দিব্যা ভারতী: অল্প বয়সে অর্জিত খ্যাতি ও অকাল মৃত্যুর গল্প

🎧 Listen in Audio
0:00

সেই মনোমুগ্ধকর অভিনেত্রী, যিনি কম বয়সেই বলিউডে পরিচিতি পেয়েছিলেন, তিন বছরে সুপারস্টার হয়ে উঠেছিলেন এবং ১৯ বছর বয়সে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছিলেন।

মনোরঞ্জন ডেস্ক: হিন্দি চলচ্চিত্রের জগতে কিছু মুখ আছে যারা অল্প সময়ের মধ্যেই গভীর ছাপ রেখে যান। এমনই একজন হলেন দিব্যা ভারতী। ৯০-এর দশকে তার নির্দোষতা, সৌন্দর্য এবং অসাধারণ অভিনয় দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় জয় করে নেওয়া দিব্যা ভারতী মাত্র তিন বছরে ২১টি ছবির মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন। কিন্তু কে জানতো মাত্র ১৯ বছর বয়সে এই উজ্জ্বল তারা আমাদের সকলকে বিদায় জানিয়ে চলে যাবেন।

শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ, ১৪ বছর বয়সে ছেড়ে দিয়েছিলেন পড়াশোনা

২৫ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৪ সালে জন্মগ্রহণকারী দিব্যা ভারতী খুব কম বয়সেই অভিনয়ের জগতে পা রেখেছিলেন। ১৪ বছর বয়সে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে মডেলিং শুরু করেন। গোবিন্দার ভাই কীর্তি কুমার তাকে 'রাধা কা সংগম' ছবির জন্য বেছে নিয়েছিলেন, কিন্তু পরে সেই চরিত্রটি জুহি চাওলা পান। এর পর দিব্যা আর পিছনে ফিরে তাকাননি এবং দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পের দিকে ধাবিত হন।

দক্ষিণ থেকে বলিউড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল দিব্যার জনপ্রিয়তা

তেলুগু ছবি 'বোব্বিলি রাজা' দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন দিব্যা। ছবিটি সুপারহিট হয় এবং দিব্যা দক্ষিণ ভারতে একজন বড় নামে পরিণত হন। তারপর আসে ১৯৯২ সালের ছবি 'বিশ্বাত্মা', যেখানে তিনি সানি দেওলের সাথে অভিনয় করেছিলেন। ছবির গান 'সাত সমুদ্র পার' আজও মানুষের মুখে মুখে। একই বছর শাহরুখ খানের সাথে তার ছবি 'দিওয়ানা' মুক্তি পায়, যা রাতারাতি তাদের দুজনকেই তারকা বানিয়ে দেয়। সে সময় দিব্যার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।

তিন বছরে ২১টি ছবি, নায়কদের চেয়েও বেশি চাহিদা ছিল

দিব্যা ভারতীর অভিনয় এবং নির্দোষতার এমন একটা জাদু ছিল যে তিনি প্রতিটি প্রযোজকের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছিলেন। তিনি 'শোলা ও শবনম', 'দিল কা কিয়া কসুর', 'বলওয়ান', 'ধর্মক্ষেত্রম', 'দিল আশনা হ্যায়', 'গীত', 'কন্যা দান' ইত্যাদি ছবিতে অভিনয় করে প্রতিটি চরিত্রে প্রাণ দিয়েছিলেন। তার জনপ্রিয়তা এতটাই ছিল যে অনেক সময় তাকে নায়কদের চেয়েও বেশি চাহিদা সম্পন্ন অভিনেত্রী হিসেবে উল্লেখ করা হত।

ব্যক্তিগত জীবনেও ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু

দিব্যার ব্যক্তিগত জীবনও কম আলোচিত ছিল না। ১৯৯২ সালে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা সাজিদ নাদিয়াদওয়ালাকে বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত সুদৃঢ় এবং ভালোবাসা-পূর্ণ, কিন্তু ভাগ্যের অন্য কিছুই লেখা ছিল।

৫ এপ্রিল ১৯৯৩: যখন শেষ হয়েছিল এক উজ্জ্বল তারার যাত্রা

৫ এপ্রিল ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের নিজের বাড়ির বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে দিব্যা ভারতীর মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু আজও রহস্যময়। মাত্র ১৯ বছর বয়সে পৃথিবীকে বিদায় জানানো দিব্যা তার পিছনে এমন কিছু স্মৃতি রেখে গেছেন, যা আজও তার ভক্তরা চোখে জল এবং মুখে হাসি নিয়ে স্মরণ করে। দিব্যা ভারতী যদিও আজ আমাদের মাঝে নেই, তবুও হিন্দি চলচ্চিত্রে তার অবদান এবং তার উপস্থিতি কখনো ভোলা যাবে না।

Leave a comment