রামপুরে বুলডোজার অভিযান: ৭০টির অধিক দোকান ভেঙে ফেলা

রামপুরে বুলডোজার অভিযান: ৭০টির অধিক দোকান ভেঙে ফেলা
সর্বশেষ আপডেট: 03-05-2025

রামপুর পৌরপালিকা পরিষদ পুরানো রোডওয়েজ বাস স্ট্যান্ডের কাছে বুলডোজার চালিয়ে এক ডজনের বেশি দোকান ভেঙে দিয়েছে। ইও দুর্গেশ্বর ত্রিপাঠীর নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতায় এই অভিযান চালানো হয়।

রামপুরে বুলডোজার অভিযান: উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায় পৌরপালিকা পরিষদ শনিবার পুরানো রোডওয়েজ বাস স্ট্যান্ডের কাছে বুলডোজার চালিয়ে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে ৭০টির বেশি পাকা দোকান ভেঙে ফেলা হয়, যার ফলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং যানবাহন চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটে। এই ধ্বংসাত্মক অভিযানটি ইও দুর্গেশ্বর ত্রিপাঠীর নেতৃত্বে পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়। পৌরপালিকা আগে থেকেই দোকানগুলিতে লাল চিহ্নিত করে দোকানদারদের খালি করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, যার পরে দোকানদাররা তাদের জিনিসপত্র সরাতে শুরু করেছিল।

রামপুর পৌরপালিকার ব্যাপক অভিযান

এই অভিযান শনিবার সকালে শুরু হয়, যখন পৌরপালিকা পরিষদের কর্মীরা বুলডোজার নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সিভিল লাইন কোতোয়ালি ও পুলিশ বাহিনীও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দোকানগুলির সামনে পুলিশ মোতায়েন করে। এরপর পৌরপালিকার কর্মী ও বুলডোজারের মাধ্যমে অভিযান শুরু হয়।

দুই ঘণ্টার মধ্যেই এক ডজনের বেশি দোকান ধ্বংস করা হয়। এরপর ধ্বংসাবশেষ উঠিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়, যা সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে।

কীভাবে সম্পন্ন হলো পুরো অভিযান?

পৌরপালিকা পরিষদ অবৈধ দখল উচ্ছেদ করার জন্য গত কয়েকদিন ধরে এই অভিযান শুরু করেছিল। আগে থেকেই দোকানগুলিতে লাল চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং দোকানদারদের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। শনিবার ধ্বংসাত্মক অভিযানের সময় দোকানদাররা আগেই তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছিল এবং বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে কিছু দোকানে রাতেও জিনিসপত্র বের করা হচ্ছিল। যখন পৌরপালিকার কর্মীরা বুলডোজার নিয়ে পৌঁছায়, তখন দোকানদারদের কাছে তেমন সময় ছিল না, তবুও তারা তাদের দোকান খালি করে দিয়েছিল।

৭০টির বেশি পাকা দোকান ধ্বংস

এই ধ্বংসাত্মক অভিযান ৬ দিনে চারবার করা হয় এবং এই সময় ৭০টির বেশি পাকা দোকান ভেঙে ফেলা হয়। যেসব এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়, তার মধ্যে পুরানো রোডওয়েজ বাস স্ট্যান্ড, গন্না পরিষদ, মীনা বাজার এবং শিবি টকিজের সামনে অবস্থিত দোকানগুলি উল্লেখযোগ্য। এই সকল দোকানের মালিকদের আগে থেকেই চার ঘণ্টার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল এবং যখন তারা দোকান খালি করতে পারেনি, তখন প্রশাসন বুলডোজার চালিয়ে সেগুলিকে ধ্বংস করে দেয়।

কেন এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো?

এই ধ্বংসাত্মক অভিযানের পেছনে পৌরপালিকা পরিষদের মূল উদ্দেশ্য হলো শহরের মধ্যে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা, রাস্তার প্রস্থ বাড়ানো এবং যানবাহন চলাচল সুগম করা। রামপুর জেলায় গত কয়েক বছরে বেড়ে উঠা অবৈধ দখলের সমস্যা প্রশাসনের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। বিশেষ করে পুরানো রোডওয়েজ বাস স্ট্যান্ডের মতো ব্যস্ত স্থানগুলিতে অবৈধ দোকানের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছিল। এই দোকানগুলির কারণে যানবাহন চলাচলেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল এবং এলাকার সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছিল।

পৌরপালিকা আগে থেকেই দোকানদারদের সতর্ক করেছিল, কিন্তু যখন দোকানদাররা নিয়ম মেনে চলেনি, তখন এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পাশাপাশি এটাও নিশ্চিত করা হয় যে, এই অভিযানের ফলে মানুষের কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পুরো প্রক্রিয়াটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা হয়।

স্থানীয় জনতা ও ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া

এই অভিযানের ফলে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। দোকানদারদের পাশাপাশি রাম রহিম সেতু দিয়ে যাওয়া লোকজনও এই ঘটনা দেখে থেমে যায় এবং কেউ কেউ ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয়। ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান ভেঙে যাওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এবং অনেক দোকানদার ঘরে বসে থাকার অবস্থায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই পদক্ষেপ তাদের জন্য বেশ কষ্টকর, কিন্তু পৌরপালিকার দাবি, এই অভিযান আইনানুগ ও সুশৃঙ্খল শহর গঠনের জন্য জরুরি।

Leave a comment