ফরুখনগরে তীব্র বিদ্যুৎ সংকট: কৃষক ও জনগণের ক্ষোভ

ফরুখনগরে তীব্র বিদ্যুৎ সংকট: কৃষক ও জনগণের ক্ষোভ
সর্বশেষ আপডেট: 31-05-2025

ফরুখনগরে বর্ধমান তাপমাত্রার সাথে সাথে বিদ্যুৎ সংকটের সমস্যায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শহরাঞ্চলে তিন থেকে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে, আর গ্রামাঞ্চলে এই সময় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত বেড়ে যায়।

হরিয়ানা: গুরুগ্রামের ফরুখনগর অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংকটের সমস্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের জীবন অত্যন্ত প্রভাবিত হচ্ছে। গরমের এই মৌসুমে দিনভর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় গৃহস্থালির কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কৃষিকাজও ব্যাহত হচ্ছে। শহরাঞ্চলে যেখানে দৈনিক ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ কাটা যায়, সেখানে গ্রামাঞ্চলে এ কাটা ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

কৃষকদের দাবি, তাদের কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হোক যাতে তারা কৃষিকাজ সঠিকভাবে করতে পারে, কিন্তু নিগম কর্তৃক বারবার লাইন ড্যামেজ ও মেরামতের নাম করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।

জনগণের মধ্যে বর্ধমান অসন্তোষ ও নিগমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ফরুখনগরের নাগরিকদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁরা বলছেন, নিগম কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য প্রায়শই অসম্পূর্ণ বা ভুল হয়। কর্মকর্তারা ফোন ধরেন না, যার ফলে গ্রাহকরা কোনো ধরণের তথ্যই পান না। এতে মানুষ বুঝতে পারছে না বিদ্যুৎ কবে আসবে অথবা কতক্ষণ বন্ধ থাকবে। এই অনিশ্চয়তা জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, যা এখন উন্মুক্ত প্রতিবাদে রূপ নিচ্ছে।

কৃষকরাও এই সমস্যায় অত্যন্ত বিপাকে পড়েছে। কৃষিকাজের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তাদের ক্রমাগত বিদ্যুৎ কাটা সহ্য করতে হচ্ছে। অনেক কৃষক উদ্বিগ্ন যে, বিদ্যুৎ না পেলে তাদের ফসলের ক্ষতি হতে পারে, যার ফলে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। তারা নিগম প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে, কৃষকদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিন এবং সময়মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করুন।

নিগমের কারণে বর্ধমান দুর্ভোগ

ফরুখনগরে বিদ্যুৎ সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে নিগম কর্তৃক যথাযথ পরিকল্পনা ও তথ্য ছাড়াই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। নিগম সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেরামতের নাম করে বিদ্যুৎ কেটে দেয়, কিন্তু কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় অনেক সময় রাত ৭-৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসে না। এর ফলে ঘরে লাগানো ইনভার্টার ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা দীপক যাদব বলেন, গত এক মাস ধরে ক্রমাগত বিদ্যুৎ কাটা যাচ্ছে, কিন্তু আমরা আগে থেকে কোনো তথ্য পাই না। কর্মকর্তারা ফোনও ধরেন না, যার ফলে আমাদের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। অ্যাডভোকেট পূর্ণিমা যাদবও এ ব্যাপারে সম্মতি জানিয়ে বলেন, নিগমের কর্মকর্তারা কোনো পূর্ব সূচনা ছাড়াই বিদ্যুৎ কেটে দেন, যার ফলে কৃষিকাজ ও গৃহস্থালির কাজ প্রভাবিত হয়।

কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা

কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের সমস্যাগুলিকে গুরুত্বের সাথে না নেওয়াও এই সমস্যা আরও বেড়ে যাওয়ার কারণ। এসডিও মেনপাল জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার জন্য আগে থেকেই অনুমতি নেওয়া হয় এবং ফিডারে মেরামতের কাজ চলছে। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, এই কাজ সময়মতো হয় না এবং তাদের এ ব্যাপারে কোনো নির্ভুল তথ্য দেওয়া হয় না।

সুখবীর তাঁওয়ার নামে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, নিগমের কর্মকর্তারা ইচ্ছামতো কাজ করেন এবং ফোনে জিজ্ঞাসা করলে সন্তোষজনক উত্তর দেন না। অরুণ কুমারও বলেন, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো সূচনা ছাড়াই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা সাধারণ জনজীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। সকালের কাজও বিদ্যুৎ না থাকায় প্রভাবিত হচ্ছে।

কী সমাধান?

ফরুখনগরের বাসিন্দাদের দাবি, নিগম সময়মতো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার তথ্য দিক এবং মেরামতের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করুক যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে। পাশাপাশি, তারা চান কৃষকদের বিদ্যুতের চাহিদাকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া হোক এবং কৃষিকাজের জন্য তাদের যথেষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হোক।

এছাড়াও, নিগম প্রশাসনকে জনগণের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে, অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে এবং ফোন কলের উত্তর দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে যাতে মানুষকে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে না হয়।

```

Leave a comment