নীরব মোদীর জামিন আবেদন পুনরায় খারিজ

নীরব মোদীর জামিন আবেদন পুনরায় খারিজ
সর্বশেষ আপডেট: 23-05-2025

নীরব মোদীর জামিন আবেদন ব্রিটেনের হাইকোর্ট আবারও খারিজ করল। আদালত বলেছে, অভিযুক্তের পলায়নের সম্ভাবনা রয়েছে এবং ৫১৫০ কোটি টাকার অর্থ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Nirav Modi: ব্রিটেনের হাইকোর্ট পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (PNB) কেলেঙ্কারীর মূল অভিযুক্ত এবং পলাতক হীরা ব্যবসায়ী নীরব মোদীর জামিন আবেদন আবারও কঠোরভাবে খারিজ করে দিয়েছে। আদালত বলেছে যে নীরব মোদীর কাছে এখনও প্রচুর পরিমাণে আর্থিক সম্পদ রয়েছে, যার ফলে তার পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তদন্তকারী সংস্থা এখনও সম্পূর্ণ অর্থ খুঁজে পায়নি

ইউকে-র জাস্টিস কিংস বেঞ্চ ডিভিশন তাদের ১০ পৃষ্ঠার আদেশে স্পষ্ট করে বলেছে যে নীরব মোদী কর্তৃক কথিত জালিয়াতিতে ১০১৫.৩৫ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার করা হয়েছিল, যার মধ্যে মাত্র ৪০৫.৭৫ মিলিয়ন ডলার বিশ্বজুড়ে জব্দ বা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৫১৫০ কোটি টাকা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই অর্থ নীরব মোদীর পালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতাকে নির্দেশ করে।

নীরব মোদীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রমাণ: আদালত

আদালত মনে করেছে যে নীরব মোদীর বিরুদ্ধে প্রথম দৃষ্টিতে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই প্রমাণগুলির মধ্যে রয়েছে যে নীরব মোদী সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন, প্রমাণ নষ্ট করেছেন, ডামি পরিচালকদের একটি দেশ থেকে অন্য দেশে পাঠিয়েছেন এবং সার্ভার পুড়িয়ে দিয়েছেন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে দুবাইতে একটি কম্পিউটার সার্ভার পোড়ানোর ঘটনার কথাও আদালত উল্লেখ করেছে।

'ভারতে ফিরে আসা এড়াতে চেষ্টা করবে নীরব': বিচারক

আদালত বলেছে যে নীরব মোদী ভারতে খুবই গুরুতর এবং বড় আর্থিক অপরাধের অভিযোগের মুখোমুখি। এমন পরিস্থিতিতে তার ভারতে ফিরে আসা এড়ানোর প্রবল প্রেরণা রয়েছে। আদালত মনে করেছে যে সে প্রত্যর্পণ এড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।

ডায়মন্ড হোল্ডিংস লিমিটেড এবং সন্দেহজনক আর্থিক শক্তি

আদালত সেই কোম্পানির কথাও উল্লেখ করেছে যার সিইও হিসেবে নীরব মোদী কর্মরত ছিলেন - ডায়মন্ড হোল্ডিংস লিমিটেড। এই কোম্পানি নীরবের জামিনের জন্য লক্ষ লক্ষ পাউন্ডের অর্থের প্রস্তাব দিয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে নভেম্বরের মধ্যে এই কোম্পানি ক্রমান্বয়ে ০.৫ মিলিয়ন, ১ মিলিয়ন, ২ মিলিয়ন এবং ৪ মিলিয়ন পাউন্ডের প্রস্তাব দিয়েছে, যার ফলে আদালতের তার আর্থিক অবস্থা নিয়ে আরও সন্দেহ হয়েছে।

নীরব মোদী ২০১৯ সাল থেকে জেলে বন্দী

আপনাদের জানিয়ে রাখি যে নীরব মোদীকে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে লন্ডনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই থেকে সে ইউকে-র জেলে বন্দী এবং ক্রমাগত জামিনের জন্য চেষ্টা করে চলেছে। ভারত সরকার তার প্রত্যর্পণ চেয়েছে এবং ২০২১ সালে ইউকে-র তৎকালীন গৃহসচিব প্রীতি প্যাটেল প্রত্যর্পণের অনুমোদনও দিয়েছিলেন। তবে নীরব মোদী বারবার ইউকে-র আদালতগুলিতে আপিল করে এই আদেশ বন্ধ করার চেষ্টা করে চলেছে।

ভারতীয় সংস্থা ক্রমাগত প্রমাণ উপস্থাপন করছে

ভারতের সংস্থা যেমন প্রয়োগ দপ্তর (ED) এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (CBI) ইউকে আদালতে ক্রমাগতভাবে প্রমাণ করছে যে নীরব মোদীর বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অপরাধের পাকাপোক্ত প্রমাণ রয়েছে এবং তাকে ভারতে আনা জরুরী। এটাই কারণ নীরবের জামিন এতবার খারিজ হয়েছে।

আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত: কোনও সুযোগ নেই

আদালত শেষ পর্যন্ত বলেছে, "আমি সকল তথ্য ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে এই মামলায় নীরব মোদীকে জামিন দেওয়া যাবে না। জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হল।"

Leave a comment