দিল্লিতে অত্যাধুনিক বাস স্ট্যান্স: নতুন দিগন্ত

দিল্লিতে অত্যাধুনিক বাস স্ট্যান্স: নতুন দিগন্ত
সর্বশেষ আপডেট: 8 ঘণ্টা আগে

পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত অত্যাধুনিক বাস স্ট্যান্সগুলোর নকশা দিল্লি-এনसीआर, বেঙ্গালুরু, নিউ মুম্বাইয়ের মতো ভারতীয় শহরগুলোর পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও চীনের বেশ কয়েকটি প্রধান শহরের আন্তর্জাতিক মানের মডেলগুলোর গভীর অধ্যয়ন的基础上 তৈরি করা হচ্ছে।

দিল্লি, দেশের রাজধানী, এখন গণপরিবহনের ক্ষেত্রে একটি নতুন উচ্চতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দিল্লি সরকার রাজধানী অঞ্চলের পুরনো ও জীর্ণ বাস স্ট্যান্সগুলো সরিয়ে বিশ্বমানের এবং স্মার্ট সুবিধা যুক্ত নতুন বাস স্ট্যান্স স্থাপন করতে যাচ্ছে। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য শুধু যাত্রীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করা নয়, বরং রাজধানীর চিত্রপটপরিবর্তন করাও।

শহুরে পরিবহনে বড় পরিবর্তন

দিল্লির বর্তমান সরকার ক্রমাগত শহর উন্নয়ন এবং আধুনিক অবকাঠামো তৈরির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় বাস কোট শেল্টার (Bus Queue Shelter) বা বিকিউএস-এর আধুনিকীকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সম্প্রতি, দিল্লি পরিবহন মন্ত্রী ডঃ পঞ্জক কুমার সিং সচিবালয়ে পরিবহন বিভাগের একটি বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন, যেখানে প্রস্তাবিত বিকিউএস-এর নকশা উপস্থাপন করা হয়। এই বৈঠকে তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন যে, তারা দ্রুত এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করবেন এবং কাজে কোনো বিলম্ব হবে না।

আন্তর্জাতিক শহর থেকে অনুপ্রেরণা

নতুন দিল্লিতে প্রস্তাবিত এই বাস স্ট্যান্সগুলো শুধুমাত্র নাম sake ওয়ার্ল্ড ক্লাস হবে না, বরং এখানে ব্যবহৃত প্রযুক্তি, নকশা এবং সুবিধাগুলো সত্যিই আন্তর্জাতিক মানের হবে। পরিবহন মন্ত্রীর মতে, এই বাস স্ট্যান্সগুলোর নকশা তৈরি করার আগে দিল্লি एनसीআর, বেঙ্গালুরু, নিউ মুম্বাই, সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও চীনের শহরগুলোতে বিদ্যমান মডেলগুলোর গভীরভাবে अध्ययन করা হয়েছে। এই অধ্যয়নের ভিত্তিতে নকশাটিকে ভারতীয় পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতি রেখে উপযোগী করে তোলা হয়েছে।

ডিজিটাল ভারতের ছোঁয়া

এই বিকিউএসগুলোতে ডিজিটাল ডিসপ্লে স্ক্রিন স্থাপন করা হবে, যেখানে যাত্রীরা আসা বাসের রুটের নম্বর, সময় এবং দিক সম্পর্কে এলইডি ডিসপ্লের মাধ্যমে তথ্য জানতে পারবে। এর ফলে যাত্রীদের সুবিধা হবে, সেইসঙ্গে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় যে অসুবিধাগুলো হতো, তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। যাত্রীরা এখন বাসের তথ্য জানার জন্য জিজ্ঞাসা করার পরিবর্তে সরাসরি স্ক্রিনে সমস্ত তথ্য দেখতে সক্ষম হবেন।

