আইপিএস তানু শ্রী: কোনও একজন ঠিকই বলেছিলেন, “খুদি কে কর বুলন্দ এতনা, খুদা বন্দে সে পূছে বতা তেরি রজা ক্যা হ্যা?” এই শের তানু শ্রীর জীবনযাত্রাকে সম্পূর্ণভাবেই প্রতিফলিত করে। ঝাঝার অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি-এর কন্যা তানু শ্রী সরকারি চাকরির পথে একটি নতুন উচ্চতা অর্জন করেছেন। তিনি কেবলমাত্র তাঁর পরিবারের, বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন।
তানু শ্রীর অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা
প্রশাসনিক সেবায় যাওয়ার জন্য তানু শ্রী কঠিন পথ বেছে নিয়েছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল একদিন আইপিএস কর্মকর্তা হওয়া, এবং এই লক্ষ্য অর্জন করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি আরপিএফ-এ সহকারী কমান্ডেন্টের পদে তাঁর যাত্রা শুরু করেন। এরপর আয়কর বিভাগের পরীক্ষায় সফলতা অর্জন করলেও তিনি এই পদে থেকে যাননি। তাঁর স্বপ্ন অন্যত্র ছিল, এবং তিনি তাঁর ভাগ্যকে ইউপিএসসির দিকে পরিচালিত করেছিলেন।
আইপিএস কর্মকর্তা হওয়ার যাত্রা
তানু শ্রী ২০১৬ সালে তাঁর ইউপিএসসি প্রস্তুতি শুরু করেন এবং ২০১৭ সালে ফলাফল আসে। তাঁর কঠোর পরিশ্রম ও নিবেদন তাঁকে আইপিএস কর্মকর্তা হিসেবে স্থান দিয়েছে। এই সাফল্যের পর তাঁর পরিবারে আনন্দ উদ্বেলিত হয়েছিল। তিনি তাঁর পরিশ্রম ও সংগ্রামের কারণে আজ আইপিএস কর্মকর্তা হয়েছেন এবং বর্তমানে কাশ্মীরের এসপি (এসআইএ) পদে নিযুক্ত।
পরিবারের সমর্থন ও অনুপ্রেরণা
তানু শ্রী তাঁর পিতা-মাতা থেকেই मार्गदर्शन পেয়েছিলেন। তাঁর পিতা সুবোধ কুমার ও মাতা নীলম প্রসাদ সর্বদা তাঁর উৎসাহবর্ধন করেছেন। তারা সর্বদাই বলেছিলেন সংগ্রামেই সাফল্য আসে। তানু শ্রীর জন্য তাঁর পরিবারের সদস্য এবং বিশেষ করে তাঁর বড় বোন মানু শ্রী, যিনি সিআরপিএফ-এর কমান্ডেন্ট, অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন। তানু শ্রী বলেন, বড় বোনের পুলিশের জার্সি দেখে তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।
বিবাহ ও পরিবারের দায়িত্ব
তানু শ্রীর বিবাহ ২০১৫ সালে হয়েছিল এবং তিনি পরিবারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তাঁর ইউপিএসসি প্রস্তুতি চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, পরিবারের সমর্থনের মাধ্যমেই তিনি তাঁর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পেরেছিলেন। তাঁর স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যও তাঁর সংগ্রামের সাক্ষী এবং সর্বদা তাঁর উৎসাহবর্ধন করেছেন।
শিক্ষা ও প্রস্তুতির যাত্রা
তানু শ্রীর প্রাথমিক শিক্ষা মোতিহারি থেকে শুরু হয়, এবং এরপর তাঁর পিতার স্থানান্তরের কারণে যেখানেই যান সেখানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তিনি তাঁর শিক্ষা সম্পন্ন করেন। প্লাস টু শেষ করার পর, তিনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য দিল্লিতে চলে আসেন। দিল্লিতে কোচিংয়ের পাশাপাশি তিনি স্ব-অধ্যয়নেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার মাধ্যমেই সাফল্য অর্জন করা যায়।
সিআরপিএফ কমান্ডেন্ট বোনের সমর্থন
তানু শ্রীর জন্য তাঁর বড় বোন মানু শ্রীরও অবদান ছিল অনেক বেশি। মানু শ্রী সিআরপিএফ-এ কমান্ডেন্টের ভূমিকায় থাকাকালীন সর্বদা তানুকে উৎসাহিত করেছেন। তানু শ্রী বলেন, তাঁর বোনের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা তাঁকেও নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করেছে।
তানু শ্রীর বার্তা
তানু শ্রীর বিশ্বাস, যদি কারো সঠিক मार्गदर्शन ও दृढ़ সংকল্প থাকে, তবে কাউকে সাফল্য অর্জন করা কঠিন নয়। তিনি বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাঁর লক্ষ্যের প্রতি নিবেদিত থাকতে হবে এবং কখনোই হার মেনে নেওয়া উচিত নয়।
তানু শ্রীর সাফল্যের গল্প আমাদের শেখায় যে স্বপ্ন বড় হলেও তা পূরণ করার জন্য সংগ্রাম করতে হয়। তাঁর যাত্রা প্রমাণ করে যে যদি কেউ নিশ্চিত হয়ে যান, তাহলে তিনি তাঁর পরিশ্রম এবং সংকল্পের মাধ্যমে যে কোনও কঠিন পরিস্থিতি অতিক্রম করতে পারেন। তানু শ্রীর সাফল্য কেবল তাঁর নিজের জন্য নয়, সমগ্র সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
এই অনুপ্রেরণামূলক গল্প পড়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং সঠিক मार्गदर्शनের সাথে কেউ তাঁর স্বপ্ন সত্য করে তুলতে পারে। তানু শ্রী প্রমাণ করেছেন যে কারো ইচ্ছা যদি মজবুত হয়, তাহলে অবশ্যই সাফল্য আসে।