উদয়পুর রাজপরিবারের সদস্য অরবিন্দ সিং মেওয়ার (৮০) এর মৃত্যু হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এবং সিটি প্যালেসে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি মহারাণা প্রতাপের বংশধর ছিলেন।
রাজস্থান: উদয়পুরের প্রাক্তন রাজপরিবারের সদস্য এবং মহারাণা প্রতাপের বংশধর অরবিন্দ সিং মেওয়ার (৮০) রবিবার মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এবং সিটি প্যালেসের শম্ভু নিবাসে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার মৃত্যুতে মেওয়ার রাজপরিবার এবং সমগ্র উদয়পুরে শোকের ছায়া নেমেছে।
রাজপরিবারের ঐতিহ্যের রক্ষক
অরবিন্দ সিং মেওয়ার মহারাণা প্রতাপের বংশধর ছিলেন। তার পিতা ভগবত সিং মেওয়ার এবং মাতা সুশীলা কুমারী মেওয়ার। তিনি উদয়পুর রাজপরিবারের অনেক ঐতিহাসিক সম্পত্তির রক্ষকও ছিলেন। তার বড় ভাই মহেন্দ্র সিং মেওয়ারের মৃত্যু গত বছর ১০ নভেম্বর ২০২৪ সালে হয়েছিল।
সিটি প্যালেস পর্যটকদের জন্য বন্ধ
অরবিন্দ সিং মেওয়ারের মৃত্যুর পর সিটি প্যালেস সাধারণ পর্যটকদের জন্য অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিটি প্যালেসের বাইরে নিরাপত্তা রক্ষীরা মোতায়েন করা হয়েছে, যারা দর্শনার্থীদের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানাচ্ছেন।
পরিবারের সম্পত্তির রক্ষক ছিলেন অরবিন্দ সিং
প্রাক্তন মহারাণা ভগবত সিং ১৯৬৩ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে প্রাক্তন রাজপরিবারের অনেক সম্পত্তি লিজ দিয়েছিলেন, যার সাথে তার বড় ছেলে মহেন্দ্র সিং মেওয়ার একমত ছিলেন না এবং তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। মহেন্দ্র সিং চেয়েছিলেন 'রুল অফ প্রাইমোজেনিচার' (যার অধীনে পরিবারের বড় ছেলে রাজা হতেন) নিরসন করে সম্পত্তির সমানভাবে বন্টন করা হোক।
ভগবত সিং এই বিষয়ে আদালতে জবাব দিয়ে সম্পত্তিগুলিকে 'ইম্পোর্টেবল এস্টেট' অর্থাৎ অবিভাজ্য ঘোষণা করেছিলেন এবং ১৫ মে ১৯৮৪ সালে তার ইচ্ছানুসারে ছোট ছেলে অরবিন্দ সিং মেওয়ারকে সম্পত্তির নির্বাহী নিযুক্ত করেছিলেন।
ডেস্টিনেশন ওয়েডিং জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
অরবিন্দ সিং মেওয়ার উদয়পুরকে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের কেন্দ্রবিন্দু করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার পুত্র লক্ষ্যরাজ সিং মেওয়ারের মতে, ১৯৮০-এর দশকে যখন অরবিন্দ সিং ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন, তখন মানুষ তা মজার ব্যাপার বলে মনে করত। কিন্তু আজ উদয়পুর বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ডেস্টিনেশন ওয়েডিং স্থানে পরিণত হয়েছে।
সোমবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
অরবিন্দ সিং মেওয়ারের মরদেহের শেষকৃত্য সোমবার সকাল ৭ টা থেকে সিটি প্যালেসে দেখা যাবে। তার শেষযাত্রা সকাল ১১ টায় শম্ভু প্যালেস থেকে শুরু হয়ে বড় পোল, জগদীশ চৌক, ঘন্টাঘর, বড় বাজার, দেহলী গেট হয়ে মহাসতীয়া পৌঁছে যাবে, যেখানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে।