২০২৫ সালের বি.এড প্রবেশিকা পরীক্ষায় নকল রোধে AI-ভিত্তিক সিসিটিভি, কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং মোবাইল নিষিদ্ধ। ২১টি কেন্দ্রে ১৫৯১২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে।
B.Ed প্রবেশিকা পরীক্ষা: বুন্দেলখণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত বি.এড যুক্ত প্রবেশিকা পরীক্ষা ২১টি পরীক্ষাকেন্দ্রে দুটি পালায় সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এবার নকল রোধে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। পরীক্ষাকক্ষে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) যুক্ত সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে পরীক্ষার্থীদের নজরদারি করা হয়। এর ফলে নকলের সম্ভাবনা অনেকটা কমে গেছে। এই পরীক্ষায় প্রায় ১৫৯১২ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছে।
কঠোর নিরাপত্তা ও নিয়ম
পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরীক্ষার্থীদের যাচাইয়ের পরে তাদের কক্ষে প্রবেশ করানো হয়েছিল। কক্ষ পরিদর্শকদেরও মোবাইল বা অন্যান্য কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই কঠোর ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল পরীক্ষার ন্যায্য ও স্বচ্ছ পরিচালনা নিশ্চিত করা।
AI প্রযুক্তির মাধ্যমে নকলের উপর কঠোর নজরদারি
পরীক্ষাকেন্দ্রে স্থাপিত AI-ভিত্তিক সিসিটিভি ক্যামেরা সরাসরি বুন্দেলখণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের সাথে যুক্ত ছিল। পরীক্ষার সময় যদি কোনও পরীক্ষার্থী নকল করার চেষ্টা করে, তাহলে AI সিস্টেম তৎক্ষণাৎ কন্ট্রোল রুমকে তথ্য পাঠিয়ে দেয়। এরপর কন্ট্রোল রুম থেকে হটলাইনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রকে তথ্য দেওয়া হয় এবং নকলকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ব্যবস্থা পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
নেগেটিভ মার্কিংয়ের নিয়ম
বি.এড প্রবেশিকা পরীক্ষায় মোট ১০০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য নেগেটিভ মার্কিং প্রযোজ্য ছিল। এই নিয়ম অনুসারে পরীক্ষার্থীকে ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটা যাবে, যার ফলে শুধুমাত্র সঠিক উত্তর দেওয়ার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা হয়। এতে পরীক্ষার মান ও ন্যায্যতা বজায় থাকে।
পরীক্ষার প্যাটার্ন ও বিষয়
প্রথম প্রশ্নপত্রে সাধারণ জ্ঞানের সাথে হিন্দি ও ইংরেজি ভাষার প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্যদিকে দ্বিতীয় প্রশ্নপত্রে সাধারণ যোগ্যতা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রশ্ন করা হয়েছিল। এইভাবে উভয় প্রশ্নপত্রই ছাত্রছাত্রীদের ব্যাপক বোধ ও বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞতার পরীক্ষা করে।
পরীক্ষাকেন্দ্র ও প্রার্থী সংখ্যা
আগ্রা জেলায় ২১টি কেন্দ্রে মোট ১০২৯৮ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। মথুরার ৫টি কেন্দ্রে ২৪৮৩ জন, ফিরোজাবাদের ৪টি কেন্দ্রে ১৯৭৯ জন এবং মেনপুরীর ৩টি কেন্দ্রে ১১৫২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রতিটি জেলায় কঠোর নজরদারি ও যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
ফিরোজাবাদে পরীক্ষার আয়োজন
ফিরোজাবাদ জেলায় চারটি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার মধ্যে দাউ দয়াল ডিগ্রি কলেজের দুটি কেন্দ্র, এসআরকে ডিগ্রি কলেজ এবং মহাত্মা গান্ধী ডিগ্রি কলেজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। মোট ১৯৭৯ জন পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এখানেও কঠোর নিরাপত্তা ও যাচাইয়ের পরে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ দেওয়া হয়েছিল।
নোডাল কর্মকর্তা ও ব্যবস্থা
বি.এড প্রবেশিকা পরীক্ষার নোডাল কর্মকর্তা ডাঃ শরদচন্দ্র উপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরীক্ষার সময় পরীক্ষা ন্যায্য ও স্বচ্ছ রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষার সময় মোট ৬৬ জন পর্যবেক্ষক এবং ৩৩ জন স্ট্যাটিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন, যারা পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করেছিলেন।
পরীক্ষা প্রক্রিয়ার শুরু ও সময়
প্রথম পালার পরীক্ষা সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় পালার পরীক্ষা দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সম্পন্ন হয়। পরীক্ষার্থীরা সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছিলেন। বায়োমেট্রিক যাচাই ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের পরে তাদের প্রবেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরীক্ষায় ন্যায্যতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা
মোবাইল ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্র কক্ষ পরিদর্শকদেরকেও পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই কঠোর নিয়মের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীদের নয়, পরিদর্শকদেরকেও যেকোনো ধরণের নকল বা অনুচিত কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখা।