকে প্রায় ৩০ টি নমুনা নিয়েছি। ল্যাবরেটরি থেকে ১৮ টি রিপোর্ট এসেছে, যার মধ্যে ৯ টি নমুনা ব্যর্থ হয়েছে। এটি গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই ব্যবস্থা কেবল জরিমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। পুনরায় দোষী সাব্যস্ত হলে সংশ্লিষ্ট দোকানগুলির লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হবে।

গ্রাহকদের জন্য সতর্কতা জারি

স্বাস্থ্য বিভাগ গ্রাহকদের কাছে আবেদন জানিয়েছে যে, তারা খাদ্য সামগ্রী কেনার সময় অবশ্যই দোকানদারের কাছ থেকে বিল নেবে এবং গুণমান নিয়ে সন্দেহ হলে টোল-ফ্রি হেল্পলাইনে অভিযোগ করবে। বিভাগটি আরও জানিয়েছে যে, আগামী সপ্তাহগুলিতে উৎসবের কথা মাথায় রেখে বিশেষ নজরদারি অভিযান আরও তীব্র করা হবে। নিম্নমানের খাদ্যপণ্য পাওয়ার খবরে সাধারণ জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সামাজিক কর্মী ডাঃ প্রমোদ যোশী বলেছেন, কেবল জরিমানাই যথেষ্ট নয়, এই ধরণের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা উচিত। এই লোকেরা শিশু ও বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যের সাথে ছলনা করছে।

Leave a comment