ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার আশঙ্কার মধ্যে সোনা-রূপোর দামে তীব্র ধস। বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা – সোনার দাম ৩৮% পর্যন্ত কমতে পারে।
সোনার দামের প্রবণতা: শুক্রবার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সোনা ও রূপার দামে তীব্র হ্রাস পায়। যেখানে বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় সোনাকে নিরাপদ বিকল্প হিসেবে দেখেন, সেখানে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য মন্দা এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত 'পরস্পরিক ট্যারিফ' (Reciprocal Tariffs) নীতি বিশ্বব্যাপী ইকুইটি বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়, যার প্রভাব সোনা-রূপোর উপরও পড়ে।
এমসিএক্স-এ সোনা-রূপো দুটোই ধসে
ইন্ডিয়ান কমোডিটি মার্কেট (এমসিএক্স)-এ সোনার দাম ০.৯% কমে ১০ গ্রাম প্রতি ৯০,০০০ টাকার নিচে নেমে আসে এবং ৮৯,২৬০ টাকায় বন্ধ হয়। তবে জুন ২০২৫ ডেলিভারির জন্য সোনার ফিউচার্স ৮৯,৮৮৫ টাকায় টিকে ছিল। অন্যদিকে, রূপার দাম ২.৬৭% কমে প্রায় ৯২,৯১০ টাকা প্রতি কিলোগ্রামে বন্ধ হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারেও দুর্বলতা
নিউ ইয়র্কের কমেক্সে জুন ডেলিভারির সোনা ১.৪% কমে ৩,০৭৩.৫ ডলার প্রতি আউন্সে নেমে আসে, যা এক সপ্তাহের সর্বনিম্ন। রূপার দাম আরও বেশি কমে ৮% পর্যন্ত নেমে যায়, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধস
শুক্রবার বিশ্বব্যাপী স্টক বাজারেও ব্যাপক বিক্রয় চাপ দেখা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শেয়ার বাজার পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধসের সম্মুখীন হয়। ভারতে বিএসই সেনসেক্স ৯৩০ পয়েন্ট কমে ৭৫,৩৬৪ তে বন্ধ হয়, এবং নিফ্টি ৩৪৫ পয়েন্ট কমে ২২,৯০৪ এ নেমে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের ফল এটি।
সোনার দাম কেন কমলো – জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মতামত
মার্কেট বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের ট্যারিফ ঘোষণায় সোনা এবং অন্যান্য মূল্যবান ধাতুকে ছাড় দেওয়া হয়েছে, যার ফলে এর দামে পূর্বের ঊর্ধ্বগতি এখন দুর্বল হচ্ছে। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে দামের ধারাবাহিক বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগকারীরা লাভ বুকিং (Profit Booking) শুরু করেছে।
সোনার দাম আরও কমবে কিনা?
কিছু বিশেষজ্ঞের ধারণা, সোনার দাম আরও কমতে পারে। আন্তর্জাতিকভাবে চাপ অব্যাহত থাকলে সোনা ১,৮২০ ডলার প্রতি আউন্স পর্যন্ত কমতে পারে, যা বর্তমান মূল্যের থেকে প্রায় ৩৮% কম। যদি এমন হয়, তবে এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।