আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিসের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে, এবং এই নির্বাচন বেশ কিছু রাজ্যে অত্যন্ত কাছাকাছি বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ট্রাম্প এবং হ্যারিসের সমর্থনের মধ্যে পার্থক্য মাত্র কয়েক শতাংশ। কিছু সুইং স্টেট, যেমন পেনসিলভেনিয়া, উইসকনসিন এবং মিশিগান, ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে।
ওয়াশিংটন: আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার ঠিক আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিস গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটগুলিতে তাদের চূড়ান্ত প্রচারাভিযান তীব্র করেছেন। উভয় প্রার্থীই বিশেষ করে পেনসিলভেনিয়ার দিকে নজর দিয়েছেন, যা এইবারও নির্ণায়ক হতে পারে। পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান এবং উত্তর ক্যারোলিনার মতো রাজ্যগুলিতে ট্রাম্প বেশ কয়েকটি জনসভা করেছেন। সোমবার ট্রাম্প মোট চারটি জনসভা করেছেন, যার মধ্যে দুটি পেনসিলভেনিয়ায়, একটি উত্তর ক্যারোলিনায় এবং একটি মিশিগানে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কমলা হ্যারিসও ফিলাডেলফিয়ায় একটি বৃহৎ জনসভা করেছেন, যেখানে লেডি গাগা, ওপরা উইনফ্রি এবং রিকি মার্টিনের মতো জনপ্রিয় শিল্পীরাও অংশগ্রহণ করেছেন, যা জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। “প্রেসিডেন্ট ফর অল” ব্যানারের আওতায় এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন সম্প্রদায়কে একত্রিত করা।
সমীক্ষায় এই নির্বাচনকে কাছাকাছি প্রতিযোগিতা হিসেবে দেখানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুইং স্টেটগুলিতে সামান্য পরিবর্তনও ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে, যা এই নির্বাচনকে অত্যন্ত রোমাঞ্চকর এবং অনিশ্চিত করে তুলেছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী কে এগিয়ে?
আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিসের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। অধিকাংশ সমীক্ষা থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে উভয় প্রার্থীর মধ্যে মাত্র সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
* এবিসি নিউজের সমীক্ষায় কমলা হ্যারিস ৪৮% সমর্থন নিয়ে ১ শতাংশ পয়েন্টের সামান্য লিড পেয়েছেন, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৬.৯% সমর্থন পেয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
* এনবিসি নিউজ এবং এমারসন কলেজের মতে, উভয় প্রার্থীই ৪৯% সমর্থন নিয়ে সমান।
* ইপ্সোসের পোলে হ্যারিস ৪৯% এবং ট্রাম্প ৪৬% সমর্থন পেয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা হ্যারিসকে তিন পয়েন্টের লিড দেখাচ্ছে।
* ইটারলইন্টেলের সমীক্ষায় ট্রাম্প ৫০% সমর্থন নিয়ে দুই পয়েন্টের লিড পেয়েছেন, যখন হ্যারিস ৪৮% সমর্থন পেয়েছেন।
আজ হবে কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাগ্য নির্ধারণ
আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটাররা সরাসরি রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থীর জন্য ভোট দেন না; তারা একটি ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থার অধীনে ভোট দেন। এই ব্যবস্থায়, ভোটাররা তাদের রাজ্যের "ইলেক্টর"দের নির্বাচন করেন, যারা তাদের নির্বাচিত প্রার্থীর সমর্থন করেন। ইলেক্টোরাল কলেজে মোট ৫৩৮ ভোট থাকে, যার মধ্যে কোনও প্রার্থীকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ২৭০ ভোট পেতে হয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে।
প্রতিটি রাজ্যে ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা ভিন্ন এবং এটি রাজ্যের জনসংখ্যার উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ক্যালিফোর্নিয়ার ৫৫ ইলেক্টোরাল ভোট আছে, যখন ছোট রাজ্য যেমন আলাস্কার মাত্র ৩ ইলেক্টোরাল ভোট আছে। অধিকাংশ রাজ্যে একটি "উইনার-টেক্স-অল" সিস্টেম প্রযোজ্য, যেখানে রাজ্যের জনপ্রিয় ভোটে বিজয়ী প্রার্থী সকল ইলেক্টোরাল ভোট পান।
এই ব্যবস্থার কারণে, যদি কোনও প্রার্থী জাতীয় স্তরে কম জনপ্রিয় ভোট পেয়ে থাকেন, তবুও তারা গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটগুলিতে (যেখানে নির্বাচনের ফলাফল অনিশ্চিত থাকে) জয়ী হয়ে রাষ্ট্রপতি হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারি ক্লিন্টন এর চেয়ে কম জাতীয় জনপ্রিয় ভোট পেয়েও ইলেক্টোরাল কলেজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিজয়ী হয়েছিলেন।
