বিজেপির কুলদীপ বিষ্ণোয়ী ও মনোহর লালের সাক্ষাত: হরিয়ানার রাজনীতিতে নতুন মোড়

বিজেপির কুলদীপ বিষ্ণোয়ী ও মনোহর লালের সাক্ষাত: হরিয়ানার রাজনীতিতে নতুন মোড়
সর্বশেষ আপডেট: 05-06-2025

হরিয়ানার ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জ্যেষ্ঠ নেতা কুলদীপ বিষ্ণোই সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লালের সাথে সাক্ষাত করেছেন, যা রাজ্যের রাজনীতিতে সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সাক্ষাতে উভয় নেতার মধ্যে হরিয়ানার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

চণ্ডীগড়: হরিয়ানার রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লালের সাথে বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা এবং প্রাক্তন সাংসদ কুলদীপ বিষ্ণোয়ীর এক ঘণ্টা ব্যাপী সাক্ষাত রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই সাক্ষাত রাজ্যে বোর্ড ও নিগমে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে জোরপূর্বক প্রস্তুতি চলছে এবং হরিয়ানা বিজেপিতে অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, এমন সময়ে হয়েছে।

ব্যক্তিগত সাক্ষাত, কিন্তু রাজনৈতিক ইঙ্গিত স্পষ্ট

বুধবার দিল্লিতে কুলদীপ বিষ্ণোই কেন্দ্রীয় শক্তি, আবাসন ও শহরায়ন মন্ত্রী মনোহর লালের বাসভবনে তাঁর সাথে দেখা করেন। সাক্ষাতের তথ্য বিষ্ণোই নিজেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ শেয়ার করে এবং মনোহর লালের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রশংসা করেন। যদিও তিনি এটিকে "সাধারণ সাক্ষাত" বলে অভিহিত করেছেন, তবে হরিয়ানার রাজনৈতিক পরিবেশে এটিকে সাধারণ বলে মনে করা কঠিন হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সাক্ষাত এমন এক সময়ে হয়েছে যখন বিজেপি সংগঠন ও সরকার উভয় স্তরেই ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। কুলদীপ বিষ্ণোই বর্তমানে সংগঠনে নিজের ভূমিকা ও নিজের সমর্থকদের যথাযথ স্থান দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

টিকিট কাটা পরে বৃদ্ধি পেয়েছে সক্রিয়তা

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কুলদীপ বিষ্ণোই টিকিট পাননি। বিধানসভা পর্যায়েও তাঁর কাজকে দলে প্রত্যাশিত গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, কুলদীপ এখন নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ও প্রভাব বজায় রাখার জন্য বোর্ড ও নিগমের মতো প্রতিষ্ঠানে নিজের ঘনিষ্ঠ নেতাদের সমন্বয়ের পক্ষে কৌশল তৈরি করছেন।

তাঁর পিতা ও হরিয়ানার दिग्गज নেতা ভজনলালের মৃত্যুবার্ষিকী সম্প্রতি ৩ জুন সমগ্র রাজ্যে ব্যাপক উৎসাহের সাথে পালিত হয়েছে, যা একটি শক্তি প্রদর্শনের হিসেবেও দেখা হচ্ছে। এখন এই সাক্ষাতকে সেই শক্তি প্রদর্শনেরই বিস্তার হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বোর্ড-নিগমে নিয়োগের প্রেক্ষাপট

হরিয়ানায় অনেক বোর্ড ও নিগমের চেয়ারম্যান পদ খালি আছে এবং সেগুলোতে শীঘ্রই নিয়োগ দেওয়া হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপি এই নিয়োগগুলিকে সামাজিক ভারসাম্য ও সংগঠনাত্মক শক্তিশালীকরণের দিক থেকে দেখছে। এতে বিষ্ণোয়ীর মতো প্রভাবশালী জাতিগত ও ক্ষেত্রীয় পরিধি সম্পন্ন নেতাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কুলদীপেরও চেষ্টা হচ্ছে ভজনলাল পরিবারের অনুগত নেতাদের দায়িত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করে নিজের প্রভাব আরও শক্তিশালী করা।

মনোহর লালের ভূমিকা এখনও গুরুত্বপূর্ণ

যদিও এখন মনোহর লাল মুখ্যমন্ত্রী নন, তবে রাজ্য বিজেপিতে তাঁর প্রভাব ও সংগঠনে তাঁর মর্যাদা এখনও অত্যন্ত শক্তিশালী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরেও হরিয়ানা বিজেপি সংগঠন প্রায়ই তাঁর পরামর্শ নেয়। তাই কুলদীপ বিষ্ণোয়ীর তাঁর সাথে সাক্ষাত এই ইঙ্গিত দেয় যে, বিষ্ণোই নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করার আগে মনোহর লালের সাথে সমন্বয় রাখছেন। এটাও আলোচনা হচ্ছে যে সংগঠনে সম্ভাব্য পরিবর্তন বা আগামী নিয়োগের আগে বিষ্ণোই পূর্বানুমতি ও সমর্থন আদায়ের উদ্দেশ্যে এই সাক্ষাত করেছেন।

 

Leave a comment