সোমবার সুপ্রিম কোর্ট ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে নগদ অর্থ সংক্রান্ত বিবাদে FIR দায়েরের দাবি জানিয়ে দায়েরকৃত একটি রিট আবেদনের দ্রুত শুনানির জন্য সম্মতি প্রদান করেছে।
নয়াদিল্লি: ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে কেন্দ্র করে চলমান তথাকথিত নগদ লেনদেনের বিবাদে এখন সুপ্রিম কোর্টে আইনি পদক্ষেপের দাবি তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এই বিষয়ে দায়েরকৃত রিট আবেদনটি দ্রুত শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট সম্মতি দিয়েছে। যদি আবেদনে থাকা প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলি দূর করা যায়, তবে বুধবার এই মামলা শুনানির জন্য উপস্থাপিত হবে।
আবেদনকারী FIR-এর দাবি তুলেছেন
এই আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ম্যাথিউস নেডুম্পারা এবং আরও তিনজন দায়ের করেছেন। আবেদনে দাবি করা হয়েছে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হোক এবং ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং দণ্ডবিধি প্রক্রিয়া অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক। আবেদনকারীরা যুক্তি দিয়েছেন যে, অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এই মামলার প্রাথমিকভাবে গুরুত্বের সত্যতা নিশ্চিত করেছে এবং এই ধরনের পরিস্থিতিতে ফৌজদারি তদন্ত এড়িয়ে যাওয়া যায় না।
সুপ্রিম কোর্ট সম্মতি জানিয়েছে
প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই. চন্দ্রচূড়ের অনুপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আবেদনকারীর যুক্তি শুনে বলেছে, যদি আবেদনের প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলি সময়মতো দূর করা যায়, তবে বুধবার এই মামলা তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। আবেদনকারী মঙ্গলবার অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বুধবার শুনানির দাবি করেছিলেন, যা আদালত সশর্তভাবে গ্রহণ করেছে।
নগদ উদ্ধারের প্রতিবেদন বিষয়বস্তু হয়েছে
এই আবেদনের পটভূমিতে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট চত্বরে বিচারপতি বর্মার সাথে সম্পৃক্ত একটি দোকানে নগদ অর্থ উদ্ধারের কথা প্রকাশ পেয়েছে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিকে প্রদত্ত গোপনীয় প্রতিবেদনে এই উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি এই প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাঠিয়েছেন এবং সংবিধান অনুযায়ী অভিযোগ প্রক্রিয়া শুরু করার সুপারিশ করেছেন।
অভ্যন্তরীণ তদন্ত বনাম ফৌজদারি তদন্ত
আবেদনে এই বিষয়টিতেও জোর দেওয়া হয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রক্রিয়া কেবলমাত্র শৃঙ্খলাবিধিগত ব্যবস্থা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ এবং এটি ফৌজদারি আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিকল্প হতে পারে না। আবেদনকারীদের মতে, ন্যায়বিচারের মর্যাদা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য এ ধরনের গুরুতর অভিযোগের উপর জনসাধারণের ও স্বাধীন ফৌজদারি তদন্ত প্রয়োজন।
এই মামলা দেশে न्यायিক জবাবদিহিতার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদি সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদনে শুনানি শুরু করে এবং FIR দায়েরের নির্দেশ দেয়, তবে এটিই প্রথমবার হবে যখন কোনো কর্মরত হাই কোর্ট বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হতে পারে। এতে কেবলমাত্র ন্যায়বিচারের স্বচ্ছতায় বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে না, বরং এটি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দিকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।