বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেশের অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সতর্ক করেছেন যে, রাজনৈতিক দলগুলি যদি পারস্পরিক মতবিরোধ দূর না করে, তাহলে দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা গুরুতরভাবে হুমকির মুখে পড়তে পারে।
জেনারেল জামান সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে, তারা পারস্পরিক বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করুক। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, সেনাবাহিনীর প্রাথমিক অগ্রাধিকার বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন করা এবং এরপর তারা ব্যারাকে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা
একটি সামরিক অনুষ্ঠানে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, "আজ যে অরাজকতা দেখা যাচ্ছে, তা কোথাও না কোথাও আমাদেরই তৈরি করা।" তিনি পুলিশ বিভাগের অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বলেছেন যে, নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সকলেই ভয়ের পরিবেশে কাজ করছেন, কারণ তাদের সহকর্মীরা মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন অথবা জেলে আছেন।
জেনারেল জামান বলেছেন, "সমাজে हिंसा এবং অরাজকতার বর্ধমান পরিবেশ দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপদের মুখে ফেলতে পারে।" তার এই বক্তব্য বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যা দেশে সংকটের অবস্থা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
শান্তির আহ্বান, রাজনীতিতে আঘাত
জেনারেল জামান বাংলাদেশি নাগরিকদের শান্তির আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, যদি রাজনৈতিক দলগুলি পরস্পরের সাথে ঝগড়া করে চলে, তাহলে দেশের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়বে। তিনি আরও বলেছেন যে, রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের উপর অভিযোগ-প্রত্যভিযোগে ব্যস্ত থাকায় দুষ্কৃতীদের পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার সুবিধা মিলছে।
তিনি আরও বলেছেন যে, এই মারাত্মক পরিস্থিতির প্রভাব ছাত্র নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের উপরও পড়তে পারে।
বাংলাদেশে নির্বাচনের সম্ভাবনা
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আগামী নির্বাচন নিয়েও মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, "আমি আগেই বলেছিলাম যে, নির্বাচনে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে, এবং আমরা সেই দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।" তবে, তিনি আরও বলেছেন যে, প্রফেসর ইউনুস এই দিকে কাজ করছেন, কিন্তু নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তিনি দেননি।
এদিকে, ইউনুস সরকার ঘোষণা করেছে যে, বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচন চলতি বছরের শেষের দিকে অথবা ২০২৬ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণা নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং দেশের রাজনৈতিক সংকটের জটিলতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
কি পড়বে ইউনুস সরকার?
বাংলাদেশের বর্ধমান রাজনৈতিক সংকট ও সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তার মধ্যে ইউনুস সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা তীব্রতর হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলি সরকারের উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে, এবং এখন সেনাবাহিনীর এই বক্তব্য রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও গভীর করে তুলেছে।