পুরনো বাস স্টপ সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত

বর্তমানে দিল্লিতে মোট ৪৬২৭টি अधिसूचित বিকিউএস লোকেশন রয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ২০২1টিতে বাস স্টপ চালু আছে। বাকি স্থানগুলোতে বাস স্টপ নেই অথবা সেগুলো খুবই জীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সরকার এই পুরনো ও খারাপ বাস স্টপগুলো ধাপে ধাপে সরিয়ে সেগুলোর জায়গায় নতুন এবং টেকসই স্টেইনলেস স্টিলের বাস স্টপ স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছে। স্টেইনলেস স্টিলের ব্যবহার এই বিকিউএসগুলোকে শুধু শক্তিশালীই করবে না, বরং তাদের স্থায়িত্বও বৃদ্ধি করবে।

1397 নতুন বিকিউএস নির্মাণের প্রস্তাব

পরিবহন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে 1397টি নতুন বাস স্টপ তৈরি করা হবে। এছাড়াও, ভবিষ্যতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে 1459টি অতিরিক্ত স্থানের চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে পরবর্তীতে আরও বাস স্টপ তৈরি করা যেতে পারে। এর ফলে আগামী কয়েক বছরে দিল্লিতে মোট প্রায় ২৮০০-এর বেশি নতুন বাস স্ট্যান্স যাত্রীসেবার সাথে যুক্ত হতে পারে।

যাত্রীদের সুবিধা প্রাধান্য

এই বাস স্ট্যান্সগুলোতে যাত্রীদের বসার জন্য আরামদায়ক আসন, বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে ছাউনি, রাতের বেলায় দেখার জন্য এলইডি লাইট এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়াও, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাস স্টপে সিসিটিভি ক্যামেরা ও নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হবে, যাতে নারী ও বয়স্ক যাত্রীরা নিরাপদে থাকতে পারেন।

স্থানীয় ও গ্রামীণ এলাকাও উপকৃত হবে

দিল্লি সরকারের এই পরিকল্পনা শুধুমাত্র শহরতলির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এই পরিকল্পনার অধীনে দিল্লির গ্রামীণ ও अर्धশहरी এলাকাগুলোতেও আধুনিক বিকিউএস স্থাপন করা হবে। এর ফলে এই অঞ্চলের কোটি কোটি নাগরিক উন্নত পরিবহন সুবিধা ভোগ করতে পারবে এবং তাদের যাতায়গে সুবিধা হবে।

স্থানীয় নাগরিকদের অংশগ্রহণ

এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে স্থানীয় নাগরিক ও निकायों অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। সরকার একটি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে, যেখানে চূড়ান্ত নকশা নির্বাচন করা হবে। এক্ষেত্রে স্থপতি, নগর পরিকল্পনাবিদ এবং সাধারণ নাগরিকরাও অংশ নিতে পারবেন। এর মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা হবে যে নকশাটি শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত দিক থেকে নয়, বরং সামাজিক দিক থেকেও উপযুক্ত।

প্রকল্পের পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়নের প্রস্তুতি

চূড়ান্ত নকশা সম্পন্ন হওয়ার পর, এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন তিনটি প্রধান ধাপে করা হবে। প্রথম ধাপটি নির্মাণ কাজ, যেখানে নতুন বিকিউএস তৈরি করা হবে। দ্বিতীয় ধাপটি হলো পরিচালনা, যেখানে এই বাস স্ট্যান্সগুলো যাত্রীদের জন্য চালু করা হবে। এবং তৃতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হলো রক্ষণাবেক্ষণ, যেখানে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা, মেরামত ও প্রযুক্তিগত তত্ত্বাবধান করা হবে।

পরিবহন অবকাঠামায় নতুন দিগন্ত

এই প্রকল্প থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে দিল্লি সরকার গণপরিবহনকে নিয়ে কতটা সিরিয়াস। স্মার্ট ও সুগম দিল্লি-এর ধারণা तभी সম্পূর্ণ হবে যখন রাজধানীর নাগরিকদের জন্য উন্নত, নিরাপদ ও আধুনিক পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে। এই ওয়ার্ল্ড ক্লাস বিকিউএসগুলো শুধু রাজধানীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে না, সেইসঙ্গে হাজার হাজার যাত্রীর জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে।

Leave a comment