আইটিআর-৪: ছোট ব্যবসায়ী ও পেশাদারদের জন্য সহজ ট্যাক্স ফাইলিং

🎧 Listen in Audio
0:00

আইটিআর-৪ ফর্ম ছোট ব্যবসায়ী, পেশাদার ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি সহজ ট্যাক্স ফাইলিং বিকল্প। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে নতুন পরিবর্তন, LTCG এবং ট্যাক্স রেজিম সুইচের সুবিধা

আইটিআর-৪ ফাইলিং: যদি আপনি ছোট ব্যবসার মালিক হন, ফ্রিল্যান্সার হন অথবা পেশাদার সেবা প্রদান করেন, তাহলে আইটিআর-৪ ফর্ম আপনার জন্য একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে। এটিকে "সুগম ফর্ম"ও বলা হয়, যা ছোট ও মাঝারি ট্যাক্সপেয়ারদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই ফর্ম তাদের আয়কর ফাইলিং সহজ ও দ্রুত সম্পন্ন করতে সাহায্য করে, যাদের আয় খুব জটিল নয়।

আইটিআর-৪ (সুগম) কি?

আইটিআর-৪ একটি ট্যাক্স ফর্ম যা তাদের জন্য, যাদের আয় ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে এবং যারা প্রিজাম্প্টিভ ট্যাক্সেশন স্কিমের অধীনে তাদের আয় দেখায়। এই স্কিমের অধীনে আপনাকে আপনার ব্যবসার সম্পূর্ণ হিসাব রাখার প্রয়োজন হয় না। সরকার কিছু নিয়মের ভিত্তিতে আপনার আয়ের অনুমান করে এবং তার উপর ট্যাক্স ধার্য করে। এই ফর্ম ছোট দোকানদার, পরিবহন ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, আইনজীবী, স্থপতি ইত্যাদি পেশাদারদের জন্য খুবই সহায়ক।

কে আইটিআর-৪ পূরণ করতে পারেন?

আইটিআর-৪ সকলের জন্য নয়। এটি পূরণ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা আইটিআর-৪ পূরণ করতে পারেন:

  • ছোট ব্যবসায়ী: যেমন কিরানা দোকান, রেস্টুরেন্ট বা ট্রেডিং এর কাজ।
  • পেশাদার: যেমন চিকিৎসক, আইনজীবী, স্থপতি, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
  • পরিবহন ব্যবসায়ী: যেমন ট্রাক বা ট্যাক্সি চালক।
  • বেতন, ভাড়া, সুদ বা পারিবারিক পেনশন প্রাপ্ত ব্যক্তি: যাদের মোট আয় ৫০ লক্ষ টাকার কম।

যদি আপনার আয় এর চেয়ে বেশি হয়, তাহলে আপনাকে আইটিআর-৪ পূরণ করতে হবে না।

২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আইটিআর-৪-এ কী নতুন?

CBDT আইটিআর-৪-এর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করেছে, যা ছোট ট্যাক্সপেয়ারদের জন্য উপকারী হতে পারে।

১. দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভ (LTCG): এখন যদি আপনার ১.২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভ থাকে, তাহলে আপনি এটি আইটিআর-৪-এই দেখাতে পারেন। আগে এই লাভ দেখানোর জন্য আইটিআর-২ পূরণ করতে হতো, যা বেশ জটিল ছিল।

২. নতুন ট্যাক্স রেজিম থেকে পুরাতন ট্যাক্স রেজিমে সুইচ: যদি আপনি নতুন ট্যাক্স রেজিম নির্বাচন করে থাকেন এবং এখন পুরাতন ট্যাক্স রেজিমে সুইচ করতে চান, তাহলে আপনাকে আইটিআর-৪-এ ফর্ম ১০-IEA-এর বিবরণ দিতে হবে।

৩. নতুন ছাড়: এখন আইটিআর-৪-এ কিছু নতুন ছাড় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেমন ধারা ৮০CCH। এটি তাদের জন্য উপকারী যারা নতুন ট্যাক্স রেজিমের অধীনে কিছু নির্দিষ্ট ছাড়ের সুবিধা নিতে চান।

আইটিআর-৪-এর সুবিধা

সহজ ও দ্রুত ফাইলিং: আইটিআর-৪ ফর্ম ট্যাক্স ফাইলিংকে অত্যন্ত সহজ ও দ্রুত করতে সাহায্য করে। আপনাকে ব্যবসার জটিল রেকর্ড রাখার প্রয়োজন হয় না।

দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভের সুবিধা: যারা আগে শেয়ার বাজার বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতেন, তাদের জটিল ফর্ম পূরণ করতে হতো। এখন তারা আইটিআর-৪-এই তাদের মূলধন লাভ রিপোর্ট করতে পারেন।

নতুন ট্যাক্স রেজিমের নমনীয়তা: এখন ট্যাক্সপেয়ারদের নতুন ও পুরাতন ট্যাক্স রেজিমের মধ্যে সুইচ করার সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা তাদের অধিক নমনীয়তা প্রদান করে।

আইটিআর-৪ পূরণ করার সময় মনে রাখার বিষয়গুলি

আয় যাচাই করুন: আপনার মোট আয় ৫০ লক্ষ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।

স্বল্পমেয়াদী মূলধন লাভ: যদি আপনার স্বল্পমেয়াদী মূলধন লাভ থাকে, তাহলে আপনাকে আইটিআর-৪ পূরণ করতে হবে না।

ফর্ম ১০-IEA: যদি আপনি নতুন ট্যাক্স রেজিম থেকে বের হওয়ার কথা ভাবছেন, তাহলে ফর্ম ১০-IEA পূরণ করা ভুলবেন না।

আইটিআর-৪ ফর্ম কোথা থেকে পাওয়া যাবে?

আপনি আইটিআর-৪ ফর্ম আয়কর বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি অনলাইন ফাইলিংয়ের জন্য আয়করের ই-ফাইলিং ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। যদি ফর্ম পূরণে কোনো অসুবিধা হয়, তাহলে আপনি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সাহায্য নিতে পারেন।

 

Leave a comment