তেজ প্রতাপের ‘জয়চন্দ্‌’ বিতর্ক: বিহার রাজনীতিতে তীব্র টানাপড়েন

তেজ প্রতাপের ‘জয়চন্দ্‌’ বিতর্ক: বিহার রাজনীতিতে তীব্র টানাপড়েন
সর্বশেষ আপডেট: 02-06-2025

তেজ প্রতাপ যাদবের ‘জয়চন্দ্‌’ বিতর্ক বিহারের রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বিজেপি, জেডিইউ এবং আরজেডি নেতাদের মধ্যে অভিযোগ-প্রত্যভিযোগের ধারা অব্যাহত রয়েছে। তেজ প্রতাপ দলের ভেতরে ‘জয়চন্দ্‌’ থাকার কথা বলেছিলেন।

বিহার রাজনীতি: বিহারের রাজনীতিতে এই দিনগুলিতে একটি শব্দ বারবার আলোচনায় রয়েছে: ‘জয়চন্দ্‌’। এই শব্দকে ঘিরেই রাজনৈতিক বিতর্ক এবং অভিযোগ-প্রত্যভিযোগের নতুন ধারা শুরু হয়েছে। আরজেডি নেতা তেজ প্রতাপ যাদবের সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলি এই বিষয়টিকে আরও উস্কে দিয়েছে। বিজেপি, জেডিইউ এবং আরজেডির মধ্যে অভিযোগের ধারা চলছে, যার ফলে বিহারের রাজনীতিতে নতুন মোড় এসেছে।

তেজ প্রতাপ যাদবের বড় অভিযোগ: দলের ভেতরেও আছে ‘জয়চন্দ্‌’

তেজ প্রতাপ যাদব তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে দলের কিছু নেতাদের উপর ‘জয়চন্দ্‌’ হওয়ার অভিযোগ এনেছেন। তিনি লিখেছেন যে, তার ভাই তেজস্বী যাদবকে তাঁর থেকে আলাদা করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তেজ প্রতাপ বলেছেন, “আমার অর্জুনকে আমার থেকে আলাদা করার স্বপ্ন দেখা ওরা, তোমরা কখনো তোমাদের ষড়যন্ত্রে সফল হতে পারবে না।” তিনি এও বলেছেন যে, ‘জয়চন্দ্‌’ সর্বত্রই আছে, দলের ভেতরেও এবং বাইরেও।

তেজ প্রতাপ তার বাবা-মা লালু যাদব এবং রাবড়ী দেবীকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন যে, তাঁরাই তাঁর আসল পরিবার। তিনি লিখেছেন যে, কিছু লোভী মানুষ তাঁর বাবা-মা এবং দলের মধ্যে ফাটল ফেলার চেষ্টা করছে। তাঁর এই বক্তব্য দলের ভেতরে চলমান অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনের দিকে ইঙ্গিত করে।

বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে: বিহারের আসল ‘জয়চন্দ্‌’ কে?

তেজ প্রতাপের ‘জয়চন্দ্‌’ বক্তব্যের পর বিজেপি এই বিষয়টিকে আঁকড়ে ধরেছে। বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টার প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছে যে, বিহারের আসল ‘জয়চন্দ্‌’ কে? রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরী বলেছেন যে, জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং কারপূরী ঠাকুরের আদর্শের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে কংগ্রেসের কোলে বসে থাকাই আসল ‘জয়চন্দ্‌’। তিনি লালু যাদবের নাম না নিয়ে তাঁর উপর লক্ষ্য করেছেন।

বিজেপি সরাসরি এই প্রশ্ন তুলেছে যে, বিহারের ধ্বংসের জন্য দায়ী নেতাই কি আসল ‘জয়চন্দ্‌’? বিজেপির পোস্টার এবং নেতাদের বক্তব্য এই বিতর্ককে আরও তীব্র করে তুলেছে।

জেডিইউও আক্রমণ করেছে

জেডিইউও এই পুরো বিতর্কে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। দল তাদের আনুষ্ঠানিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে লিখেছে যে, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতাদের প্রতারণা করে কংগ্রেসের সাথে মিলে বিহারকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া আসল ‘জয়চন্দ্‌’ কে চেনেনা এমন কে আছে? জেডিইউর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, তারাও এই বিষয়টিকে উস্কে দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।

তেজ প্রতাপ যাদব বনাম সঞ্জয় যাদব: আরজেডিতে অভ্যন্তরীণ সংঘাত?

বিহারের রাজনীতির जानकार মনে করেন যে, তেজ প্রতাপ যাদবের ইঙ্গিত আরজেডির রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় যাদবের দিকে। তেজ প্রতাপ এবং সঞ্জয় যাদবের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপড়েনের খবর আসছে। সঞ্জয় যাদবকে তেজস্বী যাদবের খুব কাছের মানুষ বলে মনে করা হয়। এই পরিস্থিতিতে তেজ প্রতাপের বারবার ‘জয়চন্দ্‌’ শব্দ ব্যবহার করা কোথাও না কোথাও এই অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনের দিকে ইঙ্গিত করে।

তেজ প্রতাপ যাদবের বহিষ্কার: নতুন বিতর্ক

উল্লেখযোগ্য যে, তেজ প্রতাপ যাদবকে সম্প্রতি আরজেডি থেকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর কারণ তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের সাথে জড়িত বিতর্ক, যেখানে তিনি অনুষ্কা যাদবের সাথে তাঁর कथিত সম্পর্কের কথা প্রকাশ করেছিলেন। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দুল বারী সিদ্দিকী তাঁর বহিষ্কারের পত্র জারি করেছিলেন। লালু যাদব এটিকে সামাজিক এবং পারিবারিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে বলেছিলেন।

জিতেন্দ্র মাঁঝির তীব্র আক্রমণ

এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র মাঁঝিও তাঁর মতামত দিয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন যে, বিহারে দলিত, পিছিয়ে পড়া এবং বঞ্চিতদের হত্যা করা আসল ‘জয়চন্দ্‌’ কে ছিল তা সকলেই জানে। তিনি বলেছেন যে, সেই সময় বিহারের ক্ষমতার শীর্ষে থাকা এবং বিহারকে জঙ্গলরাজে ঠেলে দেওয়া লোকদের সকলেই চিনেন।

Leave a comment