মেঘনাথের স্ত্রী সুলোচনার জন্ম, কিভাবে হয়েছিল, জেনে নিন সেই মজার গল্প মেঘনaths wife Sulochana was born, know how it happened, interesting story
সত্যবতীকে সতী সুলোচনা নামেও জানা যায়! সতী সুলোচনা ছিলেন বাসুকী নাগের কন্যা, যিনি ভগবান শিবের গলায় জড়িয়ে থাকতেন! এবং লঙ্কার রাজা রাবণের পুত্র মেঘনাথের স্ত্রী। তো চলুন এই আর্টিকেলে সুলোচনা সম্পর্কিত কিছু মজার গল্প জেনে নেওয়া যাক।
সুলোচনার জন্ম
পৌরাণিক যুগে অনেক মহান ব্যক্তিত্বের জন্ম হয়েছে। যাঁরা তাঁদের ব্যক্তিত্বের জোরে সারা বিশ্বে এক আলাদা ছাপ রেখেছেন। আজও মানুষ তাঁদের দেখানো পথ অনুসরণ করে এবং তাঁদের শিক্ষা গ্রহণ করে। পৌরাণিক যুগে এমন অনেক ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যাদের জন্ম খুব আশ্চর্যজনকভাবে হয়েছিল। কারো জন্ম গাছ থেকে, কারো যজ্ঞ থেকে, আবার কারো জন্ম হয়েছে চোখের জল থেকে। তেমনই একজন পৌরাণিক নারী হলেন সতী সুলোচনা। সতী সুলোচনার জন্মও একটি বিস্ময়কর রহস্যে মোড়া গল্প। সতী সুলোচনার জন্ম একটি এমন আশ্চর্যজনক ঘটনা, যা জানার পর যে কেউই অবাক হয়ে যাবেন। সেই সময় সতী সুলোচনার জন্ম হয়েছিল, যখন মা পার্বতী ভগবান শিবের হাতে বাসুকী নাগকে বাঁধছিলেন। এটি ছিল তাঁর দৈনন্দিন কাজ, কিন্তু একদিন ভুল করে মা পার্বতী বাসুকী নাগকে ভগবান শিবের হাতে একটু বেশি শক্ত করে বেঁধে ফেলেন। যার ফলে বাসুকী নাগের চোখ থেকে দুই ফোঁটা জল পড়ে। সেই এক ফোঁটা জল থেকে সতী সুলোচনা এবং অন্য ফোঁটা থেকে রাজা জনকের স্ত্রী রানী সুনয়নার জন্ম হয়।
সুলোচনা কে ছিলেন?
সুলোচনা ছিলেন রামায়ণ কালের এক নারী, যিনি তাঁর পবিত্রতা ও সদাচারের জন্য পরিচিত ছিলেন এবং তাঁর গুণের প্রশংসা করে শেষ করা যেত না। সুলোচনার বিবাহ অবশ্যই রাক্ষস কুলে হয়েছিল। কিন্তু তাঁর মধ্যে সমস্ত গুণ ছিল দেবীর মতো। সুলোচনা ছিলেন লঙ্কার রাজা রাবণের পুত্রবধূ এবং ইন্দ্রজিৎ মেঘনাথের স্ত্রী। সুলোচনা রামায়ণ যুগে তাঁর পবিত্রতা ও সত্যের পথে চলার জন্য পরিচিত ছিলেন। সুলোচনা ছিলেন একজন পবিত্র স্ত্রী এবং তিনি সবসময় তাঁর স্বামীর পাশে ছিলেন। তিনি তাঁর পবিত্র কর্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং স্বামীর দেহের সাথে সহমরণে গিয়েছিলেন। সুলোচনা ন্যায়, সম্মান ও তাঁর পবিত্র কর্তব্যের প্রতি আত্মোৎসর্গের অনুভূতিতে ভরপুর ছিলেন।
মেঘনাথ ও সুলোচনার বিবাহ
সতী সুলোচনার জন্ম বাসুকী নাগের অশ্রু থেকে হয়েছিল। তাই, নাগদের মধ্যে লালিত-পালিত হওয়ার কারণে সুলোচনা ভগবান শিবের একজন বড় ভক্ত ছিলেন। তিনি দিনের পর দিন কিছু না খেয়ে ভগবান শিবের পূজা করতেন। একবার সুলোচনা ভগবান শিবের পূজা করার জন্য মন্দিরে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি এক উজ্জ্বল, সুন্দর ও দীপ্তিময় চেহারার এক পুরুষকে দেখতে পান। যদিও সুলোচনা জানতেন না যে, তিনি কে? কোথা থেকে এসেছেন? তবে সেই পুরুষকে দেখে সুলোচনা তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন এবং তাঁকে নিজের স্বামী হিসাবে মনে করেন। সুলোচনা মেঘনাথের কাছে গিয়ে বিবাহের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সুলোচনাও কম সুন্দরী ছিলেন না। তিনি অপ্সরাদের মতো সুন্দরী ছিলেন। তাঁর সৌন্দর্য দেখে মেঘনাথও বিবাহ করতে রাজি হন এবং মেঘনাথ ও সুলোচনা বিবাহের ইচ্ছা নিয়ে বাসুকী নাগের কাছে যান।
তাদের দুজনের বিবাহের ইচ্ছা শুনে বাসুকী নাগ খুব অবাক হন। তিনি তাঁর কন্যা সুলোচনাকে খুব ভালোবাসতেন। মেঘনাথ ও সুলোচনার বিবাহ হওয়া অসম্ভব ছিল। কিন্তু সেই সময় মেঘনাথের বিজয়ের ডঙ্কা চারদিকে ও তিন জগতে বাজছিল। মেঘনাথের কাছে অনেক শক্তি ও বরদান ছিল। এতটাই যে, তিন জগতে তাঁর মতো কেউ ছিল না। তাঁর সাথে কে লড়তে পারত, তাই মুগ্ধ হয়ে বাসুকী নাগ সুলোচনা ও মেঘনাথের বিবাহ দিয়ে দেন।