৩১শে মে পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর, গুজরাট, হরিয়ানা এবং রাজস্থানে ‘অপারেশন শিল্ড’ মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হবে। সুরক্ষা যাচাইয়ের জন্য সাইরেন বাজবে, ব্ল্যাকআউট হবে এবং নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অপারেশন শিল্ড: সরকার ৩১শে মে দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে ব্যাপক পরিসরে একটি মক ড্রিলের ঘোষণা করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন শিল্ড’, যা বিশেষ করে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এই মক ড্রিলের উদ্দেশ্য হল সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং জরুরী পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা পরীক্ষা করা। মক ড্রিল-এ অংশগ্রহণকারী দল, প্রক্রিয়া এবং মানুষের ভূমিকা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যা বুঝে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।
কোথায় কোথায় হবে মক ড্রিল?
‘অপারেশন শিল্ড’ মক ড্রিল দেশের পাঁচটি প্রধান রাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এগুলি হল পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর, গুজরাট, হরিয়ানা এবং রাজস্থান। এই সকল এলাকা পাকিস্তান সীমান্তের সাথে সংলগ্ন এবং এখানে যেকোনো আক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে। এইভাবে ড্রিলের উদ্দেশ্য হল সীমান্তবর্তী এলাকার সুরক্ষা ব্যবস্থার শক্তি পরীক্ষা করা।
কেন হচ্ছে মক ড্রিল?
এই মক ড্রিলের উদ্দেশ্য হল যেকোনো জরুরী পরিস্থিতি, যেমন শত্রুর ড্রোন আক্রমণ, ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ বা সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের পরিস্থিতিতে সুরক্ষা সংস্থাগুলির প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা পরীক্ষা করা। ৭ই মে অনুষ্ঠিত প্রথম ড্রিল-এ কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছিল, যা সংশোধন করার জন্য এই দ্বিতীয় মক ড্রিলের আয়োজন করা হচ্ছে। সরকারের দাবি, এই অনুশীলন দেশের সুরক্ষা আরও উন্নত করার এবং নাগরিকদের সম্ভাব্য বিপদ মোকাবেলায় প্রস্তুত করার জন্য অপরিহার্য।
মক ড্রিল-এ কারা কারা অংশগ্রহণ করবে?
এই মক ড্রিল-এ সিভিল ডিফেন্স ওয়ার্ডেন, পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড, চিকিৎসক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের দলগুলি অংশগ্রহণ করবে। এছাড়াও এনসিসি (ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস), এনএসএস (ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম), এনওয়াইকেএস (নেহরু যুব কেন্দ্র সংগঠন) এবং ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস-এর মতো যুব সংগঠনগুলিও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। সকল দল মিলে মক সিচুয়েশনে সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে রক্ষার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।
মক ড্রিল-এ কী কী হবে?
ড্রিল চলাকালীন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপ হবে। প্রথমত, বিপদের সংকেত দেওয়ার জন্য এয়ার রেড সাইরেন বাজানো হবে। এরপর কিছুক্ষণের জন্য ব্ল্যাকআউট অর্থাৎ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হবে, যাতে বাস্তব পরিস্থিতির অনুশীলন করা যায়। এই সময় জরুরী যোগাযোগ ব্যবস্থার পরীক্ষা করা হবে, যাতে যেকোনো জরুরী পরিস্থিতিতে তথ্য আদান-প্রদান সুষ্ঠুভাবে হতে পারে।
ড্রোন বা বিমান আক্রমণের নকল পরিস্থিতি তৈরি করা হবে এবং ২০ জনকে নিরাপদে বের করে আনার অনুশীলনও করা হবে। এছাড়াও, প্রয়োজন হলে চিকিৎসা জরুরী পরিস্থিতি সামাল দিতে একটি রক্তদান অভিযানও পরিচালনা করা হবে।
মক ড্রিলের তারিখ কেন পরিবর্তন করা হয়েছিল?
প্রথমে এই মক ড্রিলটি ২৯শে মে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রশাসনিক কারণে এটি ৩১শে মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। সম্প্রতি, ২২শে এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল, যাতে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনার পর সরকার সুরক্ষা প্রস্তুতি আরও শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই মক ড্রিলের আয়োজন করা হচ্ছে।