বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার রাতে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দলের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেন। বক্তৃতার সময় তিনি চমকপ্রদ একটা তথ্য প্রকাশ করে বলেন যে, তাঁর হত্যার জন্য বাংলাদেশে আন্দোলন শুরু করা হয়েছিল। তিনি মোহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন এবং বলেন যে, তিনি আমাকে এবং আমার বোনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।
ঢাকা: বাংলাদেশের অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার রাতে (৫ ফেব্রুয়ারী) ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দলের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেন। তবে, এই বক্তৃতার পর ঢাকায় পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রতিবাদকারীরা শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবনে হামলা করে এবং সেখানে ব্যাপক ভাংচুর করে। এই ঘটনার ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে।
বক্তৃতার সময় শেখ হাসিনা চমকপ্রদ একটা তথ্য প্রকাশ করে বলেন যে, তাঁর হত্যার জন্য বাংলাদেশে আন্দোলন শুরু করা হয়েছিল। তিনি মোহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন এবং বলেন যে, তিনি আমাকে এবং আমার বোনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।
শেখ হাসিনা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, "আল্লাহ যদি এই হামলার পরেও আমাকে বেঁচে থাকার সুযোগ দিয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই কোনো বড় কাজ করার জন্য। যদি তা না হতো, তাহলে এতবার মৃত্যুকে পরাজিত করতে পারতাম না।" তার এই বক্তব্যের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
শেখ হাসিনা ইউনুসকে কড়া জবাব দেন
বাংলাদেশের অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়ে মর্মান্তিক ঘটনাগুলির প্রতি তার দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, "মানুষ আমার বাড়ি কেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে? আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে ন্যায়বিচার চাই। আমি কি আমার দেশের জন্য কিছুই করিনি? আমাদের এত অপমান কেন করা হলো?"
তখতাপাল্টার পর প্রতিবাদকারীরা শেখ হাসিনার বাসভবনে শুধু ভাংচুরই করেনি, বরং সেখানকার সম্পদ লুট করে এবং বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলে। এই হামলার ক্ষোভে হাসিনা বলেন, "যে বাড়িতে প্রতিবাদকারীরা ভাংচুর করেছে, সেই বাড়ির সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িত। বাড়ি পুড়িয়ে ফেলা যায়, কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না।"
মোহাম্মদ ইউনুস এবং তার সমর্থকদের চ্যালেঞ্জ করে শেখ হাসিনা বলেন, "তারা জাতীয় পতাকা এবং সংবিধানকে বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করতে পারে, যা আমরা লাখ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জন করেছিলাম। কিন্তু বুলডোজার দিয়ে ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না।" তার এই আবেগঘন বক্তৃতা দেশবাসীর মনে গভীর সহানুভূতি এবং ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
শেখ হাসিনার পিতার বাসভবনে ভাংচুর
শেখ হাসিনার ফেসবুক লাইভ বক্তৃতার পর, ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত তাঁর বাসভবনের সামনে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। এই বাড়িটি এখন একটি স্মৃতিসৌধে পরিণত হয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতীক স্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতিবাদকারীরা ইন্টারনেট মিডিয়ায় "বুলডোজার মিছিল" এর আহ্বানের পর এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে, একদল সেনা প্রতিবাদকারীদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাদের হুট করে উত্তর দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবাদকারীরা প্রথমে ভবনের দেওয়ালে থাকা শহীদ নেতার ভাস্কর্যটিতে ক্ষতি করে এবং সেখানে লিখে, "এবার ৩২ নয়।" এই বার্তাটি শেখ হাসিনার পিতা, শেখ মুজিবুর রহমানের প্রসঙ্গে ছিল, যিনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট থেকে ভারতে আছেন, যখন তিনি বাংলাদেশে এক বৃহৎ ছাত্র নেতৃত্বাধীন প্রতিবাদ আন্দোলনের পর দেশ ছেড়ে চলে যান। তার বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন এবং প্রতিবাদের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।