রাজস্থানের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর হঠাৎ মৃত্যু: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের কবলে

রাজস্থানের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর হঠাৎ মৃত্যু: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের কবলে
সর্বশেষ আপডেট: 05-06-2025

জয়পুর থেকে একটি দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক খবর এসেছে, যেখানে রাজস্থানের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর মঙ্গলবার সকালে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের কারণে হঠাৎ মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জয়পুর: রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও আবেগঘন খবর সামনে এসেছে। প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর মঙ্গলবার সকালে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের কারণে হঠাৎ মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, রাতে তিনি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিলেন, পরিবারের সাথে খাবার খেয়েছিলেন, এবং তারপর চিরনিদ্রায় চলে গেছেন। সকালে যখন তাকে উঠানোর চেষ্টা করা হয়, তখন তিনি অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের পরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এই ঘটনা কেবলমাত্র রাজনৈতিক মহলকেই নয়, লক্ষ লক্ষ মানুষকেও ভাবতে বাধ্য করছে যে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের মতো প্রাণঘাতী অবস্থা কত নিঃশব্দে জীবন কেড়ে নিতে পারে।

একটি স্বাভাবিক সন্ধ্যা, এবং তারপর জীবনের শেষ সকাল

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রীর স্ত্রীর রাত পর্যন্ত কোনো শারীরিক অসুবিধা ছিল না। তিনি প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার পরিবারের সদস্যদের সাথে খাওয়ার পর বিশ্রাম নিতে চলে যান। মন্ত্রী নিজে কিছুক্ষণ পর অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সকালে যখন স্ত্রীকে চা দিতে একজন পরিবারের সদস্য ঘরে যান, তখন তিনি তাকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পান। তাকে দ্রুত निजी अस्पताলে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাককে মৃত্যুর কারণ বলা হয়েছে।

কী হয় সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক?

চিকিৎসকদের মতে, সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকে ব্যক্তি ঐতিহ্যগত লক্ষণ যেমন বুকে তীব্র ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ঘাম হওয়া ইত্যাদি দেখা যায় না। এই অ্যাটাক খুব ধীরে ধীরে এবং কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত ছাড়াই আসে, যার ফলে ব্যক্তি বুঝতেই পারে না যে তার হৃদয়ে বিপদ ঘনিয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, নারীদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি থাকে, বিশেষ করে যারা নিয়মিত চেকআপ করান না বা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগে ভোগেন।

মন্ত্রী বলেন – আমার শক্তি চলে গেল

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, যিনি নিজেই স্বাস্থ্য সেবার জন্য পরিচিত, এই ক্ষতি থেকে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছেন। তিনি মিডিয়াকে বলেন, তিনি কেবল আমার স্ত্রীই ছিলেন না, আমার আত্মা ছিলেন। আমরা দুজনে মিলে সংগ্রাম করেছি, জীবনের প্রতিটি উত্থান-পতন ভোগ করেছি। এখন মনে হচ্ছে যেন আমার কণ্ঠও চলে গেল। পরিবারে তিন সন্তান আছে, যার মধ্যে দুজন বিবাহিত। সম্পূর্ণ পরিবারের উপর দুঃখের পাহাড় নেমে এসেছে।

মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল মন্ত্রী, বিধায়ক ও বিরোধী দলের নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন এবং সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। জয়পুরের অনেক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যালয়ে শোকের স্মরণে একদিনের মৌন ধারণ করা হয়েছে। খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সতীশ মহাজন বলেছেন, এই ঘটনা আবারও আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে আমাদের হৃদয় নিঃশব্দেও বিপদে পড়তে পারে। তাই সকলকে ৪০ বছর বয়সের পর নিয়মিত হৃদয় পরীক্ষা করানো উচিত।

Leave a comment