DGCA-র সুপারিশ: আর্টস ও কমার্সের ছাত্ররাও পাইলট প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। ৩০ বছর পর নিয়মে বড় পরিবর্তন। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর নতুন নিয়ম কার্যকর হবে।
DGCA Rule: পাইলট হওয়ার স্বপ্ন এখন শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে না। ডাইরেক্টোরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (DGCA) একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে আর্টস ও কমার্সের ছাত্ররাও কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL) এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। DGCA তাদের সুপারিশ নাগরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এরপর এই প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে, যা এটিকে अधिसूचित করবে। এরপরই এই নিয়ম কার্যকর হবে।
এখন শুধু বিজ্ঞান নয়, আর্টস ও কমার্সের ছাত্রছাত্রীরাও পাবে সুযোগ
ভারতে এখন পর্যন্ত পাইলট হওয়ার জন্য দ্বাদশ শ্রেণীতে পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত अनिवार्य বিষয় ছিল। যদি কোনও আর্টস বা কমার্সের ছাত্র পাইলট হতে চায়, তাহলে তাকে ওপেন স্কুল থেকে পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতের পুনরায় পরীক্ষা দিতে হতো। এই নিয়ম ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর রয়েছে। কিন্তু এখন DGCA বলছে যে পাইলট হওয়ার জন্য দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগ अनिवार्य নয়।
DGCA-র মতে, পাইলটকে যতটা পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতের জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, তা স্কুল পর্যায়েই যথেষ্ট। তদুপরি, বিমান চালানোর জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রার্থী চিকিৎসাগত যোগ্যতা, মানসিকতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে কিনা।
নিয়ম পরিবর্তনের ফলে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কীভাবে বদলাবে?
নিয়ম পরিবর্তনের পর লক্ষ লক্ষ ছাত্র, যারা এখন পর্যন্ত পাইলট হওয়ার স্বপ্ন ত্যাগ করেছিল, তাদের পুনরায় একটি সুযোগ পাবে। আর্টস ও কমার্সের ছাত্রছাত্রীরা, যারা দ্বাদশ শ্রেণী সম্পন্ন করেছে, তারা এখন CPL-এর জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। এই পরিবর্তন সেইসব ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিয়ে আসবে, যাদের বিজ্ঞানে আগ্রহ ছিল না কিন্তু তারা পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল।
DGCA আশা করছে এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে পাইলট হতে ইচ্ছুক তরুণদের সংখ্যায় ব্যাপক বৃদ্ধি হবে। এর জন্য DGCA আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। দেশজুড়ে ফ্লাইং স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা তাদের ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ তথ্য আপডেট করবে।
ফ্লাইং স্কুলগুলিতেও হবে উন্নয়নের প্রক্রিয়া
DGCA প্রধান ফাইজ আহমদ কিদওয়াই সমস্ত ফ্লাইং স্কুলগুলিকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন যে তারা তাদের ওয়েবসাইটে প্রশিক্ষণের সময়সূচী, বিমানের সংখ্যা, প্রশিক্ষকের উপলব্ধতা, সিমুলেটরের অবস্থা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করবে। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা যখনই কোনও ফ্লাইং স্কুলে ভর্তির জন্য যাবে, তখন তাদের সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে এবং কোনও ধরণের ভুল বোঝাবুঝির অবস্থা তৈরি হবে না।
DGCA এটিও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে নিয়ম পরিবর্তনের অর্থ এই নয় যে নিরাপত্তার সাথে আপোষ করা হবে। প্রতিটি ছাত্রকে চিকিৎসাগত যোগ্যতা পরীক্ষা, মানসিক পরীক্ষা এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
পাইলট হওয়ার পথে কী কী ধাপ থাকবে?
যদি এই নিয়ম কার্যকর হয়, তাহলে যে কোনও দ্বাদশ শ্রেণী পাশ ছাত্রছাত্রী, তিনি আর্টস, কমার্স বা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেছেন না কেন, CPL-এর প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবে। তাকে এই ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে—
- সর্বপ্রথম DGCA কর্তৃক নির্ধারিত চিকিৎসা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- তারপর কোনও मान्यताप्राप्त ফ্লাইং স্কুলে ভর্তি হতে হবে।
- প্রশিক্ষণের সময় প্রয়োজনীয় উড়ান ঘন্টা সম্পূর্ণ করতে হবে।
- লিখিত পরীক্ষা এবং অন্যান্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া अनिवार्य।
- সমস্ত পরীক্ষা এবং প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর DGCA থেকে CPL জারি করা হবে।
পরিবর্তন কেন প্রয়োজন ছিল?
প্রকৃতপক্ষে, গত কয়েক বছর ধরে পাইলট হওয়ার নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেক সিনিয়র পাইলট বলেছেন যে বিজ্ঞান বিভাগের শর্ত এখন পুরানো হয়ে গেছে। তাদের মতে, উড়ানের সময় যে প্রযুক্তিগত তথ্যের প্রয়োজন হয়, তা মৌলিক গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞান থেকে সম্পূর্ণ হয়ে যায়। এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল প্রার্থীর মানসিক ভারসাম্য, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং শেখার আগ্রহ।
ছাত্রছাত্রীদের কী করতে হবে?
যদি আপনি দ্বাদশ শ্রেণী পাশ করেছেন এবং পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাহলে এখন আপনার জন্য পথ সহজ হতে পারে। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে চিকিৎসাগত যোগ্যতা এবং DGCA কর্তৃক নির্ধারিত সমস্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া अनिवार्य। তদুপরি, ফ্লাইং স্কুল নির্বাচন করার সময় তার সুনাম এবং অবকাঠামো সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য নিন।
নতুন নিয়ম কখন থেকে কার্যকর হবে?
DGCA-র সুপারিশের উপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নাগরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরেই নেওয়া হবে। এরপরই এই নিয়ম अधिसूचित হয়ে কার্যকর হবে। তবে আশা করা হচ্ছে যে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।