২০২৫-এর বলিউড আর আগের মতো নেই। এক সময় যেখানে তারকাশক্তিকেই ছবির সাফল্যের গ্যারান্টি মনে করা হতো, সেখানে এখন দর্শকদের পছন্দ অনেক পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। মানুষ শুধু বড় নামের উপর নয়, বরং ভালো কন্টেন্ট, শক্তিশালী চিত্রনাট্য এবং বাস্তবসম্মত অভিনয়ের উপর জোর দিচ্ছে।
মনোরঞ্জন: ২০২৫-এর বলিউড আর আগের মতো নেই। এক সময় ছবির সাফল্যের মাপকাঠি ছিল শুধুমাত্র তারকাশক্তি, কিন্তু এখন দর্শকদের পছন্দ-অপছন্দে বড় পরিবর্তন এসেছে। আজকের দর্শকরা শুধু বড় নাম বা গ্ল্যামারে প্রভাবিত হন না, বরং তারা গল্পের গভীরতা, শক্তিশালী চিত্রনাট্য এবং বাস্তবসম্মত অভিনয়কে অগ্রাধিকার দেন।
OTT প্ল্যাটফর্মগুলির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এই পরিবর্তনকে আরও সशক্ত করে তুলেছে, যেখানে কন্টেন্ট-কেন্দ্রিক চলচ্চিত্র একটি নতুন পরিচয় এবং দর্শক শ্রেণী পেয়েছে। এটাই কারণ আজকের নির্মাতা-পরিচালকরা নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দ্বিধা করেন না এবং দর্শকরাও নতুন ধারণাগুলিকে উন্মুক্ত মনে গ্রহণ করছে।
পুরোনো তারকারা, নতুন পরিচয়
অক্ষয় কুমার, সালমান খান, শাহরুখ খান এবং আমির খানের মতো পুরোনো दिग्गज তারকারা এখন নির্বাচিত চিত্রনাট্যগুলি বেছে নিচ্ছেন যা হয় সামাজিক বিষয় উত্থাপন করে অথবা একেবারে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। শাহরুখের ‘ডাঙ্কি’ এবং সালমানের ‘টাইগার ৩’-এর মতো ছবিগুলি দেখিয়েছে যে তারকাধারার সাথে কন্টেন্টের মেলবন্ধন কতটা জরুরী।
২০২৫ সালে অনেক নতুন মুখ আবির্ভূত হয়েছে। ভিকি কৌশল, রাজকুমার রাও, কিয়ারা আডবাণী এবং তৃপ্তি ডিমরির মতো শিল্পীরা শুধুমাত্র চলচ্চিত্রকে নতুন রঙ দিয়েছেন তাই নয়, দর্শকদেরও মন জয় করে নিয়েছে। তাদের বাস্তবসম্মত অভিনয়শৈলী এবং শক্তিশালী চিত্রনাট্যের সাথে যুক্ততা দর্শকদের অনেক পছন্দ হচ্ছে।
গল্পই রাজা!
এখন ছবির সাফল্য শুধুমাত্র বাজেট বা লোকেশনের উপর নির্ভর করে না—গল্পই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে। ‘১২th ফেইল’, ‘স্কুপ’, ‘আর্টিকেল ৩৭০’ এবং ‘লাপাতা লেডিজ’-এর মতো ছবিগুলি ভারী বাজেটের তারকা দল ছাড়াই বক্স অফিস এবং OTT উভয় জায়গায় সাফল্য পেয়েছে।
OTT-এর প্রভাব: চলচ্চিত্র হল থেকে মোবাইল স্ক্রিন পর্যন্ত
নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম, ডিজনি+ হটস্টার এবং JioCinema-র মতো প্ল্যাটফর্মগুলি দর্শকদের এমন ছবি এবং ধারাবাহিক দিয়েছে যা থিয়েটারে কখনো সুযোগ পেত না। এখন সবাই নিজের মোবাইলে উচ্চমানের কন্টেন্ট দেখতে পারে, যার ফলে কন্টেন্টের গণতান্ত্রীকরণ হয়েছে। এই পরিবর্তন বলিউডকে নতুন ধরণের গল্প এবং বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে।
মহিলা-কেন্দ্রিক চলচ্চিত্রের উত্থান
২০২৫ সালে মহিলা-প্রধান ছবিগুলি একটি বড় ঢেউ হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। ‘মিজেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’, ‘ছাপাক’ এবং ‘ক্রু’-এর মতো ছবিগুলি প্রমাণ করেছে যে মহিলারা এখন শুধুমাত্র সহ-শিল্পী নয়, বরং ছবির মেরুদণ্ড হয়ে উঠেছে। এই গল্পগুলি মহিলা সবলীকরণ, সামাজিক পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত সংগ্রামগুলিকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে।
দক্ষিণের প্রভাব এবং প্যান-ইন্ডিয়া চলচ্চিত্র
এখন বলিউড একা চলছে না—দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রভাব অসাধারণভাবে হিন্দি দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। ‘RRR’, ‘পুষ্পা’ এবং ‘কান্তারা’-র মতো ছবিগুলি হিন্দি বেল্টেও অসাধারণ সাফল্য পেয়েছে। এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বলিউড এখন প্যান-ইন্ডিয়া ছবির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে—অর্থাৎ এমন ছবি যা দেশের প্রতিটি কোণে দর্শকদের সাথে যুক্ত হতে পারে।
২০২৫-এর বলিউড একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। এখন ছবিগুলি শুধুমাত্র গ্ল্যামার বা মশলাদার সংলাপে সীমাবদ্ধ নেই। বাস্তব গল্প, সামাজিক বিষয় এবং তাজা অভিনয় দর্শকদের বেশি পছন্দ হচ্ছে।