মস্কো বিমানবন্দরে ড্রোন আক্রমণে বিঘ্নিত হলো বিমান চলাচল। সাংসদ কনিমোঝীসহ ভারতীয় প্রতিনিধিদলের বিমান বহু ঘণ্টা আকাশে ঘুরতে থাকে। নিরাপত্তা যাচাইয়ের পর বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করে।
ড্রোন আক্রমণ: ২০২৫ সালের ২২শে মে, দ্রমক সাংসদ কনিমোঝীসহ ভারতীয় সাংসদদের একটি প্রতিনিধিদল রাশিয়ার মস্কোতে পৌঁছে। কিন্তু তাদের বিমানটি মস্কো বিমানবন্দরে অবতরণের সময় হঠাৎ করেই ড্রোন আক্রমণ হয়। এর ফলে বিমানবন্দরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সকল বিমান চলাচল অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে সাংসদদের বিমানটি অবতরণের অপেক্ষায় বহু ঘণ্টা আকাশে ঘুরতে থাকে।
মস্কো বিমানবন্দরে ড্রোন আক্রমণে কি ঘটেছিল?
রাশিয়ার মস্কো বিমানবন্দরে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ড্রোন আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এই আক্রমণের পর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় এবং সকল অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বহু ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। এই কারণে বহু বিমান মস্কো বিমানবন্দরে অবতরণের অনুমতি পায়নি এবং আকাশে ঘুরতে থাকে।
ভারতীয় সাংসদদের বিমানটিও সেই সময় মস্কোতে ছিল। এই বিমানে দ্রমক সাংসদ কনিমোঝী, সমাজবাদী পার্টির রাজীব রায়, রাজদ-এর প্রেমচন্দ গুপ্তা, ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ, অশোক কুমার মিত্তাল এবং রাষ্ট্রদূত মঞ্জীব সিংহসহ ছয়জন সাংসদ ছিলেন। বিমানটিকে দীর্ঘক্ষণ অবতরণের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। অবশেষে নিরাপত্তা যাচাইয়ের পর বিমানটি নিরাপদে মস্কো বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সাংসদদের ভ্রমণ এবং “অপারেশন সিন্দুর”
এই সাংসদ প্রতিনিধিদল “অপারেশন সিন্দুর”-এর অধীনে রাশিয়া এবং ইউরোপের কিছু দেশ ভ্রমণ করছে। এই অভিযানের উদ্দেশ্য হল ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী নীতি বিশ্বের কাছে কার্যকরভাবে তুলে ধরা। দেশের বিভিন্ন দলের সাংসদরা এই অপারেশনে অংশ নিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের ঐক্য প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।
রাশিয়ার পরে এই দলটি স্লোভেনিয়া, গ্রিস, লাতভিয়া এবং স্পেন ভ্রমণ করবে। ভারতের এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দ্রমক সাংসদ কনিমোঝী। মস্কোতে পৌঁছানোর পর তিনি বলেন, “রাশিয়া ভারতের কৌশলগত অংশীদার। কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা বিষয়ে আমরা এখানে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য এসেছি।”
সাংসদ কনিমোঝীর বক্তব্য: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ়তা
সাংসদ কনিমোঝী জানান, ভারতে সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনাগুলি সমগ্র দেশকে কাঁপিয়ে তুলেছে। “আমরা ২৬ জন নির্দোষ মানুষকে হারিয়েছি, তাই ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাংসদরা এক প্রতিনিধিদল হিসেবে বিদেশে গিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করবে।”
কনিমোঝী আরও বলেন, “আমরা এখানে আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্যদের সাথে দেখা করবো, রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করবো। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ কৌশল তৈরির জন্য আমরা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, মিডিয়া এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথেও আলোচনা করবো।”
নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
মস্কো বিমানবন্দরে ড্রোন আক্রমণের খবর পেলেই নিরাপত্তা সংস্থাগুলি অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়। অনেক সংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আতঙ্কের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং সকল বিমানকে অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়।
ভারতীয় সাংসদদের বিমানের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় এবং অবশেষে তাদের নিরাপদে অবতরণ করা হয়। রাশিয়ায় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারাও বিমানবন্দরে সাংসদদের স্বাগত জানাতে আসেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।