লস্কর-ই-তৈয়বার ডেপুটি চিফ আবদুল রহমান মক্কি পাকিস্তানের লাহোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মক্কি ২৬/১১ হামলার অপরাধী ছিল এবং সন্ত্রাসে অর্থ যোগানোর সাথে জড়িত ছিল। ২০২০ সালে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছিল।
আব্দুল রহমান মক্কি: জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার ডেপুটি চিফ আবদুল রহমান মক্কি পাকিস্তানের লাহোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মক্কি, যে জঙ্গি হাফিজ সাঈদের আত্মীয় ছিল, ২০২০ সালে সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানোর মামলায় সাজা পেয়েছিল। মক্কির মৃত্যুতে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত দেশগুলোতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২৬/১১ মুম্বাই হামলার অপরাধী
আব্দুল রহমান মক্কিকে আমেরিকা বিশ্ব সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছিল এবং সে ভারতে ওয়ান্টেড ছিল। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মক্কিকে 1267 ISIL এবং আল-কায়েদা নিষেধাজ্ঞা কমিটির অধীনে বিশ্ব সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছিল। মক্কির বিরুদ্ধে অনেক সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ ছিল এবং তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
মক্কির সন্ত্রাসী কার্যক্রম
মক্কি লস্কর-ই-তৈয়বার সন্ত্রাসী তহবিলে এবং নিয়োগের কাজে জড়িত ছিল। এছাড়াও, তিনি লস্করের রাজনৈতিক শাখা জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান ছিলেন। মক্কি লস্করের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধানও ছিলেন এবং পাকিস্তানে তিনি সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানোর সাথে যুক্ত ছিলেন।
লস্করের প্রধান হামলায় মক্কির হাত- মক্কি এবং তার সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা ভারতে অনেক বড় হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে কিছু প্রধান হামলা ছিল:
লাল কেল্লায় হামলা (২০০০)-: লস্কর-ই-তৈয়বার ৬ জন জঙ্গি ২০০০ সালের ২২শে ডিসেম্বর লাল কেল্লার ভিতরে ঢুকে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়, যাতে তিনজন মারা যায়।
রামপুর হামলা (২০০৮)- ১ জানুয়ারি ২০০৮ সালে লস্করের ৫ জন জঙ্গি সিআরপিএফ কনভয়ের ওপর হামলা করে, যাতে ৭ জন সিআরপিএফ জওয়ান ও একজন রিকশাচালক প্রাণ হারান।
২৬/১১ মুম্বাই হামলা (২০০৮)- লস্কর-ই-তৈয়বার ১০ জন জঙ্গি মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে, যাতে ১৭৫ জন লোক মারা যান।
শ্রীনগর হামলা (২০১৮)- ২০১৮ সালের ১২-১৩ ফেব্রুয়ারি লস্করের আত্মঘাতী হামলাকারী শ্রীনগরের কারান নগরের সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলা চালায়, যাতে একজন জওয়ান শহীদ হন।
বারামুলা হামলা (২০১৮)- ২০১৮ সালের ৩০ মে বারামুলায় লস্করের জঙ্গিরা তিনজন নাগরিককে হত্যা করে।
শ্রীনগর হামলা (২০১৮)- ২০১৮ সালের ১৪ জুন লস্করের জঙ্গিরা রাইজিং কাশ্মীরের সম্পাদক সুজাত বুখারি এবং তার দুই নিরাপত্তা রক্ষীকে গুলি করে হত্যা করে।
বান্দিপোরা হামলা (২০১৮)- লস্করের জঙ্গিরা জম্মু ও কাশ্মীরের বান্দিপোরায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে, কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। এই হামলায় চারজন জওয়ান শহীদ হন।
মক্কির গ্রেফতারি
আব্দুল রহমান মক্কিকে পাকিস্তান সরকার ২০১৯ সালের ১৫ই মে গ্রেফতার করে এবং তাকে লাহোরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। ২০২০ সালে পাকিস্তানের আদালত তাকে সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানোর অভিযোগে সাজা দেয়। মক্কির মৃত্যু পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
```
