চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা আবারও বেড়েছে। চীন তাইওয়ানের কাছে সামরিক অনুশীলন শুরু করেছে, যার ফলে তাইওয়ানে উদ্বেগ ও ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চীনের কার্যকলাপের ওপর কঠোর নজর রাখার কথা বলেছে। মন্ত্রণালয় এই উস্কানিমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তাদের তীব্র প্রতিক্রিয়াও প্রকাশ করেছে এবং চীনের এই পদক্ষেপকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে।
তাইপেই
চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে, চীন সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে তাদের সামরিক অনুশীলন তীব্র করেছে। তাইওয়ান এই সামরিক কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বৃহস্পতিবার চীনের এই পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে। তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল, যা তাদের সামরিক অবকাঠামোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে চীন কর্তৃক এই অনুশীলন তাইওয়ানকে গভীর উদ্বেগে ফেলে দিয়েছে। এই ঘটনাটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
'চীনই বৃহৎ হুমকি'
তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবারও চীনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে। মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে বলেছে, "চীন আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। তাইওয়ান স্ট্রেইট এবং হিন্দ-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এটি একমাত্র এবং সবচেয়ে বড় সংকট।"
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তাইওয়ানের আশেপাশে চীনা সামরিক কার্যকলাপ বেড়েছে। ৪৫টি চীনা বিমান, ১৪টি নৌযান এবং একটি চীনা সেনাবাহিনীর জাহাজের কার্যকলাপ দেখা গেছে। এর মধ্যে ৩৪টি চীনা সামরিক ইউনিট তাইওয়ানের জল ও আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে। তাইওয়ান এই বর্ধিত অনুপ্রবেশের যথাযথ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, যদিও তারা আরও তথ্য ভাগ করে নেয়নি।
তাইওয়ানও পদক্ষেপ নিয়েছে
এই সপ্তাহের শুরুতে চীনের উপকূল রক্ষী নৌবাহিনীর জাহাজগুলি তাদের জলসীমা লঙ্ঘন করার বিষয়ে তাইওয়ান তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। তাইওয়ানের কর্মকর্তাদের মতে, চারটি চীনা উপকূল রক্ষী নৌকা কিংমেন দ্বীপের কাছে তাইওয়ানের জলসীমায় প্রবেশ করেছে, এর পর তাইওয়ান তাদের নৌকা পাঠিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেয়।
এদিকে, চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা 'সিনহুয়া' জানিয়েছে, চীনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ওয়াং হুনিং তাইওয়ান ইস্যুতে একটি বার্ষিক বৈঠকের সময় বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি চীনকে 'ক্রস-স্ট্রেইট' (চীন-তাইওয়ান) সম্পর্কের উদ্যোগ নেওয়ার এবং তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সাথে একীভূত করার দিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
চীন তাইওয়ানের স্বশাসিত দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে গোলাগুলি অনুশীলনের জন্য একটি এলাকা নির্ধারণ করেছে। চীন তাইওয়ানকে তার অংশ বলে মনে করে এবং দাবি করে যে প্রয়োজন হলে, সে এই দ্বীপটিকে বল প্রয়োগ করে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। এছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চীন তাইওয়ানের জল ও আকাশসীমার আশেপাশে তাদের সামরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি করেছে, যার ফলে আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
