আমেরিকায় আজ রাষ্ট্রপতি পদে ভোটগ্রহণ চলছে, যেখানে কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু জানেন কি আপনি যে আমেরিকায় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ভোটগ্রহণ কেন সর্বদা মঙ্গলবারই হয়?
US President Election: আমেরিকায় আজ সকাল ৭টা থেকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই নির্বাচনে উপরাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিস এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কান্ডার টক্কর দেখা যাচ্ছে। বিশেষ ব্যাপার হলো, আমেরিকায় প্রতি বছর নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবারেই কেন নির্বাচন হয়? আসলে, নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরবর্তী প্রথম মঙ্গলবার ভোটগ্রহণের ঐতিহ্য প্রায় ১৮০ বছরের পুরনো।
নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবারের গুরুত্ব
আমেরিকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মাত্র একদিন ভোটগ্রহণ করা হয়, যা প্রতি চার বছর অন্তর নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবারে হয়। এই ঐতিহ্য প্রায় ১৮০ বছরের পুরনো এবং এর পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
আমেরিকান সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবারে হওয়ার কথা। এই নিয়ম তখন থেকেই প্রযোজ্য যখন রাজ্যগুলিকে ভোটগ্রহণের জন্য ৩৪ দিন সময় দেওয়া হতো এবং তাদের ডিসেম্বরের প্রথম বুধবারের আগেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে হতো। কিন্তু এই ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।
নির্বাচনী প্রণালীর ইতিহাস
আমেরিকার নির্বাচনী প্রক্রিয়া ভারতের মতো কেন্দ্রীভূত নয়। ফেডারেল নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী প্রক্রিয়ার তদারকি করে, কিন্তু প্রতিটি রাজ্যই নিজ নিজ নির্বাচনী নিয়ম নির্ধারণ করে। ফলে ভোটগ্রহণ ও ভোট গণনার প্রক্রিয়া দেশের বিভিন্ন অংশে ভিন্ন ভিন্ন। তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তারিখ সকল রাজ্যে একই থাকে।
১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমেরিকার প্রতিটি রাজ্যে নির্বাচন আলাদা আলাদা দিনে হতো। ১৮৪৫ সালে আমেরিকান কংগ্রেস একটি আইন পাশ করে, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয় এবং বলা হয় যে এটি 'নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরবর্তী মঙ্গলবারে' হবে।
নির্বাচনের দিন: মঙ্গলবারের নির্বাচন
মঙ্গলবারে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্তের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সেই সময় আমেরিকা একটি নবজাত রাষ্ট্র ছিল এবং অধিকাংশ জনসংখ্যা কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল ছিল। নভেম্বর মাস বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এটি বসন্তের ব্যস্ত বীজ বপনের মৌসুম বা শরৎকালীন ফসলের মৌসুমের মধ্যে পড়ে না।
কৃষকদের ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হতো এবং এই কারণে ভোটদানে একদিন সময় লাগত। রবিবারে নির্বাচন করা যায়নি কারণ খ্রিস্টানরা সেদিন গির্জায় যেতেন, আর বুধবারে বাজার বসত। তাই সব দিক বিবেচনা করে নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবারে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
```