হরিয়ানার মডেল শীতলের হত্যাকাণ্ডে বিবাহিত প্রেমিক গ্রেফতার

হরিয়ানার মডেল শীতলের হত্যাকাণ্ডে বিবাহিত প্রেমিক গ্রেফতার
সর্বশেষ আপডেট: 17-06-2025

হরিয়ানার মডেল শীতলের হত্যাকাণ্ডে তার বিবাহিত প্রেমিক সুনীলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যকলাপ এবং সম্পর্কের উত্তেজনা এই অপরাধের কারণ হয়ে উঠেছে।

শীতল হত্যাকাণ্ড : হরিয়ানার সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং মডেল শীতল অর্থাৎ সিমি চৌধুরীর হত্যার ঘটনায় সমগ্র রাজ্য কেঁপে উঠেছে। প্রথমে এটি একটি নিখোঁজের ঘটনা বলে মনে হয়েছিল, কিন্তু পরে সোনিপত থেকে এক যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার হয় এবং তার পরিচয় শীতল হিসেবে নিশ্চিত হলে পুলিশের তদন্তের দিক সম্পূর্ণ বদলে যায়।

বিবাহের পর আলাদা থাকতেন শীতল

শীতলের বিয়ে কয়েক বছর আগেই হয়েছিল, কিন্তু স্বামীর সাথে মতবিরোধের কারণে তিনি আলাদা থাকতেন। এসময় তার পরিচয় হয় পানিপত निवासी সুনীল কুমারের সাথে, যিনি নিজেও বিবাহিত এবং তার পরিবার থেকে আলাদা থাকেন। গত পাঁচ বছর ধরে দুজনে পরস্পরের সংস্পর্শে ছিলেন। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র বন্ধুত্বই নয়, বোধগম্য ও সামাজিক সম্পর্কও গভীর হতে থাকে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় ছিলেন শীতল

শীতল ‘সিমি চৌধুরী’ নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় ছিলেন এবং প্রায়ই সুনীলের সাথে তার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করতেন। জানা যায়, দুজনে প্রায়ই একসাথে ভ্রমণ, কেনাকাটা এবং রেস্টুরেন্টে যেতেন। তাদের ঘনিষ্ঠতা দেখে মানুষ তাদের প্রেমিক যুগল মনে করত।

হত্যার আগে শেষবার সুনীলের সাথে দেখা গিয়েছিল শীতলকে

শীতলের হত্যার আগে তাকে শেষবার সুনীল কুমারের সাথে দেখা গিয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে স্পষ্ট হয় যে ঘটনার কয়েক ঘন্টা আগে দুজনে একই গাড়িতে ভ্রমণ করছিলেন। পরে সেই গাড়িটি পানিপতের খালে পাওয়া যায়, যা সুনীলের নামে নিবন্ধিত।

মৃতদেহ উদ্ধারের পর হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়

শীতলের মৃতদেহ সোনিপত থেকে উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহ শনাক্ত হওয়ার পর পুলিশ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্ত ত্বরান্বিত করে। প্রাথমিক তদন্তেই সুনীলের উপর সন্দেহ গভীর হয়। আসামির সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সে অপরাধ স্বীকার করে এবং জানায় যে সে ছুরি দিয়ে শীতলকে হত্যা করেছে।

সম্পর্কে উত্তেজনা কারণ?

পুলিশ সূত্রের মতে, দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। শীতলের সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং মানুষের সাথে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগ সুনীল পছন্দ করত না। প্রায়ই এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হত। সন্দেহ করা হচ্ছে যে কোনও বিবাদের জেরে সুনীল রেগে এই অপরাধ করেছে।

গাড়িটি খালে ফেলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা

হত্যার পর সুনীল গাড়িটি পানিপতের খালে ফেলে দেয় যাতে পুলিশকে বিভ্রান্ত করা যায়। কিন্তু প্রযুক্তিগত তদন্ত, কল রেকর্ড, মোবাইল লোকেশন এবং সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে পুলিশ প্রমাণ সংগ্রহ করে সুনীলকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানিয়েছে আগে থেকে পরিকল্পনা করা হয়েছিল

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। পানিপতের উরলানা চৌকির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনিল কুমার জানিয়েছেন যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুনীলের বক্তব্যে বিরোধাভাস পাওয়া গেছে। তদন্তের সময় এই বিষয়টিও সামনে এসেছে যে হত্যাকাণ্ডে ছুরির ব্যবহার করা হয়েছে এবং গাড়িতেই এই ঘটনা ঘটেছে।

বিচারিক হেফাজত এবং পরবর্তী তদন্ত

পুলিশ জানিয়েছে যে আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে এবং রিমান্ডে নেওয়া হবে। রিমান্ডের সময় পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র অর্থাৎ ছুরি উদ্ধার, ঘটনাস্থল নিশ্চিতকরণ এবং আসামির মানসিক অবস্থার গভীর তদন্ত করবে।

যখন শীতলের মৃতদেহ সোনিপতের নগরিক হাসপাতালে আনা হয়, তখন পরিবারের অবস্থা খুবই করুণ ছিল। পরিজনরা দাবি করেছেন যে আসামিকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক। তাদের কথা, মেয়ের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে তার প্রাণ নেওয়া হয়েছে।

Leave a comment