মোদী সরকারের কঠোর সিদ্ধান্ত: তুরস্কের সেলেবি কোম্পানির ভারতের সাথে সম্পর্কের অবসান

মোদী সরকারের কঠোর সিদ্ধান্ত: তুরস্কের সেলেবি কোম্পানির ভারতের সাথে সম্পর্কের অবসান
সর্বশেষ আপডেট: 16-05-2025

গত ১৫ বছর ধরে ভারতের ৯টি প্রধান বিমানবন্দর—দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই, কোচি, আহমেদাবাদ, কান্নুর এবং গোয়া—তে সেবা প্রদানকারী সেলেবি কোম্পানির ভারতের সাথে সম্পর্ক এখন শেষ হয়েছে।

মোদী সরকারের এক কঠোর সিদ্ধান্তে তুরস্কের এভিয়েশন কোম্পানি সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়াকে বড় ধাক্কা লেগেছে। ভারতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদানকারী এই কোম্পানির নিরাপত্তা অনুমোদন সরকার জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তৎক্ষণাৎ বাতিল করে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রভাবে কোম্পানির শেয়ার ইস্তাম্বুল স্টক এক্সচেঞ্জে ১০% পর্যন্ত নেমে গেছে।

তুরস্কের কোম্পানির বিরুদ্ধে মোদী সরকারের বড় পদক্ষেপ

মোদী সরকার জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তুরস্কের এভিয়েশন কোম্পানি সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়ার নিরাপত্তা অনুমোদন বাতিল করে দিয়েছে। ভারতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদানকারী এই কোম্পানিকে বুরো অফ সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (BCAS) নভেম্বর ২০২২-তে অনুমোদন দিয়েছিল, যা এখন বাতিল করা হয়েছে। এর সাথে সাথে দিল্লি বিমানবন্দর সহ দেশের ৯টি বৃহৎ বিমানবন্দর থেকে কোম্পানির সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কেন এই পদক্ষেপ?

এই কঠোর সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে যখন তুরস্ক পাকিস্তানের সমর্থনে বক্তব্য দিয়েছে এবং ভারত কর্তৃক PoK-তে পরিচালিত অপারেশন সিন্দুরের সমালোচনা করেছে। এছাড়াও, ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে তুরস্কের ড্রোনের ব্যবহার ভারত সরকারকে সতর্ক করে তুলেছে। দেশজুড়ে সেলেবির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবী উঠেছিল এবং অবশেষে সরকার জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

১৫ বছরের পুরোনো সম্পর্কের অবসান

সেলেবি কোম্পানি গত ১৫ বছর ধরে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই, কোচি, আহমেদাবাদ, কান্নুর এবং গোয়া প্রভৃতি প্রধান বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এবং কার্গো সেবা প্রদান করে আসছিল। কিন্তু এখন ভারতে তার যাত্রা শেষ হয়েছে।

দিল্লি বিমানবন্দরও সম্পর্ক ছিন্ন করেছে

BCAS-এর নির্দেশের পর দিল্লি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট লিমিটেড (DIAL)ও সেলেবির সাথে সকল বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য এখন এই সেবা AISATS এবং Bird Group-এর মতো কোম্পানিগুলিকে দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার বাজারে তীব্র ধস

ভারতের এই পদক্ষেপের প্রভাব তুরস্কের শেয়ার বাজারেও দেখা গেছে। সেলেবি হাভা সার্ভিসি এএস-এর শেয়ার ১৬ মে ১০% নেমে ২০০২ পয়েন্টে এসে পৌঁছেছে। চারটি ট্রেডিং সেশনে শেয়ারের দাম প্রায় ৩০% কমে গেছে। কোম্পানির শেয়ার যা একসময় ৩২৮৫ পর্যন্ত গিয়েছিল, এখন ১৬৬০-এর নিম্নস্তরে পৌঁছেছে।

কোম্পানির স্পষ্টীকরণ এবং বিতর্ক

সেলেবি ইন্ডিয়া এক বিবৃতি জারি করে বলেছে, "আমরা তুরস্ক সরকারের সাথে যুক্ত নই এবং আমরা একটি পেশাদার, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ কোম্পানি।" তবে, রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোগানের কন্যা সুমিয়া এরদোগান বায়রাকতার কোম্পানির অংশীদার, যা কোম্পানি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে।

সরকারের স্পষ্ট বার্তা, জাতীয় স্বার্থই প্রধান

কেন্দ্রীয় রাজ্যমন্ত্রী মুরলিধর মোহল সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, "দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোম্পানির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী উঠেছিল। আমরা জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এর নিরাপত্তা অনুমোদন বাতিল করেছি।"
এই সম্পূর্ণ ঘটনা দেখায় যে ভারতের নীতি এখন স্পষ্ট—কোনও কোম্পানি ভারতে তখনই ব্যবসা করতে পারবে যখন সে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার সম্মান করবে।

Leave a comment