হালে ‘সনম তেরি কসম ২’ ছবিতে পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাওরা হোকেনের সাথে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন হর্ষবর্ধন রাণে, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মাওরা হোকেন ও হর্ষবর্ধন রাণে: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে চলচ্চিত্র জগতেও বিতর্কের ঝড় বইছে। বলিউড অভিনেতা হর্ষবর্ধন রাণে ‘সনম তেরি কসম ২’ ছবিতে পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাওরা হোকেনের সাথে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের পর মাওরা হোকেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হর্ষবর্ধনকে ‘পিআর স্ট্র্যাটেজি’র অংশ বলে অভিহিত করেছেন। মাওরার মতে, এই সংবেদনশীল সময়ে অভিনেতা নিজের প্রচারের জন্য এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রভাব
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক ও সুরক্ষা সংক্রান্ত উত্তেজনা বৃদ্ধির সময়ে হর্ষবর্ধনের এই সিদ্ধান্ত এসেছে। হর্ষবর্ধন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তিনি এখন কোনো পাকিস্তানি শিল্পীর সাথে কাজ করবেন না। এই সিদ্ধান্তের পর মাওরা হোকেন সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ক্ষোভ প্রকাশ করে হর্ষবর্ধনের এই সিদ্ধান্তকে ‘পিআর স্ট্র্যাটেজি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
মাওরা তার ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে একটি পোস্ট করে লিখেছেন, "আমি জানি না এটাকে দুর্ভাগ্যজনক, দুঃখজনক না হাস্যকর বলা উচিত। যার কাছ থেকে আমি সাধারণ বুদ্ধিমত্তার আশা করতাম, সে গভীর ঘুম থেকে উঠে এসে একটি পিআর স্ট্র্যাটেজি নিয়ে হাজির হয়েছে।"
মাওরার ক্ষোভপূর্ণ বক্তব্য
মাওরা হোকেন আরও লিখেছেন, "তোমার দেশে হওয়া আক্রমণ ও সংঘর্ষ সত্ত্বেও আমি সবসময় যাদের সাথে কাজ করেছি তাদের সাথে সম্মান ও ভালোবাসা দেখিয়েছি। আমি কখনো ঘৃণা ছড়াবো না, যখন তুমি শুধুমাত্র শিরোনাম বানাতে এমন ঘোষণা করছো।" তিনি আরও বলেছেন, "এই সংবেদনশীল সময়ে এমন ঘোষণা করা, এমন পরিস্থিতিতে তোমাকে দেখে লজ্জা ও অবাক লাগছে। আমাদের দেশে শিশুরা কাপুরুষোচিত আক্রমণের শিকার হয়েছে, নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং এখন তুমি এই যুদ্ধকে তোমার সুবিধার জন্য ব্যবহার করছো।"
‘সনম তেরি কসম’ ছবিতে কাজ করার উল্লেখ
মাওরা তার পোস্টে লিখেছেন, "আমি কখনো কারো সাথে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানাইনি এবং সবসময় মানুষের সাথে ভালোবাসা ও সম্মানের সাথে ব্যবহার করেছি। এখন যখন আমার নাম শিরোনামে আসছে, তখন দেখছি কিছু মানুষ এটাকে তাদের প্রচারের অংশ হিসেবে ব্যবহার করছে।" পাকিস্তানি অভিনেত্রী এটাও বলেছেন যে, এই সময়ে ঘৃণা ছড়ানো এবং ছবি নিয়ে কথা বলা বোকামি। মাওরা মনে করেন এখন ছবি নিয়ে আলোচনার সময় নয়, শান্তি ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেওয়ার সময়।
মিডিয়া ও পিআর-এর মধ্যে বিতর্ক
মাওরার এই বক্তব্য শুধুমাত্র একজন অভিনেতার বিরুদ্ধে নয়, মিডিয়া ও পিআর স্ট্র্যাটেজি হিসেবে দেখা ফ্যাশন এবং রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধেও। তিনি তার পোস্টে বলেছেন, "যদি কেউ তার মর্যাদা ও সম্মানের বিনিময়ে ৯ বছর পর আমার নাম ব্যবহার করে শিরোনাম বানিয়ে থাকে, তাহলে আমার মনে হয় সে ভুল দলের সাথে আছে।"
মাওরা হোকেন তার পোস্টের শেষে লিখেছেন, "এত মানুষ মারা গেছে, এবং তুমি তোমার প্রচারের জন্য এই সংবেদনশীল পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছো। এখন এমনটা করা উচিত নয়। আমি পাকিস্তান এবং উভয় দেশের নাগরিকদের জন্য দোয়া করছি। আমাদের ছবি ও হৈচৈ বাদ দিয়ে একে অপরের জন্য শান্তির কামনা করা উচিত।"
