পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সোমবার সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে বড় স্বস্তি দিয়েছে। আদালত কলকাতা হাইকোর্টের ওই আদেশ বাতিল করে দিয়েছে, যেখানে দোষী প্রার্থীদের সমন্বয় করার জন্য রাজ্য সরকার কর্তৃক তৈরি অতিরিক্ত পদগুলির (supernumerary posts) সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় মমতা সরকারের জন্য বড় স্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের সেই আদেশ খারিজ করে দিয়েছে, যেখানে রাজ্য সরকারকে শিক্ষক নিয়োগে অতিরিক্ত পদ বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই রায় মমতা সরকারের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ এতে সরকারের উপর নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তৈরি অতিরিক্ত দায়িত্ব এখনকার জন্য ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মীর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল, যার তদন্ত এখনও সিবিআই করছে।
হাইকোর্টের আদেশে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা
কলকাতা হাইকোর্ট আগে নির্দেশ দিয়েছিল যে, সরকার যে অতিরিক্ত পদ তৈরি করেছে সেটি সন্দেহজনক এবং তাই এর সিবিআই তদন্ত করা উচিত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশকে “সীমিত দায়িত্বে অনুচিত” বলে উল্লেখ করে বলেছে যে, অতিরিক্ত পদ তৈরির তদন্তের নির্দেশ এই পর্যায়ে যুক্তিসঙ্গত নয়।
শীর্ষ আদালত এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই রায় শুধুমাত্র অতিরিক্ত পদ সংক্রান্ত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পুরো তদন্তের সিবিআই তদন্তের উপর নয়। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে বলেছে যে, “সিবিআই-এর বর্তমান তদন্ত, চার্জশিট দাখিল বা অন্যান্য দিকের আইনি প্রক্রিয়ার উপর এই রায়ের কোন প্রভাব পড়বে না।”
এখন পর্যন্ত ঘটনাক্রম
- ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল পরিষেবা কমিশন (WBSSC) ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও কর্মীর নিয়োগ করেছিল।
- এই নিয়োগ প্রক্রিয়া পরে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের জেরে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।
- কলকাতা হাইকোর্ট তাকে ত্রুটিপূর্ণ বলে ঘোষণা করে সব নিয়োগ অকার্যকর করে দেয় এবং সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
- দোষী নিয়োগের সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার অতিরিক্ত পদ তৈরি করে, যাকে হাইকোর্ট সন্দেহের আওতায় ধরে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
মমতা সরকার কেন স্বস্তি পেল?
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে, অতিরিক্ত পদ তৈরি একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, যাকে তদন্তের আওতায় আনা ন্যায়সঙ্গত নয়। সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে সম্মতি জানিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দেয়, যার ফলে মমতা সরকার কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।