মঙ্গলবার শেয়ার বাজারে নিফটি ৫০ ইন্ডেক্স ১.৪% নেমেছে। এফআইআই-এর বিক্রয় এবং দুর্বল বাজারের ইঙ্গিতের সাথে গिর্াবট অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
নিফটি ফিউচার্স: মঙ্গলবার শেয়ার বাজারের জন্য কঠিন দিন ছিল, যেখানে নিফটি ৫০ ইন্ডেক্স ১.৪% নেমেছে। এই গिর্াবটের সাথে সাথে বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিফটি প্রায় ২.৫% নেমে গেছে। বাজার বিশেষজ্ঞরা এটাকে বেয়ারিশ মুডের প্রভাব বলে মনে করছেন। SAMCO সিকিউরিটিজ-এর টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট ওম মেহরা বলেছেন যে নিফটি একটি বিপজ্জনক ‘বেয়ারিশ ইনফ্লিক্টিং ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন’ তৈরি করেছে। এর অর্থ হল মঙ্গলবারের ট্রেডিং গত ছয় দিনের প্রত্যাশার উপর পানি ঢেলে দিয়েছে এবং এখন নিফটি ‘লোয়ার হাইজ’ এবং ‘লোয়ার লো’ ওয়ালা ট্রেন্ডে চলছে। এই অবস্থায় গिর্াবটের ধারা থামার সম্ভাবনা কম।
নিফটির মুভিং অ্যাভারেজ এবং আরএসআই-তে গির্াবটের ইঙ্গিত
এছাড়াও, নিফটি ৯-দিনের মুভিং অ্যাভারেজের নিচে নেমে গেছে, যার ফলে শর্ট টার্মে উর্ধ্বগতির সম্ভাবনা আরও কমে গেছে। অন্যদিকে, রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইন্ডেক্স (RSI) ও ৩৫-এর কাছাকাছি নেমে বাজারের কমে যাওয়া শক্তিকে দেখাচ্ছে। ওম মেহরার মতে, নিফটির জন্য এখন ২২,৮০০-এর স্তর একটি বড় সহায়তা হতে পারে, এবং যদি এই স্তর ভেঙে যায় তাহলে আরও গिর্াবট আসতে পারে।
এফআইআই-এর শর্ট পজিশন এবং বাজারে প্রভাব
যদি আমরা ফিউচার্স এবং অপশন্স (F&O)-এর কথা বলি, তাহলে বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (এফআইআই) প্রভাব স্পষ্ট। NSE-এর তথ্য অনুযায়ী, এফআইআই নিফটি ফিউচার্সে সবচেয়ে বেশি পজিশন তৈরি করেছে। গত ৩২-এর মধ্যে ২৬টি ট্রেডিং সেশনে এফআইআই নিফটি ফিউচার্সে শুদ্ধ বিক্রয় করেছে। তাদের মোট ওপেন পজিশন ৩.৬ লক্ষ কন্ট্রাক্টে পৌঁছেছে, এবং এই অবস্থা বাজারে গির্াবটের ইঙ্গিত দেয়। গতবার যখন এইরকম অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তখন নিফটি ২৫,০০০-এর স্তরে ছিল, তারপর সেটা ২৩,৮০০ পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল। এইবার এফআইআই-এর লং-শর্ট রেশিও মাত্র ০.২১, অর্থাৎ প্রতিটি লং পজিশনের বিপরীতে তাদের ৫টি শর্ট পজিশন আছে। এর অর্থ হল বাজারে গির্াবটের ধারা এখনও চলতে পারে।
খুচরা বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা এবং বাজারের দিক
অন্যদিকে, খুচরা বিনিয়োগকারীদের দিক কিছুটা ইতিবাচক। তাদের লং-শর্ট রেশিও ২.৫, অর্থাৎ প্রতি দুটি শর্ট পজিশনের বিপরীতে পাঁচটি লং পজিশন আছে। এছাড়াও, প্রোপ্রাইটারি ট্রেডার্স এবং ঘরোয়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (ডিআইআই) দিক কিছুটা ইতিবাচক। যদিও খুচরা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাজারে উর্ধ্বগতির প্রত্যাশা বজায় রেখেছে, তবে এখন পর্যন্ত গির্াবট দেখে এই প্রত্যাশা কমে যেতে পারে।
শেয়ারে বিক্রয় এবং কিছু শেয়ারে উর্ধ্বগতি
বাজারে কিছু শেয়ারে বিক্রয়ের পরিবেশও দেখা যাচ্ছে। সুপ্রিম ইন্ডাস্ট্রিজ ৯% নেমেছে এবং এর সাথে ওপেন পজিশনে ৫৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও, ডিক্সন টেকনোলজিস, ওবারয় রিয়াল্টি, অ্যাক্সিস ব্যাংক, জিও ফাইন্যান্সিয়াল এবং জোম্যাটো-র মতো শেয়ারেও গির্াবট দেখা গেছে। অন্যদিকে, এলটিটিএস (LTTS) সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যেখানে ১১% উর্ধ্বগতি হয়েছে এবং ওপেন পজিশনে ২৮.৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউনাইটেড ব্রুয়ারিজ এবং উইপ্রোর মতো শেয়ারেও ক্রয়ের চাপ দেখা যাচ্ছে।
ভবিষ্যদ্বাণী
মোটকথা, শেয়ার বাজার এখন দুর্বল দেখাচ্ছে, তবে খুচরা বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং কিছু শেয়ারে উর্ধ্বগতি একটি ভারসাম্য বজায় রেখেছে। আগামী দিনগুলিতে বাজারের চালের উপর নজর রাখা জরুরি হবে। এই গির্াবট থামবে নাকি বেয়ারদের উৎসব চলতে থাকবে? এটা দেখা মজাদার হবে।
