রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইস্যুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে আমেরিকা তার বৈদেশিক নীতিতে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন আনতে গিয়ে রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে।
নয়াদিল্লি: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইস্যুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে আমেরিকা তার বৈদেশিক নীতিতে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন আনতে গিয়ে রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এই প্রস্তাবে রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে তার সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়েছিল, কিন্তু আমেরিকা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে, ভারত ও চীন তাদের নিরপেক্ষ নীতি বজায় রেখে ভোটগ্রহণ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে।
আমেরিকার অপ্রত্যাশিত অবস্থান
দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকা ইউক্রেনের সমর্থন করে আসছিল, কিন্তু এবার ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে আলাদা পথ অবলম্বন করে রাশিয়ার পক্ষে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমেরিকার প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকার এই কৌশলের পেছনে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ধমান ভূমিকা থাকতে পারে, যিনি রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেওয়ার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করে আসছেন।
ভারত সতর্ক নীতি গ্রহণ করেছে
ভারত সর্বদা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের জন্য কূটনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়েছে। এবারও ভারত জাতিসংঘে কোনও পক্ষের পক্ষে ভোটদানের পরিবর্তে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ভারত সকল দেশকে আলোচনা ও শান্তি প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানায়।
চীন, যা আগেও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ইস্যুতে তার অবস্থান স্পষ্ট করেনি, এবারও ভোটগ্রহণ থেকে দূরে রয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেকোনো নিন্দা প্রস্তাবে যোগদান থেকে বিরত থেকে চীন তার কূটনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
ট্রাম্প ও পুতিনের ঘনিষ্ঠতায় বেড়েছে আলোড়ন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব আমেরিকার বৈদেশিক নীতিকে প্রভাবিত করতে শুরু করেছে। সম্প্রতি প্রতিবেদন এসেছে যে ট্রাম্প পুতিনের সাথে সরাসরি আলোচনা করেছেন এবং ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদের বিষয়ে একটি সম্ভাব্য চুক্তির উপর আলোচনা করেছেন। এছাড়াও, রাশিয়া ও আমেরিকার কর্মকর্তাদের মধ্যে সৌদি আরবে একটি গোপন বৈঠক হয়েছে, যেখানে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
আমেরিকার এই পদক্ষেপ ইউরোপীয় সহযোগীদের জন্য একটা ধাক্কা হতে পারে, যারা এতদিন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ কৌশল গ্রহণে আস্থা রেখেছিল। অন্যদিকে, ভারত ও চীনের নিরপেক্ষ থাকা ইঙ্গিত করে যে বিশ্ব রাজনীতিতে বহুপাক্ষিক ভারসাম্য দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে।