ছয় রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা: ফসল রক্ষায় কৃষকদের আহ্বান

ছয় রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা: ফসল রক্ষায় কৃষকদের আহ্বান
সর্বশেষ আপডেট: 25-05-2025

২৮ মে পর্যন্ত রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি-এনসিআর সহ ছয়টি রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা। কৃষকদের ফসল রক্ষার জন্য সতর্কতা জারি। আম ও লিচু ফসলে ক্ষতির আশঙ্কা।

ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা: দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে আবারও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে যে ২৮ মে পর্যন্ত রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লি-এনসিআরে ঝড় ও বৃষ্টিপাতের প্রভাব দেখা যাবে। এর আগে, ২১ মে আঘাত হানা ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, যাতে অনেক প্রাণহানি এবং বহু এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।

আবহাওয়া দপ্তরের মতে, এইবারও ঘূর্ণিঝড়ের কারণ বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট উষ্ণ বায়ু, যার ফলে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইবে। যদিও পূর্বের ঝড়ের তুলনায় এর বেগ কিছুটা কম হবে, তবুও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে পূর্বেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা জরুরি।

কোন রাজ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে?

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন যে রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লি-এনসিআরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেখা যাবে। ২৮ মে পর্যন্ত এই এলাকায় বৃষ্টিপাত এবং প্রচণ্ড বাতাসের সাথে ঘূর্ণিঝড়ের ইঙ্গিত রয়েছে। এই সময় তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে, যা তীব্র গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি দেবে, তবে ঝড়ের কারণে আম ও লিচু ইত্যাদি ফসলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা তাদের ফসল রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিক। বিশেষ করে আম ও লিচু ফসল নিয়ে সতর্ক থাকার প্রয়োজন, কারণ বর্তমানে এই ফসলগুলিই ক্ষেতে রয়েছে এবং বাতাসের ঝাপটায় তাদের ক্ষতি হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কীভাবে তৈরি হয়?

আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে এই ঘূর্ণিঝড় সমুদ্রে উষ্ণ বায়ুর সংঘর্ষ এবং চাপের পরিবর্তনের কারণে তৈরি হয়। বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর থেকে উঠে আসা উষ্ণ বায়ু যখন স্থলভাগের দিকে আসে তখন তা ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারণ করে। এ ধরনের ঝড়ে বাতাস বৃত্তাকারে ঘোরে এবং তার প্রচণ্ড বেগে গাছ, বিদ্যুৎ খুঁটি, দেয়াল এবং এমনকি বাড়ির ছাদও উড়িয়ে নিতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ডাঃ ইউ.পি. শাহী জানিয়েছেন ২৮ মে পর্যন্ত এ ধরণের আরও একটি ঝড় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময় বৃষ্টিপাতও হতে পারে, যার ফলে তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকবে এবং গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু মানুষকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে কারণ ঝড়ের সময় প্রায়ই বিদ্যুৎপাত, গাছ পড়া এবং বাড়ি ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা ঘটে।

জুন থেকে বৃদ্ধি পাবে প্রচণ্ড গরম

আবহাওয়া দপ্তর আরও জানিয়েছে যে মে মাস ঝড়-বৃষ্টি এবং হালকা বৃষ্টিপাত নিয়ে শেষ হবে। কিন্তু জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে তীব্র গরমের দিন শুরু হতে পারে। তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এই গরম প্রায় ২০ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত থাকতে পারে, এর পর ২৮ বা ২৯ জুন মৌসুমি বায়ু দিল্লি-এনসিআরে আঘাত হানবে।

মৌসুমি বায়ুর আগমনের পর আবহাওয়ায় স্বস্তির আশা করা হচ্ছে। বৃষ্টিপাত এবং বাতাসের ফলে তাপমাত্রা কমবে এবং আবহাওয়া সুন্দর হবে।

ঝড় থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা

এই ধরণের আবহাওয়ায় সবচেয়ে জরুরী হলো সাবধানতা অবলম্বন করা। যদি ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা পাওয়া যায় তবে বাড়ির দরজা ও জানালা বন্ধ করে দিন। কোনও দুর্বল ভবন বা পুরানো বাড়ির নিচে যাবেন না এবং গাছের নিচে দাঁড়াবেন না। ছাদে রাখা কোনও জিনিসপত্র, যেমন টিনের চাদর, কাঠ বা প্লাস্টিকের জিনিসপত্র, যা উড়ে যেতে পারে, তা আগে থেকেই সরিয়ে ফেলুন যাতে তীব্র বাতাসে কারও ক্ষতি না হয়।

বাড়িতে সর্বদা মোবাইল ফোন, চার্জার, টর্চ, ব্যাটারি, माचिस এবং প্রস্তুত খাবারের জিনিসপত্র রাখুন যাতে জরুরি অবস্থায় অসুবিধা না হয়। সরকারি নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে বাইরে বেরোবেন না।

কৃষকদের জন্য বিশেষ সতর্কতা

কৃষকদের বিশেষ করে আম ও লিচু ফসলের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর পরামর্শ দিয়েছে যে কৃষকরা তাদের ফসলকে প্রচণ্ড বাতাস এবং বৃষ্টি থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা করুন। বর্তমানে আমের বাগানে ফল ধরার প্রক্রিয়া চলছে এবং লিচুও বাজারে আসতে চলেছে। তাই যদি প্রচণ্ড বাতাস এবং বৃষ্টির প্রভাব পড়ে তবে ফসলে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।

Leave a comment