শুক্রবার ভারতীয় শেয়ার বাজারের শুরু হয়েছে জোরালোভাবে। সেনসেক্স প্রায় ২৫০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে উদ্বোধন হয়েছে, অন্যদিকে নিফটি ২৪,৮৫০-এর উপরে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাপী উত্তেজনায় কিছুটা স্বস্তি, কাঁচা তেলের দাম কমে যাওয়া এবং চীনের মুদ্রানীতির স্থায়িত্বের মতো সংবাদে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব শক্তিশালী ছিল। মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ শেয়ারেও উত্থান দেখা গেছে।
বাজারের ইতিবাচক উদ্বোধন
আজ ভারতীয় শেয়ার বাজারে ভালো শুরু দেখা গেছে। BSE সেনসেক্স ২৪০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ৮১,৬০২-তে উদ্বোধন হয়েছে, অন্যদিকে NSE নিফটি ৬৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ২৪,৮৬০-তে লেনদেন করছে।
এই বৃদ্ধির কারণ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইঙ্গিত ছিল। আমেরিকা ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে বলেছে যে তারা আলোচনার পথ খোলা রাখবে এবং ইসরায়েলকে সমর্থন করার বিষয়ে পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে। এতে বিশ্বব্যাপী উত্তেজনায় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে, যার প্রভাব বাজারেও দেখা গেছে।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (PBoC)ও তাদের প্রধান ঋণের হারে কোনও পরিবর্তন করেনি। এটি ইঙ্গিত করে যে চীন তাদের অর্থনৈতিক সংস্কারগুলি স্থির গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।
কোন শেয়ারে উত্থান এবং পতন
আজকের লেনদেনে কিছু প্রধান কোম্পানির শেয়ারে ভালো উত্থান দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে M&M, Bajaj Finserv, SBI, UltraTech Cement, Maruti Suzuki, Bharti Airtel এবং Nestle India।
অন্যদিকে, IndusInd Bank, Bajaj Finance, Tech Mahindra, Kotak Bank এবং Power Grid-এর মতো শেয়ারে দুর্বলতা দেখা গেছে।
মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ শেয়ারেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বজায় রয়েছে। নিফটি মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ সূচকে প্রায় ০.৫% বৃদ্ধি দেখা গেছে। এছাড়াও, বাজারের অস্থিরতা প্রকাশকারী 'India VIX' ৩% এর বেশি নেমেছে, যা ইঙ্গিত করে যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় কিছুটা কমেছে।
সেক্টরাল ফ্রন্টে দেখা যায় যে নিফটি PSU ব্যাংক সূচকে ১% বৃদ্ধি হয়েছে। এছাড়াও রিয়েল এস্টেট, আর্থিক সেবা, ধাতু এবং IT সেক্টরেও হালকা বৃদ্ধি দেখা গেছে।
বিশ্ববাজারের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
GIFT Nifty ফিউচার্স সকাল প্রায় ৭:৩০ টায় ২৪,৭৯২-তে লেনদেন করছিল, যা ১১ পয়েন্টের হালকা হ্রাসের ইঙ্গিত দিচ্ছিল।
এশিয়ান বাজারগুলির কথা বললে, এখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। চীন তাদের এক বছরের এবং পাঁচ বছরের ঋণের প্রধান হার যথাক্রমে ৩% এবং ৩.৫% এ স্থির রেখেছে। জাপানে মে মাসের মূল মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৩.৭% হয়েছে, যা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। তবে মোট মূল্যস্ফীতির হার ৩.৫% ছিল, যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। জাপানের নিক্কেই সূচক ০.২৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে টপিক্সে খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যায়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সামান্য হ্রাস পেয়ে বন্ধ হয়েছে, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ASX ২০০ ০.৩৭% নেমেছে।
ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক ইঙ্গিত
আমেরিকা স্পষ্ট করে বলেছে যে তারা ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানের বিষয়ে বিবেচনা করছে এবং এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে নেওয়া হবে। এই ইঙ্গিত উত্তেজনায় হ্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে। আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের সমর্থন করেছেন।
আমেরিকার শেয়ার বাজার বৃহস্পতিবার 'জুনটিন্থ' ছুটির কারণে বন্ধ ছিল। তবে, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে আমেরিকার স্টক ফিউচার্সে হালকা হ্রাস দেখা গেছে।
ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক 'ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড' ৪.২৫% এ স্থির রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত জুনের বৈঠকে ৬-৩ ভোটে নেওয়া হয়েছে। এর কারণ হিসেবে ক্রমাগত বজায় থাকা মূল্যস্ফীতি এবং বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
```