৯০-এর দশকের প্রতিটি শিশু যারা বলিউড সিনেমা দেখতে দেখতে বড় হয়েছে, তাদের কাছে কাদের খান নামটা অপরিচিত থাকা সম্ভব নয়। কারণ, সেই সময়টাতেই কাদের খান ছিলেন হাসির সমার্থক। সিনেমায় তাঁর উপস্থিতি মানেই ছিল ৫ থেকে ১০টা কমেডি দৃশ্য থাকা নিশ্চিত। কাদের খান এক জন বিখ্যাত অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি কমেডিয়ান, স্ক্রিপ্ট ও ডায়লগ রাইটারও ছিলেন।
১. ১৯৭৩ সালে তাঁর চলচ্চিত্র কর্মজীবন শুরু করার পর থেকে কাদের খান ৩০০টিরও বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন। অভিনেতা ও লেখক হিসেবে যা তাঁকে পরিচিতি দিয়েছে।
২. কাদের খান মুম্বাই ইউনিভার্সিটির ইসমাইল ইউসুফ কলেজের ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েট ছিলেন।
৩. তিনি তাঁর প্রথম সিনেমা 'দাগ'-এ একজন সরকারি উকিলের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
৪. তাঁর বাবা আব্দুল রহমান খান কান্দাহারের ছিলেন এবং মা ইকবাল বেগম পিশিনের (ব্রিটিশ আমলে ভারতের অংশ) ছিলেন।
৫. সিনেমায় কেরিয়ার গড়ার আগে কাদের খান এমএইচ সাবু সিদ্দিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক ছিলেন।
৬. কলেজে তাঁর করা একটি নাটক দেখে দিলীপ কুমার এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি কাদের খানকে তাঁর দুটি সিনেমা ‘সাগিনা’ এবং ‘বৈরাগ’-এর জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন।
৭. কাদের খান ২৫০টির বেশি সিনেমার সংলাপ লিখেছিলেন।
৮. কাদের খান টেলিভিশনে ‘হাঁসনা মাত’ নামে একটি কমেডি শো করতেন, যা তিনি নিজেই তৈরি করেছিলেন।
৯. কাদের খানের তিন ছেলে। তাঁদের মধ্যে এক ছেলে কানাডায় থাকেন।
১০. কাদের খান ৯ বার সেরা কমেডিয়ান হিসেবে ফিল্মফেয়ারে মনোনীত হয়েছিলেন।
১১. সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় কাদের খান খুব হতাশ হয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, এতে তাঁর পরিবার খুব দুঃখ পেয়েছে।
১২. কাদের খানের ছোটবেলায় পায়ে পরার মতো চপ্পল পর্যন্ত ছিল না। তাঁর মা তাঁর নোংরা পা দেখেই বুঝতে পারতেন যে, তিনি মসজিদে যাননি।
১৩. কাদের খানের শৈশব দারিদ্র্যের মধ্যে কেটেছিল। বস্তির ঝুপড়িতে থাকা তাঁর মা কোনোমতে তাঁকে মানুষ করেছিলেন।
১৪. কাদের খান কখনও সিনেমার অংশ হতে চাননি, কারণ তাঁর সময়ে সিনেমাকে নিচু স্তরের জিনিস মনে করা হত।
১৫. কাদের খান খুব তাড়াতাড়ি একজন লেখক হিসেবে সফল হয়েছিলেন, কারণ তিনি কথ্য ভাষায় সংলাপ লিখতেন।
১৬. এক সময় এমনও ছিল যখন কাদের খান হিরোর থেকেও বেশি জনপ্রিয় ছিলেন এবং দর্শকরা পোস্টারে তাঁর মুখ দেখেই টিকিট কিনতেন।
১৭. কাদের খানের বিশ্বাস ছিল যে, ভালো লেখক হতে গেলে জীবনে অনেক দুঃখ সহ্য করতে হয়।
১৮. কাদের খানের আরও তিন বড় ভাই ছিলেন, যাঁদের জন্ম কাবুলে হয়েছিল।
১৯. কাদের খান তাঁর প্রথম নাটকের অভিনয় দেখে এক বৃদ্ধ ১০০ টাকার নোট দিয়েছিলেন।
২০. কাদের খান ১৯৯১ সালে সেরা কমেডিয়ান এবং ২০০৪ সালে সেরা পার্শ্ব অভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
২১. তিনি ১৯৮২ এবং ১৯৯৩ সালে সেরা সংলাপের জন্য ফিল্মফেয়ার জিতেছিলেন।
২২. কাদের খানকে ২০১৩ সালে চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানের জন্য সাহিত্য শিরোমণি পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল।
২৩. 'রোটি' সিনেমার জন্য মনমোহন দেসাই কাদের খানকে সংলাপ লেখার জন্য ১২০০০০ টাকার মতো বড় অঙ্কের অর্থ দিয়েছিলেন।
২৪. অমিতাভের অনেক সফল সিনেমা ছাড়াও কাদের খান 'হিম্মতওয়ালা', 'কুলি নম্বর ওয়ান', 'ম্যায় খিলাড়ি তু আনাড়ি', 'খুন ভরি মাং', 'কর্মা', 'সরফারোশ' এবং 'ধর্মবীর'-এর মতো সুপারহিট সিনেমার সংলাপ লিখেছিলেন।
২৫. অসুস্থ হওয়ার পর কাদের খান এই কারণে খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে, লোকেরা তাঁর থেকে দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছিল এবং তাঁকে কাজ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।
```