সুপ্রিম কোর্ট মুসলিম যুবককে জামিন দিলেন, যিনি হিন্দু কিশোরীর সাথে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে করেছেন। কোর্ট বলেছে, প্রাপ্তবয়স্ক দম্পতিকে একসাথে থাকা থেকে বিরত রাখা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্ট: উত্তরাখণ্ডের আমান সিদ্দিকী, অর্থাৎ আমান চৌধুরীকে একজন হিন্দু কিশোরীর সাথে বিয়ে করার অভিযোগে গত ছয় মাস ধরে জেলে রাখা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, সে তার ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করেছে। কিন্তু এখন সুপ্রিম কোর্ট এই পুরো বিষয়ে অত্যন্ত স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে।
বিয়েতে উভয় পরিবারের সম্মতি ছিল
আমান সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী কোর্টে জানিয়েছেন যে তাদের বিয়ে পারিবারিক সম্মতিতে হয়েছিল। এটি কোনও 'লাভ জিহাদ'-এর ঘটনা ছিল না, বরং একটি ঐতিহ্যগত আয়োজনকৃত বিয়ে ছিল। উভয়ই প্রাপ্তবয়স্ক এবং নিজের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিয়েছে। বিয়ের পর আমান এও শপথপত্র দিয়েছেন যে তিনি তার স্ত্রীর উপর ধর্ম পরিবর্তনের কোনও চাপ প্রয়োগ করেননি।
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষোভ
শুনানির সময় বিচারপতি বি. ভি. নাগরত্ন ও বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ উত্তরাখণ্ড সরকারকে তিরস্কার করেছে। কোর্ট বলেছে, রাজ্যের এই দম্পতিকে একসাথে থাকার কোনও আপত্তি থাকা উচিত নয়। উভয়েই প্রাপ্তবয়স্ক এবং একসাথে থাকার জন্য স্বাধীন।
কোর্ট এও বলেছে যে, আপরাধমূলক কার্যক্রমের এই দম্পতির একসাথে থাকার অধিকারের উপর কোনও প্রভাব পড়া উচিত নয়। এই মন্তব্যের সাথে সাথে সুপ্রিম কোর্ট আমান সিদ্দিকীকে অবিলম্বে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
উত্তরাখণ্ড ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের ভুল ব্যবহার?
আমানকে উত্তরাখণ্ড ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন, ২০০৮ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধি, ২০২৩ অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, সে তার মুসলিম পরিচয় গোপন করে হিন্দু রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ে করেছে এবং এটি "প্রতারণা" ছিল। তবে কোর্ট এই দাবিতে কোনও স্পষ্ট প্রমাণ পায়নি। আইনজীবী এও জানিয়েছেন যে বিয়ের দিনই আমান এফিডেভিট দিয়েছিলেন যেখানে স্পষ্ট করে বলা ছিল যে কোনও ধরনের চাপ বা মিথ্যাচার ছিল না।
আবেদনকারীর যুক্তি
সুপ্রিম কোর্টে আমানের আইনজীবী জানিয়েছেন যে, এই ঘটনায় কিছু সংগঠন ও স্থানীয় লোকজন অযথা আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি জামিন দেওয়া হয়, তাহলে এই দম্পতি তাদের পরিবার থেকে আলাদা থাকবে এবং শান্তিতে জীবনযাপন করবে।