টিসিএস কর্মীর আত্মহত্যা: স্ত্রীর উসকানিতে? বোনের অভিযোগে নতুন মোড়

উত্তর প্রদেশের আগ্রায় অবস্থিত টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS)-এর ম্যানেজার মানব শর্মার আত্মহত্যার ঘটনা এখন নতুন মোড়ে পৌঁছেছে। সম্প্রতি তাঁর বোন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছেন, যার ফলে এই ঘটনার পেছনে সম্ভাব্য কারণগুলি সামনে আসছে।

বোন ফোন থেকে রহস্য উন্মোচন করলেন

মানব শর্মার বোন জানিয়েছেন, প্রথমদিকে পরিবার মনে করেছিল তাঁর ভাই আবেগের বশে এই পদক্ষেপটি নিয়েছেন। কিন্তু যখন তিনি মানবের ফোন চেক করেন, তখন কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। বোনের মতে, "আমরা জানতে পারি যে তাকে উসকে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর স্ত্রী তাকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিল যে সে সহজে তালাক মেনে নেবে না। সে মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত ছিল।"

ঘটনাটি কী?

৩০ বছর বয়সী মানব শর্মা মুম্বইয়ের একটি IT ফার্মে ম্যানেজার ছিলেন এবং আগ্রার ডিফেন্স কলোনির বাসিন্দা ছিলেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি নিজের বাড়িতে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবার জানিয়েছে, আত্মহত্যার আগে মানব একটি ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন, যেখানে তিনি তার স্ত্রীকে এর জন্য দায়ী করেছেন। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যার ফলে ঘটনাটি আরও বেশি প্রকাশ্যে এসেছে।

পুলিশ FIR দায়ের করেছে

মানবের পিতা নরেন্দ্র শর্মার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, ২৩ ফেব্রুয়ারি মানব এবং তার স্ত্রী নিকেতা আগ্রায় এসেছিলেন। মানব তার স্ত্রীর সাথে তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন, যেখানে বলে তাঁর অপমান করা হয়েছিল। এরপর তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন এবং পরের দিন আত্মহত্যা করেন।

সদর থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার (ACP) বিনয়ক ভোঁসলে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ধারা ৩০৬ (আত্মহত্যার জন্য প্ররোচনা) অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পুলিশ এখন মোবাইল ফোন পরীক্ষা করছে যাতে জানা যায় মানবকে অন্য কোনও ধরণের মানসিক নির্যাতন দেওয়া হয়েছিল কিনা।

পরিবারের আবেদন

মানবের বোন পুলিশের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের আবেদন জানিয়ে বলেছেন, "আমরা চাই না আমাদের মতো আর কেউ তাদের প্রিয়জনকে এভাবে হারাক।" তিনি সকলের কাছে অনুরোধ করেছেন, যদি কারও উপর মানসিক চাপ দেওয়া হচ্ছে, তাহলে তিনি দ্রুত পরিবার বা বন্ধুদের সাথে কথা বলুন। পুলিশ এখন এই ঘটনার সাথে জড়িত সকল দিক তদন্ত করছে। নিকেতা এবং তার পরিবারের সাথেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিও প্রমাণ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের দাবি, এই ঘটনার সকল দিক থেকে তদন্ত করা হবে, যাতে সত্যিটা সামনে আসে।