ভোডাফোন আইডিয়ার আর্থিক সংকট: দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা

নয়াদিল্লি: ভারতের অন্যতম প্রধান টেলিযোগাযোগ কোম্পানি ভোডাফোন আইডিয়া (ভিআইএল) আর্থিক সংকটে জর্জরিত এবং কোম্পানিটি এজিআর (Adjusted Gross Revenue) বকেয়া নিয়ে সরকারের কাছে তাৎক্ষণিক সাহায্য চেয়েছে। কোম্পানিটি টেলিযোগাযোগ বিভাগ (DoT) কে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, সময়মতো সাহায্য না পেলে ২০২৬ সালের মার্চের পর ভারতে তাদের পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে এবং কোম্পানিটিকে দেউলিয়া হতে হতে পারে।

৩০,০০০ কোটি টাকার বেশি এজিআর ছাড়ের দাবি

ভোডাফোন আইডিয়া সুপ্রিম কোর্টে এজিআর বকেয়া নিয়ে প্রায় ৩০,০০০ কোটি টাকার ছাড়ের আবেদন করেছে। কোম্পানির দাবি, স্পেক্ট্রাম এবং এজিআর বকেয়ার কিছু অংশ সরকারের সাথে ইকুইটিতে রূপান্তরিত হলেও, তাদের উপর এখনও প্রায় ১,৯৫,০০০ কোটি টাকার বড় বকেয়া রয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ মে সুপ্রিম কোর্টে হবে।

দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা এবং এনসিএলটিতে যাওয়ার সম্ভাবনা

কোম্পানিটি টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে লেখা চিঠিতে স্পষ্ট করে বলেছে যে, যদি সরকার সময়মতো সাহায্য না করে, তাহলে তাদের ন্যাশনাল কোম্পানি ল' ট্রাইবুনাল (এনসিএলটি)-তে দেউলিয়া প্রক্রিয়া শুরু করতে হতে পারে। এর ফলে কেবল কোম্পানির সেবাগুলিই প্রভাবিত হবে না, বরং সরকারের কোম্পানিতে ৪৯% শেয়ারের মূল্যও প্রায় শূন্য হয়ে যেতে পারে।

সরকারের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক সমর্থনের প্রয়োজন

ভোডাফোন আইডিয়া জানিয়েছে যে, এজিআর বকেয়া নিয়ে সরকারের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক সাহায্য না পেলে, ব্যাঙ্ক থেকে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে এবং কোম্পানিকে ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এর সরাসরি প্রভাব কোম্পানির ব্যবসায় পড়বে এবং কোম্পানি তাদের সেবাগুলি চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা হারাতে পারে।

২৬,০০০ কোটি টাকার ইকুইটি ইনফিউশনও কাজে আসেনি

আর্থিক সংকট কমাতে কোম্পানিটি ২৬,০০০ কোটি টাকার ইকুইটি ইনফিউশন পেয়েছে, যার বেশিরভাগ অংশীদারিত্ব সরকারের কাছে রয়েছে। তবুও কোম্পানি ব্যাঙ্ক থেকে যথেষ্ট সাহায্য পাচ্ছে না, যার ফলে তাদের আর্থিক অবস্থা উদ্বেগজনক হয়ে রয়েছে।

এজিআর কি?

এডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউ (এজিআর) হল সেই ভিত্তি যার উপর টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলিকে সরকারকে লাইসেন্স এবং ব্যবহারের ফি দিতে হয়। এই ফি টেলিযোগাযোগ বিভাগ (DoT)-এর অধীনে আদায় করা হয় এবং এটি কোম্পানিগুলির জন্য একটি বড় আর্থিক চাপের কারণ হয়ে উঠেছে।

ভোডাফোন আইডিয়ার আর্থিক চ্যালেঞ্জ বেড়েই চলেছে এবং এজিআর বকেয়ার বিষয়ে সরকারের সাহায্য ছাড়া ভারতে কোম্পানির টিকে থাকা কঠিন। যদি সরকার এই বিষয়ে দ্রুত কোনও কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে কোম্পানিটির দেউলিয়া হওয়া এবং সেবা বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ মে সুপ্রিম কোর্টে, যা টেলিযোগাযোগ খাত এবং গ্রাহকদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।