ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ: বিশ্ব নেতাদের সাথে উত্তেজনাপূর্ণ সাক্ষাৎ ও বিতর্ক

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ: বিশ্ব নেতাদের সাথে উত্তেজনাপূর্ণ সাক্ষাৎ ও বিতর্ক
সর্বশেষ আপডেট: 02-03-2025

দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং বিশ্ব নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ। কিছু সাক্ষাৎ সফল হলেও কিছু অস্বস্তিকর এবং শিরোনামে উঠে এসেছে।

আমেরিকা: ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের জন্য আমেরিকার রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন দেশের নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তবে, এই সাক্ষাতগুলিতে অনেক সময় তার আগ্রাসী আচরণ লক্ষ্য করা গেছে, যার ফলে কিছু নেতা অস্বস্তিতে পড়েছেন।

জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে আসেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের আশা ছিল, কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের সময় ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির মধ্যে তীব্র বিতর্ক হয়। ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে জেলেনস্কি বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করছেন। এ সময় আমেরিকার উপ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভেন্সও উপস্থিত ছিলেন, যিনি বিতর্কের সময় ট্রাম্পের পক্ষে ছিলেন বলে মনে হয়েছে।

ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁর সাথেও মতবিরোধ

ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে আসেন। ট্রাম্পের সাথে তার সাক্ষাতের সময় বেশ কিছু বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে ইউরোপ ইউক্রেনকে শুধুমাত্র ঋণ দিয়েছে, তবে আমেরিকা প্রকৃত সাহায্য করেছে। এ ব্যাপারে ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পকে মাঝখানে থামিয়ে বলেন যে ফ্রান্সের সাহায্য ছিল শান্তির জন্য, কোনো ঋণ হিসেবে নয়।

জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহকে ট্রাম্পের কঠোর সতর্কতা

জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ এবং ট্রাম্পের সাক্ষাতও আলোচনায় ছিল। ট্রাম্প বলেন যে আমেরিকা গাজার নিয়ন্ত্রণ করার এবং ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে। যখন রাজা আব্দুল্লাহ এতে আপত্তি জানান, তখন ট্রাম্প হুমকি দেন যে জর্ডান এবং মিশরকে দেওয়া আমেরিকার সাহায্য বন্ধ হতে পারে। পাশাপাশি, এই দেশগুলিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কথাও তিনি বলেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনা

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা-র সাথে সাক্ষাতের সময় ট্রাম্প জাপান-আমেরিকা বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরেন। জাপানি প্রধানমন্ত্রী তার দেশের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন, যার ফলে এই সাক্ষাত অন্যান্য সাক্ষাতের তুলনায় বেশি আন্তরিক ছিল। তবে, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার প্রতি ট্রাম্পের উদ্বেগ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় দেখা গেল কৌশলগত দূরত্ব

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের সাথে সাক্ষাতের সময় ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, যদি ব্রিটিশ সেনা ইউক্রেনে মোতায়েন হয়, তাহলে কি আমেরিকা সমর্থন দেবে? ট্রাম্প প্রথমে বলেন যে ব্রিটেনকে নিজের সুরক্ষা নিজেই করতে হবে, কিন্তু পরে বলেন যে প্রয়োজন হলে আমেরিকা সাহায্য করবে। এরপর তিনি স্টার্মারকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেন যে, কি ব্রিটেন একা রাশিয়ার মোকাবেলা করতে পারবে? এ ব্যাপারে স্টার্মার উত্তর দেননি, তবে হালকা হাসির সাথে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

ট্রাম্পের কূটনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী এবং অস্বস্তিকর আচরণ অনেক দেশের নেতাদের অস্বস্তিতে ফেলেছে। তার বক্তব্য এবং সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হলো তার এই কূটনৈতিক অবস্থান আমেরিকার বিশ্বব্যাপী সম্পর্ককে কীভাবে প্রভাবিত করে।

Leave a comment