রাজস্থানে পাকিস্তানি গুপ্তচর ধৃত: সালাহ মোহাম্মদের সচিব গ্রেফতার

রাজস্থানে পাকিস্তানি গুপ্তচর ধৃত: সালাহ মোহাম্মদের সচিব গ্রেফতার
সর্বশেষ আপডেট: 03-06-2025

রাজস্থানের প্রাক্তন কেবিনেট মন্ত্রী সালাহ মোহাম্মদের ব্যক্তিগত সচিবকে পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে তিনি সাতবার পাকিস্তান গিয়েছিলেন।

পাকিস্তানি গুপ্তচর: রাজস্থানে একটি বড় গুপ্তচর কাণ্ডের খবর সামনে এসেছে যেখানে কংগ্রেস দলের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং প্রাক্তন কেবিনেট মন্ত্রী সালাহ মোহাম্মদের ব্যক্তিগত সচিব শাকুর খানকে পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। শাকুর খান, যিনি জয়সালমের জেলা কর্মসংস্থান দপ্তরে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে কর্মরত ছিলেন, তার উপর অভিযোগ উঠেছে যে গত কয়েক বছরে তিনি সাতবার পাকিস্তান ভ্রমণ করেছেন এবং সেখানকার গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করেছেন। পুলিশ এই গ্রেফতারকে বড় সাফল্য বলে দাবি করেছে এবং শীঘ্রই এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য দেবে।

শাকুর খানের গ্রেফতার এবং তদন্ত

২৮শে মে রাজস্থান পুলিশ শাকুর খানকে আটক করে। এরপর থেকেই তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শাকুর খান কেবলমাত্র পাকিস্তান গিয়েছিলেন তাই নয়, সেখানকার গোয়েন্দা সংস্থা ISI-এর সাথেও যোগাযোগ করেছিলেন। তাকে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত দুই কর্মকর্তা, আহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশ এবং সোহেল কামারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যে পাওয়া গেছে। সুরক্ষা সংস্থাগুলি আগে থেকেই শাকুর খানের সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য পেয়েছিল, যার উপর নজরদারি করা হচ্ছিল।

পাকিস্তানকে গোপনীয় তথ্য দেওয়ার অভিযোগ

রাজস্থান পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে যে, অপারেশন সিন্দুরের সময়ও শাকুর খান পাকিস্তানকে সংবেদনশীল এবং কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। শাকুর খান মোবাইল মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন WhatsApp-এর মাধ্যমে এমন তথ্য ভাগ করেছিলেন, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তিনি এই ধরনের অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন।

শাকুর খানের পাকিস্তান যাওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি

শাকুর খানের পাকিস্তান ভ্রমণের পেছনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহজনক কারণ রয়েছে। তিনি পাকিস্তান দূতাবাসে গিয়ে ভিসা পেয়েছিলেন এবং বারবার সেখানে ভ্রমণ করেছেন। রাজস্থান পুলিশের মহাপরিদর্শক (CID সুরক্ষা) বিষ্ণু কান্ত গুপ্তার নির্দেশে তদন্তকে আরও গভীরভাবে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শাকুর খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন, ১৯২৩ অনুসারে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সংস্থাগুলি পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং শীঘ্রই শাকুর খানকে সিজেএম আদালতে হাজির করা হবে।

শাকুর খানের ভূমিকা এবং প্রভাব

শাকুর খান জয়সালমের জেলা কর্মসংস্থান দপ্তরে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং একই সাথে প্রাক্তন মন্ত্রী সালাহ মোহাম্মদের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবেও কাজ করতেন। ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে তার অনেক সংবেদনশীল নথি এবং তথ্যের অ্যাক্সেস ছিল, যার অপব্যবহার করে তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ বজায় রেখেছিলেন।

এই ধরনের কার্যকলাপ কেবলমাত্র একটি সংবেদনশীল সরকারি পদে বসে থাকা কর্মকর্তার বিশ্বাসযোগ্যতার উপর প্রশ্ন তোলে না, বরং জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও গুরুতর হুমকি।

রাজস্থান পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ

রাজস্থান পুলিশ শাকুর খানের গ্রেফতারকে বড় সাফল্য বলে দাবি করেছে। পুলিশের দাবি, এই ঘটনা ভারতের জন্য গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করে। তদন্ত সংস্থাগুলি শাকুর খান দ্বারা প্রদত্ত প্রমাণ এবং তার পাকিস্তানি যোগাযোগের বিষয়ে গভীর তদন্ত করছে। একই সাথে পুলিশ পাকিস্তান দূতাবাসের এই কর্মকর্তা এবং ISI এজেন্টদের নেটওয়ার্কেরও তদন্ত করছে। রাজস্থান পুলিশ শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য দেবে।

এই ঘটনা জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সম্ভাব্য দুর্বলতা উন্মোচন করেছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজস্থান প্রশাসন উভয়ই গুপ্তচরবৃত্তির এই ঘটনাকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। সংস্থাগুলি সতর্ক এবং যেকোনো সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

Leave a comment