আজমির শরিফ দরগাহ মামলা: কেন্দ্র সরকারের আফিডেভিটে হিন্দু পক্ষের ব্যাপক ধাক্কা

🎧 Listen in Audio
0:00

আজ (১৯ এপ্রিল) রাজস্থানের আজমিরে অবস্থিত খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহকে কেন্দ্র করে চলমান বিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিন্দু পক্ষের ব্যাপক ধাক্কা লেগেছে।

আজমির শরিফ দরগাহ মামলা: রাজস্থানের আজমিরে অবস্থিত খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহকে কেন্দ্র করে চলমান বিরোধে নতুন মোড় নিয়েছে। হিন্দু সেনার সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত দায়ের করা মামলায় কেন্দ্রীয় সরকার আজ তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে, যেখানে দরগাহকে শিব মন্দির বলে দাবি করা হয়েছে। এতে হিন্দু পক্ষের ব্যাপক ধাক্কা লেগেছে। কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দু সেনার দাবি অযৌক্তিক বলে মনে করে এবং তা খারিজ করার সুপারিশ করেছে।

কেন্দ্রীয় সরকার আফিডেভিট দাখিল করেছে

হিন্দু সেনার সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত দায়ের করা মামলায়, যেখানে আজমির শরিফ দরগাহকে শিব মন্দির হিসেবে স্বীকৃতি চাওয়া হয়েছে, শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকার একটি আফিডেভিট দাখিল করেছে। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মামলার টিকে থাকার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং বলেছে যে এর কোনো দৃঢ় ভিত্তি নেই। মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে যে হিন্দু সেনার মামলা টেকসই নয় এবং তা খারিজ করা উচিত।

সরকার যুক্তি দেখিয়েছে যে মামলাটি আইনি বিবেচনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি অভাবী। তদুপরি, ভারতীয় ইউনিয়নকে মামলার পক্ষ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এবং ইংরেজিতে দায়ের করা মামলার হিন্দি অনুবাদ অপর্যাপ্ত ছিল। এই কারিগরি ত্রুটিগুলির কারণে সরকার মামলা খারিজ করার সুপারিশ করেছে।

হিন্দু পক্ষের ধাক্কা, মুসলিম পক্ষের উৎসব

কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ হিন্দু পক্ষকে ব্যাপক ধাক্কা দিয়েছে। হিন্দু সেনার সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত এতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন এবং আইনি পরামর্শ নিয়ে উপযুক্ত জবাব দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন। গুপ্ত আরও জানিয়েছেন যে যদি কোনও কারিগরি ত্রুটি থাকে, তা সংশোধন করা হবে এবং মামলাটি সঠিকভাবে আদালতে পুনরায় দাখিল করা হবে।

এদিকে, মুসলিম পক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। খাদিম সংগঠনের আইনজীবী আশিস কুমার সিংহ জানিয়েছেন যে মুসলিম পক্ষ সর্বদা মামলার টিকে থাকার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং শুরু থেকেই তা খারিজ করার আবেদন করেছে। তিনি আরও দাবি করেছেন যে মামলাটি কেবলমাত্র সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য দায়ের করা হয়েছে এবং এর কোন আইনি ভিত্তি নেই। মুসলিম পক্ষ বিশ্বাস করে যে এই মামলা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যাহত করার একটি প্রয়াস ছিল, যা সম্পূর্ণ ভুল।

মামলার কারিগরি ত্রুটি, পরবর্তী শুনানি ৩১ মে

কেন্দ্রীয় সরকারের আফিডেভিটের পর আজমির জেলা আদালত আজকের শুনানি স্থগিত করেছে। এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ৩১ মে নির্ধারিত হয়েছে। হিন্দু সেনার এখন এই সুপারিশে সাড়া দেওয়ার সুযোগ থাকবে। আদালত এখন হিন্দু সেনার কর্মকাণ্ড এবং সরকারের উল্লেখিত কারিগরি ত্রুটিগুলি তারা সফলভাবে সংশোধন করতে পারে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করবে।

আজমির শরিফ দরগাহকে কেন্দ্র করে এই বিরোধ ধর্মীয় এবং আইনি উভয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চলমান বিতর্কে ভারতীয় সমাজে সম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উভয় পক্ষের মধ্যে অভিযোগ ও প্রতি-অভিযোগ চলছে, যা বিরোধ আরও বাড়িয়ে তুলছে।

মামলা খারিজের কারণ

কেন্দ্রীয় সরকার দাখিল করা আফিডেভিটে আরও বলা হয়েছে যে হিন্দু সেনার মামলার শুনানির জন্য কোনও দৃঢ় ভিত্তি নেই। তদুপরি, সরকার উল্লেখ করেছে যে এই মামলায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। ইংরেজিতে দায়ের করা মামলার হিন্দি অনুবাদও ভুল ছিল, যার ফলে খারিজ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সরকার জোর দিয়ে বলেছে যে সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য দায়ের করা এবং দৃঢ় ভিত্তিবিহীন মামলা খারিজ করা উচিত। এটি কেবল আইনি কার্যক্রমকেই প্রভাবিত করে না, বরং সমাজে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যাহত করার চেষ্টা করে।

Leave a comment