বিহার থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে একটি স্লিপার বাসে ভয়াবহ আগুন লেগে দুর্ভাগ্যবশত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অনেকে গুরুতর আহত হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসা চলছে।
লখনউ বাস আগুনের দুর্ঘটনা: রবিবার সকালে লখনউয়ে একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে যখন বিহারের বেগুসরাই থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে একটি ব্যক্তিগত স্লিপার বাস (বাস নম্বর UP17 AT 6372)-এ হঠাৎ আগুন লেগে যায়। লখনউ-রায়বরেলি রোডের মোহনলালগঞ্জ এলাকার কৃষক পথে প্রায় সকাল ৫টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আগুনে ৮০ জনের মতো যাত্রীর মধ্যে ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয় এবং অনেকে গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
বাসে আগুন ও দুর্ঘটনার ধারাবাহিকতা
জানা গেছে, শর্ট সার্কিটের কারণে বাসে আগুন লেগেছিল। আগুন লেগে যাওয়ার পরও বাসটি প্রায় এক কিলোমিটার দৌড়েছে। এই সময় চালক ও পরিচালক যাত্রীদের কোনো খেয়াল না রেখে পালিয়ে যায়। বাসে থাকা যাত্রীরা আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোঁয়ায় আটকা পড়ে। ভীতসন্ত্রস্ত যাত্রীরা কাচ ভেঙে বের হওয়ার চেষ্টা করে, যাতে স্থানীয় পুলিশ ও সাধারণ মানুষ সাহায্য করে। অর্ধ ঘন্টা চেষ্টার পর অগ্নি নির্বাপক দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুর্ঘটনার ভয়াবহতা জেনে নিন
অগ্নি নির্বাপকরা বাসের ভিতরে ঢুকে ৫ জনের পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ পায়। মৃতদের মধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও এক অজ্ঞাত পুরুষ রয়েছে। চারজনের নাম জানা গেছে, একজন এখনও অজ্ঞাত। মৃতদের নাম নিম্নরূপ:
- লক্ষী দেবী, স্বামী অশোক মেহতা (প্রায় ৫৫ বছর)
- সোনি, পিতা অশোক মাহাতো (প্রায় ২৬ বছর)
- দেবরাজ, পিতা রামলাল (প্রায় ৩ বছর)
- সাক্ষী কুমারী, পিতা রামলাল (প্রায় ২ বছর)
- একজন অজ্ঞাত পুরুষ
যাত্রীদের আতঙ্ক ও উদ্ধারের চেষ্টা
দুর্ঘটনার সময় বাসে প্রায় ৮০ জন যাত্রী ছিলেন। অধিকাংশ যাত্রীই ঘুমিয়ে ছিলেন, যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। বাসের প্রধান দরজায় আগুন লেগে যাওয়ার ফলে সেটি বন্ধ হয়ে যায়, ফলে পিছনে বসা অনেক যাত্রী আটকে যায়। অন্য খিড়কি ও পথ দিয়ে পালিয়ে অনেকে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়। পুলিশ ও স্থানীয়দের সাহায্যে অনেক যাত্রীকে কাচ ভেঙে বের করা হয়।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। আহত যাত্রীদের লখনউয়ের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
চালক ও পরিচালক দায়িত্ব এড়িয়েছে
এই দুর্ঘটনা বাস পরিষেবা প্রদানকারীদের অবহেলার দিকটি আবারও উন্মোচন করেছে। আগুন লেগে যাওয়ার সাথে সাথেই বাসচালক ও পরিচালক বাস থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যায়, যাত্রীদের প্রাণ রক্ষার কোনো চেষ্টা করে না। বাসটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং আগুন এত তীব্র ছিল যে এক কিলোমিটার দূর থেকেও আগুনের শিখা দেখা যায়।
পুলিশ দুর্ঘটনার পর তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে বাসের জরুরি গেট সঠিকভাবে কাজ করছিল না, যার ফলে যাত্রীদের বাঁচা কঠিন হয়ে পড়ে। এই গেট বন্ধ থাকার কারণে আগুনের সময় অনেকে আটকে পড়ে এবং দম বন্ধ হয়ে বা পুড়ে মারা যায়।