মধেপুরায় এক মধ্য বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আদিতি সিংহ চৌহান বুধবার পেঁখো থেকে নিজের ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা জেলার আবু সরাই দেহাত থানা এলাকার শিবনগর কলোনির বাসিন্দা ছিলেন। আদিতি বিদ্যালয়ের কাছে পৃথ্বীচন্দ যাদবের বাড়িতে একটি কামরা ভাড়া করে থাকতেন, যেখানে তার মৃতদেহ পেঁখো থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
মধেপুর: মধ্য বিদ্যালয় টোকার সহকারী শিক্ষিকা আদিতি সিংহ চৌহান বুধবার পেঁখো থেকে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা জেলার আবু সরাই দেহাত থানার শিবনগর কলোনির বাসিন্দা ছিলেন। বিদ্যালয়ের কাছে পৃথ্বীচন্দ যাদবের বাড়িতে একটি কামরায় ভাড়া থাকতেন। তার মৃতদেহ পেঁখো থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় যখন শিক্ষিকা দরজা খুললেন না, তখন ঘরমালিক জানালা দিয়ে দেখে পেঁখো থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পান। এরপর তিনি পুলিশ ও আত্মীয়স্বজনদের খবর দেন। সকালে আত্মীয়স্বজনরা এসে দরজা খোলেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ এফএসএল টিমের সাথে পৌঁছে ঘটনার তদন্ত করে। পরে মৃতদেহ মধেপুরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
তার এক পায়ের একটি রোগ ছিল।
থানার অধিকর্তা সন্তোষ কুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। ঘটনার খবর পেয়ে শিক্ষিকার দুই ভাই শশিকান্ত চৌহান ও সৌরভ চৌহান এবং দেবর মনু ঘটনাস্থলে এসেছেন। ভাই শশিকান্ত জানিয়েছেন, আদিতি কয়েকদিন ধরে ডিপ্রেশনে ছিলেন।
তার এক পায়ের একটি রোগ ছিল, যার চিকিৎসা লখনউয়ের একটি হাসপাতালে চলছিল। তিনি ওষুধ খাচ্ছিলেন, কিন্তু সবসময় বলতেন যে, তিনি আর ভালো হবেন না। পরিবারের সবাই তাকে সান্ত্বনা ও আশ্বাস দিচ্ছিলেন।
বুধবার সকালেও তাদের কথাবার্তা হয়েছিল, কিন্তু ১১ টার পর তার মোবাইল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আদিতির পাশের কামরায় থাকা এক মেয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। তখন পর্যন্ত সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। আত্মহত্যার খবর পেয়ে সকলেই দ্রুত মধেপুরে পৌঁছান। পুলিশের সাহায্যে দরজা খোলা হয় এবং তারপর পেঁখো থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়।
ভাই চাইতেন না যে আদিতি এত দূরে চাকরি করুক।
মধেপুরের গমহরিয়া প্রখণ্ডের অরাহী একপড়হা পঞ্চায়েতের উন্নত মধ্য বিদ্যালয় টোকায় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আদিতি সেখানে পোস্টিং পান। তিনি ২৩ নভেম্বর ২০২৩ সালে যোগদান করেন এবং চাকরির জন্য অযোধ্যার থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে আসেন।
তিনি বিদ্যালয়ের কাছে একটি কামরা ভাড়া করে থাকার ব্যবস্থা করেন। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আদিতির সাথে বেশ মিশে গিয়েছিল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমোদ জানিয়েছেন, আদিতি একজন মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষিকা ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে বিদ্যালয়ে শোকের ছায়া নেমেছে। আদিতির বড় ভাই শশিকান্ত চৌহান জানিয়েছেন, আমরা চাইতাম না আদিতি এত দূরে চাকরি করতে যাক।
সবাই তাকে বুঝিয়েছিল যে, উত্তরপ্রদেশেও চাকরি পাওয়া যাবে, কিন্তু সে কারো কথা শোনে নি। সে বলত, পড়ানোর প্রতি তার অনেক আগ্রহ আছে এবং যখন ঈশ্বর তাকে সুযোগ দিয়েছেন, তাহলে সে কীভাবে তা ছেড়ে দিতে পারে? এই জেদের কারণেই সে এত দূরে গিয়েছিল।
শিক্ষিকা কেন আত্মহত্যা করলেন?
শিক্ষিকা আদিতি সিংহ চৌহানের আত্মহত্যার পেছনের গল্প পুলিশের তদন্তের পরই সামনে আসবে। এখনো বিভিন্ন ধরণের কথা শোনা যাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের এই যুবতী সরকারি শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করছিলেন। তার কাজে বিদ্যালয়ের সবাই খুশি ছিল এবং তার পড়ানোর কৌশলের প্রশংসা করত।
তার পরিবারও সুখী ছিল। তাহলে আবার কী হলো যে তিনি আত্মহত্যা করলেন, এ ব্যাপারটি সকলের বুদ্ধির বাইরে। যদিও পুলিশ ও এফএসএল টিম পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ঘটনার তদন্তে লেগে আছে।
শিক্ষিকার মোবাইল থেকেও অনেক রহস্য উন্মোচিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে। লোকজন পুলিশের তদন্তের দিকেই তাকিয়ে আছে, যদিও কামরায় কোনো সুসাইড নোট পাওয়া যায়নি।