সাংসদ সা্কেত গোখলে লক্ষ্মী পুরীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা

সাংসদ সা্কেত গোখলে লক্ষ্মী পুরীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
সর্বশেষ আপডেট: 10-06-2025

টিএমসি সাংসদ সা্কেত গোখলে লক্ষ্মী পুরীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডের সম্পত্তি সম্পর্কে ভুল অভিযোগ করেছিলেন। দিল্লি হাইকোর্ট মানহানির জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়েছে।

Saket Gokhale: তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)-এর সাংসদ সা্কেত গোখলে প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত লক্ষ্মী পুরীর কাছে জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন। এই ক্ষমা প্রার্থনা ২০২১ সালে তাঁর করা টুইটগুলির জন্য, যেখানে তিনি লক্ষ্মী পুরী এবং তাঁর স্বামী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর উপর সুইজারল্যান্ডে সম্পত্তি কেনার বিষয়ে ভুল এবং প্রমাণহীন অভিযোগ করেছিলেন। দিল্লি হাইকোর্ট এই মামলায় সা্কেত গোখলেকে মানহানির দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়েছে।

পুরো ঘটনা কী?

২০২১ সালে টিএমসি সাংসদ সা্কেত গোখলে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল X-এ কিছু পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব লক্ষ্মী পুরীর উপর গুরুতর অভিযোগ আনেন। এই পোস্টগুলিতে গোখলে দাবি করেছিলেন যে লক্ষ্মী পুরী এবং তাঁর স্বামী হরদীপ সিং পুরী সুইজারল্যান্ডে একটি ব্যয়বহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন এবং এর ক্রয়ে অবৈধ পন্থা ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তিনি প্রবর্তন অধিকর্ত (ED)-এর কাছে এই বিষয়ে তদন্তের দাবিও জানিয়েছিলেন।

লক্ষ্মী পুরী এই অভিযোগগুলিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে করা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি সা্কেত গোখলের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন। আদালত এই মামলার শুনানি করে জুলাই ২০২৪ সালে গোখলেকে মানহানির দোষী সাব্যস্ত করে।

আদালত কী রায় দিয়েছে?

দিল্লি হাইকোর্ট সা্কেত গোখলের টুইটগুলিকে লক্ষ্মী পুরীর সুনামের জন্য ক্ষতিকারক বলে মনে করেছে। আদালত তাঁদের রায়ে গোখলেকে বেশ কিছু কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে:

  • লক্ষ্মী পুরীকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
  • জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে, এবং এই ক্ষমা প্রার্থনার বার্তাটি তাঁর X হ্যান্ডেলে ৬ মাস ধরে পিন করে রাখতে হবে।
  • একটি জাতীয় সংবাদপত্রে ক্ষমা প্রার্থনার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হবে।
  • ভবিষ্যতে লক্ষ্মী পুরীর বিরুদ্ধে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া বা ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মে আপত্তিকর বিষয়বস্তু পোস্ট করার উপর নিষেধাজ্ঞা।
  • আদালতের এই রায় স্পষ্ট করে যে প্রমাণ ছাড়া কারও সুনামের উপর প্রশ্ন তোলা গুরুতর পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

সা্কেত গোখলের ক্ষমা প্রার্থনা

আদালতের রায়ের পর সা্কেত গোখলে লক্ষ্মী পুরীর কাছে জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি ১৩ এবং ২৩ জুন ২০২১-এ লক্ষ্মী পুরীর বিরুদ্ধে করা আমার টুইটগুলির জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি। এই টুইটগুলিতে বিদেশে তাঁর সম্পত্তি কেনার বিষয়ে ভুল এবং অপ্রমাণিত অভিযোগ করা হয়েছিল, যার জন্য আমি এখন গভীর দুঃখিত।”

তিনি এটাও স্বীকার করেছেন যে তাঁর টুইটগুলি লক্ষ্মী পুরীর সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে। এই ক্ষমা প্রার্থনা তিনি তাঁর X হ্যান্ডেলে পিন করে রেখেছেন, যেমনটি আদালত নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি, একটি জাতীয় সংবাদপত্রেও ক্ষমা প্রার্থনার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে।

কি সা্কেত গোখলে আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করেছেন?

হ্যাঁ, সা্কেত গোখলে দিল্লি হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি আদালতে একটি আবেদন দায়ের করেছিলেন, যেখানে তিনি রায় বাতিল করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর গোখলে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ক্ষমা প্রার্থনায় দেরি করেছিলেন, যার ফলে আদালত তাঁর বেতন জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিল।

এই কঠোর ব্যবস্থার পর গোখলে অবশেষে আদালতের নির্দেশ পালন করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এই ঘটনাটি দেখায় যে আদালত প্রমাণ ছাড়া করা অভিযোগগুলিকে কত গুরুত্বের সাথে নেয়।

লক্ষ্মী পুরী কে?

লক্ষ্মী পুরী একজন বিখ্যাত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত, যিনি জাতিসংঘ (UN)-এ সহকারী মহাসচিব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর স্ত্রী। লক্ষ্মী পুরী তাঁর কর্মজীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং তাঁর চরিত্র একজন সম্মানিত এবং পেশাদার ব্যক্তির।

Leave a comment