পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে অপারেশন সিন্ধুর প্রভাব: তীব্র ধস

🎧 Listen in Audio
0:00

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত দুর্দশার দিকে এগিয়ে চলেছে এবং ২২শে এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পালঘামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার পর পরিস্থিতি আরও বিষম হয়েছে। ভারত ‘অপারেশন সিন্ধুর’ অধীনে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে প্রতিশোধমূলক কার্যক্রম চালানোর পর পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে তীব্র ধস দেখা দেয়।

পাকিস্তান স্টক মার্কেট: পালঘাম সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারতের অপারেশন সিন্ধুর প্রভাব ভারতীয় এবং পাকিস্তানী উভয় শেয়ার বাজারেই স্পষ্ট দেখা গেছে। যেখানে ভারতীয় শেয়ার বাজার এই অপারেশনকে সাধুবাদ জানিয়ে লাল রেখায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে, সেখানে পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে গভীর উদ্বেগ ও মন্দার পরিবেশ বিরাজ করেছে।

বুধবার পাকিস্তানে ভারতের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে হামলার পর পাকিস্তানের বেঞ্চমার্ক শেয়ার ইন্ডেক্স (KSE-100) 5.78 শতাংশ মারাত্মকভাবে ধসে যায়। প্রাথমিক লেনদেনে KSE-100 ইন্ডেক্স 6,272 পয়েন্ট অর্থাৎ প্রায় 5.5 শতাংশ কমে 107,296 তে লেনদেন করে।

পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে তীব্র ধস

ভারতের অপারেশন সিন্ধু পাকিস্তানের শেয়ার বাজারকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করেছে। ২৩শে এপ্রিলের পর পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস দেখা দেয়। ২৪শে এপ্রিল পাকিস্তানের বেঞ্চমার্ক শেয়ার ইন্ডেক্স, KSE-100, 5.78 শতাংশ ধসে যায়। একই দিনে KSE-100 ইন্ডেক্স 6,272 পয়েন্ট কমে 107,296 পয়েন্টে নেমে আসে। এই ধসের প্রভাব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক কাঠামোতে গভীর এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।

২২শে এপ্রিল পালঘাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব পড়ে। ভারত সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল, কূটনীতিকদের সংখ্যা কমানো এবং সার্ক ভিসা ছাড় বাতিলের পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানের অবস্থা আরও দুর্বল হয়েছে। ফলস্বরূপ, পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

করাচি স্টক এক্সচেঞ্জে সংকট

২৪শে এপ্রিল করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের KSE-100 ইন্ডেক্স আবারও বড় ধাক্কা সহ্য করে। লেনদেন শুরু হওয়ার মিনিটের মধ্যেই ইন্ডেক্স ২,৪৮৫ পয়েন্ট ধসে যায়। এই সাথে পাকিস্তানের শেয়ার বাজারের ক্যাপিটাল মার্কেটেও ব্যাপক ক্ষতি হয়। পূর্বে যেখানে করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের মার্কেট ক্যাপ ছিল ৫২.৮৪ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২৯শে এপ্রিল তা কমে ৫০.৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

পাকিস্তানের শেয়ার বাজার ২২শে এপ্রিলের পর ৫,৪৯৪.৭৮ পয়েন্ট অর্থাৎ প্রায় ৪.৬৩ শতাংশ ধসে যায়। এর ফলে পাকিস্তান ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি সহ্য করে। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে পাকিস্তানের শেয়ার বাজার ২.৪৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা আরও বিবর্ণ হয়েছে। পূর্বেই অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া পাকিস্তানকে এই নতুন চ্যালেঞ্জের সামনাসামনি হতে হচ্ছে।

পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতির হারও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মূল্যস্ফীতির হার ৩৮.৫ শতাংশে পৌঁছে যায়, যা পাকিস্তানের জন্য গুরুতর সংকটের সঙ্কেত। এই সাথে, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার ৩.৭ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে, যা আরেকটি উদ্বেগের বিষয়। এই অবস্থায় পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এবং দেশের আর্থিক সংকট অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

Leave a comment