দেশপ্রেমিক অভিনেতা মনোজ কুমার আর নেই

দেশপ্রেমিক অভিনেতা মনোজ কুমার আর নেই
সর্বশেষ আপডেট: 04-04-2025

এটি হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য এক বিরাট ক্ষতি। দেশপ্রেমে পরিপূর্ণ চলচ্চিত্রের জন্য বিখ্যাত दिग्गज অভিনেতা মনোজ কুমার (Manoj Kumar) ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। দশকের পর দশক ধরে চলচ্চিত্র জগতে রাজত্ব করে যাওয়া এই মহান শিল্পী সম্প্রতি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আসুন জেনে নিই এর সাথে জড়িত সম্পূর্ণ তথ্য।

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের জন্য এটি এক বড় ধাক্কা। ভারতীয় চলচ্চিত্রে দেশপ্রেমমূলক চলচ্চিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করে যাওয়া মহান অভিনেতা মনোজ কুমার আর আমাদের মাঝে নেই। ৮৭ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। দশকের পর দশক ধরে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে রাজত্ব করে যাওয়া এই दिग्गज অভিনেতার মৃত্যু মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে হয়েছে, যেখানে তিনি হৃদরোগ ও যকৃতের সমস্যায় ভর্তি ছিলেন। তার মৃত্যুতে বলিউডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মনোজ কুমার

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মনোজ কুমারের মৃত্যু শুক্রবার সকালে হয়েছে। তাকে হৃদরোগের জটিল সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কোকিলাবেন হাসপাতালের চিকিৎসা প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার মৃত্যুর কারণ ছিল ডিকম্পেনসেটেড লিভার সিরোসিস। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা এই মহান শিল্পীর এভাবে হঠাৎ চলে যাওয়া ইন্ডাস্ট্রির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

'ভারত কুমার' নামে কেন পরিচিত ছিলেন মনোজ কুমার?

২৪ জুলাই ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণকারী মনোজ কুমারের আসল নাম ছিল হরিকিশন গিরি গোস্বামী। তার কর্মজীবনে তিনি অনেক স্মরণীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন, কিন্তু দেশপ্রেমমূলক চলচ্চিত্র তাকে সর্বাধিক খ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি ‘শহীদ’, ‘উপকার’, ‘পূর্ব ও পশ্চিম’ তার অভিনয়ে দেশপ্রেমের भावना পর্দায় খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। তার চলচ্চিত্র দর্শকদের দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং সমর্পণের भावना দিয়েছে। এই কারণেই তিনি ‘ভারত কুমার’ উপাধি পেয়েছিলেন।

এই চলচ্চিত্রগুলোর মাধ্যমে অমর হয়েছেন মনোজ কুমার

মনোজ কুমার তার কর্মজীবনে অনেক চমৎকার চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন, যার কিছু অত্যন্ত আলোচিত ছিল:

• শহীদ (১৯৬৫) – ভগৎ সিংয়ের জীবনী নির্ভর এই চলচ্চিত্র আজও দেশপ্রেমমূলক চলচ্চিত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করে আছে।
• উপকার (১৯৬৭) – তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লाल बहादुर শাস্ত্রীর নির্দেশে এই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল।
• পূর্ব ও পশ্চিম (১৯৭০) – এই চলচ্চিত্রে ভারতীয় মূল্যবোধ এবং পশ্চিমা সভ্যতার পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে।
• রুটি, কাপড় ও মাকান (১৯৭৪) – সামাজিক বিষয়বস্তু তুলে ধরা এই চলচ্চিত্র বক্স অফিসে সুপারহিট হয়েছিল।
• ক্রান্তি (১৯৮১) – স্বাধীনতা সংগ্রামের উপর নির্মিত এই চলচ্চিত্রও ব্লকবাস্টার হয়েছিল।

পুরষ্কার ও সম্মাননা

মনোজ কুমার তার অবদানের জন্য অনেক বড় সম্মান পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে:

• পদ্মশ্রী (১৯৯২) – ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত চতুর্থ সর্বোচ্চ नागरिक সম্মান।
• দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার (২০১৬) – চলচ্চিত্র জগতে তার অবদানের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার।
• ৭ টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার – যার মধ্যে ‘উপকার’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা চলচ্চিত্র, পরিচালক, গল্প ও সংলাপ রচনার পুরস্কার অন্তর্ভুক্ত।
• জাতীয় পুরস্কার – তার চলচ্চিত্রগুলি সর্বদা সামাজিক ও দেশপ্রেমমূলক বিষয়বস্তু তুলে ধরেছে, যার জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

ইন্ডাস্ট্রিতে শোকের জোয়ার

মনোজ কুমারের মৃত্যুতে বলিউড থেকে শুরু করে তার ভক্তরা সকলেই শোক প্রকাশ করছেন। চলচ্চিত্র নির্মাতা অশোক পণ্ডিত দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, "মনোজ কুমার জি আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা ছিলেন। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন যে চলচ্চিত্র কেবল मनोरंजन নয়, সমাজকে একটি দিক দানের মাধ্যমও হতে পারে। তার চলে যাওয়া চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক বড় ক্ষতি।"

শেষ চলচ্চিত্র ও উত্তরাধিকার

মনোজ কুমার শেষবার ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জয় হিন্দ’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছিলেন। অভিনেতা হিসেবে, তার শেষ চলচ্চিত্র ছিল ‘ময়দান-এ-জঙ্গ’। এর পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন, কিন্তু তার উত্তরাধিকার চিরকাল চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে জীবন্ত থাকবে। তার অবদান এবং দেশপ্রেমে পরিপূর্ণ চলচ্চিত্রের অনুপ্রেরণাদায়ক প্রতিধ্বনি চিরকাল স্থায়ী থাকবে।

Leave a comment