মাদ্রাজ হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে যা বয়োবৃদ্ধদের অধিকারকে আরও শক্তিশালী করেছে।
চেন্নাই: মাদ্রাজ হাইকোর্ট সম্প্রতি বয়োবৃদ্ধদের অধিকারকে শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। আদালত স্পষ্ট করে বলেছে যে, যদি সন্তান বা নিকট আত্মীয় পিতামাতার যত্ন নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে উপহার হিসেবে দেওয়া সম্পত্তি বাতিল করা যেতে পারে। এই রায় পিতামাতা এবং বয়োবৃদ্ধদের সুরক্ষা ও ভরণপোষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া আইনগুলিকে আরও কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে।
সম্পূর্ণ ঘটনা কী?
এই মামলাটি প্রয়াত এস. নাগলক্ষ্মীর সাথে সম্পর্কিত, যিনি তার ছেলে কেশবনের পক্ষে একটি সমঝোতা দলিল করেছিলেন। তিনি তার ছেলে এবং বৌমা কর্তৃক জীবদ্দশায় যত্ন নেওয়ার আশায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে, তার ছেলের মৃত্যুর পর তার বৌমা এস. মালাও তার যথাযথ যত্ন নেননি এবং তাকে উপেক্ষা করেছিলেন।
বার্ধক্যের শেষ পর্যায়ে একাকীত্ব ও উপেক্ষার শিকার নাগলক্ষ্মী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন এবং তারা এই বিষয়ে সংগতি নিয়ে সম্পত্তির হস্তান্তর বাতিল করে দিয়েছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে এস. মালা আদালতে আপিল করেছিলেন, যা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।
হাইকোর্ট কী বলেছে?
মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এস. এম. সুব্রমণ্যম এবং কে. রাজশেখর সমন্বয়ে গঠিত খণ্ডপীঠ তাদের রায়ে বলেছে, "পিতামাতা ও বয়োবৃদ্ধদের ভরণপোষণ ও কল্যাণ আইন, ২০০৭-এর ধারা ২৩(১) সেসব বয়োবৃদ্ধদের সুরক্ষা প্রদান করে যারা তাদের সম্পত্তি ভালোবাসা ও বিশ্বাসে তাদের সন্তান বা আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করেন, কিন্তু বিনিময়ে উপেক্ষার শিকার হন।"
আদালত আরও স্পষ্ট করে বলেছে যে, যদি উপকৃত ব্যক্তি (সন্তান বা আত্মীয়) তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে বয়োবৃদ্ধের সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার পূর্ণ অধিকার আছে।
বয়োবৃদ্ধ আইন ২০০৭-এর ধারা ২৩(১) কী?
এই ধারাটি বয়োবৃদ্ধদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োগ করা হয়েছিল। এর অধীনে, যদি কোন বয়োবৃদ্ধ তার সম্পত্তি উপহার বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করে, তাহলে বিনিময়ে উপকৃত ব্যক্তিকে তাদের যত্ন এবং মৌলিক চাহিদার প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে। যদি যত্ন না নেওয়া হয়, তাহলে বয়োবৃদ্ধরা ন্যায়াধিকরণে গিয়ে সম্পত্তির হস্তান্তর বাতিল করতে পারেন।
এই আইনের উদ্দেশ্য হল বয়োবৃদ্ধদের সুরক্ষা ও মর্যাদা বজায় রাখা। এই রায় সেসব বয়োবৃদ্ধদের জন্য স্বস্তির বার্তা যারা পারিবারিক উপেক্ষার শিকার হচ্ছেন। এটি নিশ্চিত করবে যে, সন্তানরা শুধুমাত্র সম্পত্তির লোভে পিতামাতার সাথে চুক্তি করবে না, বরং তাদের প্রতি তাদের নৈতিক ও আইনি দায়িত্বও পালন করবে।