ভারত আরও একটি ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে। নীতি আয়োগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বি.ভি.আর. সুব্রমণ্যম ঘোষণা করেছেন যে, জাপানকে পিছনে ফেলে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে ভারতের অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে। অনেক দিন ধরে জাপান এই স্থানে অধিষ্ঠিত ছিল।
বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি: ভারত আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছে। নীতি আয়োগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বি.ভি.আর. সুব্রমণ্যম নিশ্চিত করেছেন যে, ভারত এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি, যা জাপানকে পিছনে ফেলেছে। এই সাফল্য দেশে অর্থনৈতিক সংস্কার, বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং শক্তিশালী বৃদ্ধির হারের কারণে সম্ভব হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং ফিচ রিপোর্টের মাধ্যমে অগ্রগতির পরিষ্কার প্রমাণ
সুব্রমণ্যম নীতি আয়োগের দশম গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকের পর এই তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের অর্থনীতি এখন ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের স্তরে পৌঁছেছে। এর অর্থ হল আমেরিকা, চীন এবং জার্মানির মতো দেশগুলি ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে। তিনি এটাও ইঙ্গিত করেছেন যে, আগামী দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে ভারত জার্মানিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর সাম্প্রতিক তথ্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে ভারত অর্থনৈতিকভাবে জাপানকে পিছনে ফেলেছে। এদিকে, ফিচ রেটিংও ভারতের বৃদ্ধির হারের স্থায়িত্ব এবং শক্তি উন্মোচন করেছে। ফিচ ২০২৮ সাল পর্যন্ত ভারতের গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার ৬.৪% থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে, যা তাদের আগের ৬.২% পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। এই তথ্য ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষমতা এবং নমনীয়তাকে প্রতিফলিত করে।
বিশ্বব্যাপী মঞ্চে ভারতের বর্ধমান প্রভাব
সংযুক্ত আরব আমিরাত (রাষ্ট্রসংঘ)-এর প্রতিবেদনেও ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালে ভারতের অর্থনীতি ৬.৩% বৃদ্ধি পাবে, যখন চীনের ৪.৬%, আমেরিকার ১.৬%, জাপানের ০.৭% এবং ইউরোপের মাত্র ১% বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। জার্মানির অর্থনীতিতে -০.১% হ্রাসের সম্ভাবনাও আছে। এটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে ভারত কেবলমাত্র একটি উদীয়মান অর্থনীতি নয়, বরং একটি প্রধান বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে উত্থান করছে।
সম্পদের অর্থায়ন সরকারকে আরও শক্তিশালী করবে
নীতি আয়োগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এটাও উল্লেখ করেছেন যে, সরকার সম্পদের অর্থায়নের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করতে চলেছে। এই কর্মসূচির আওতায়, সরকার তার সম্পত্তি ভাড়া দেবে বা বিক্রি করবে। এর ফলে সরকারের কাছে অর্থনৈতিক সম্পদ আসবে যা মৌলিক সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন এবং সামাজিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে। এই কৌশল ভারতের বৃদ্ধির গল্পকে আরও শক্তিশালী করবে।
ভারত বিশ্বের প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে উঠে এসেছে। আমেরিকার মতো দেশগুলিতে কোম্পানিগুলিকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে, যখন ভারতে কম উৎপাদন খরচ এবং দক্ষ শ্রমিকদের কারণে 'মেক ইন ইন্ডিয়া' কর্মসূচির মাধ্যমে ভারত বৃহৎ লাভ অর্জন করেছে। নীতি আয়োগের মতে, ভারতে উৎপাদন অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় সস্তা, যার ফলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতের দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতি যুব উদ্যোক্তা, স্টার্টআপ এবং প্রযুক্তিগত নতুনত্বের কারণে ও ব্যাপকভাবে চালিত হচ্ছে। দেশে ডিজিটাল লেনদেন, অনলাইন সেবা এবং প্রযুক্তিগত স্টার্টআপ নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যার ফলে রোজগার এবং উৎপাদন উভয় ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি পেয়েছে।