এই সপ্তাহে শেয়ার বাজারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটতে পারে যা বাজারের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে। নিফটি তিন সপ্তাহ ধরেই অবনমনে রয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উৎসাহের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
শেয়ার বাজার: এই সপ্তাহে শেয়ার বাজার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্য দিয়ে যাবে যা আগামী দিনগুলিতে বাজারের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করতে পারে। নিফটি গত তিন সপ্তাহ ধরেই অবনমনে রয়েছে এবং এই সপ্তাহেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারে উৎসাহের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে, এই সপ্তাহে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যা বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে।
১. বাজেট
এই সপ্তাহের সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো ১ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত হতে চলা কেন্দ্রীয় বাজেট। সরকারের পদক্ষেপগুলির প্রতি বাজারের দৃষ্টি রয়েছে, বিশেষ করে আয়করের পরিবর্তন, ক্যাপেক্স বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে। বাজেটের পরবর্তী ট্রেডিং সেশনে বাজারে উত্থান-পতন দেখা যেতে পারে।
২. তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল (Earnings Season)
তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল ছিল। এই সপ্তাহে টাটা স্টিল, Bajaj Auto, Maruti, টাটা মোটরস, ONGC, Cipla এবং IndusInd Bank-এর মতো প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলির ফলাফল প্রকাশিত হবে। এই ফলাফলগুলি বাজারে চাপ সৃষ্টি করতে পারে অথবা স্বস্তিও দিতে পারে।
৩. ফেড মিটিং (US Fed Meeting)
২৮-২৯ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে চলা মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের প্রতি বাজারের নজর থাকবে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে পারে, কিন্তু গত মাসে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর পর সিদ্ধান্ত নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। এছাড়াও, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া মন্তব্যগুলিও বাজারে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে।
৪. এফআইআই-এর অবস্থান (FII Action)
বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী (FII)ও প্রধান বিষয় হবে। এফআইআই এখন পর্যন্ত ৬৭,০০০ কোটি টাকার মূলধন প্রত্যাহার করেছে। যদি এফআইআই বাজারে পুনরায় বিনিয়োগ করে, তাহলে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, অন্যদিকে তাদের নেতিবাচক অবস্থান বাজারে চাপ বাড়াতে পারে।
৫. ট্রাম্পের নীতি (Trump's Policies)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত নতুন নীতিগুলিও বাজারে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে। তার নীতি সংক্রান্ত ঘোষণাগুলি স্বল্পমেয়াদে বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে।
৬. ম্যাক্রো তথ্য
এই সপ্তাহে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাক্রো ঘটনা ঘটবে, যার মধ্যে ইসিবির সুদের হারের সিদ্ধান্ত, মার্কিন হোম সেলস ডেটা, ভারতের কোর সেক্টরের আউটপুট এবং মার্কিন পিসিই ডেটা উল্লেখযোগ্য। এই তথ্যগুলি বাজারের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করতে পারে।
৭. প্রযুক্তিগত সংকেত (Technical Factors)
প্রযুক্তিগত দিক থেকে, নিফটি গত ১০ ট্রেডিং সেশনে ২২,৯৫০-২৩,৪৫০-এর মধ্যে ব্যবসা করছে। ২২,৯৫০-এর নিচে অবনমন হলে বাজারে আরও বিক্রয়ের চাপ পড়তে পারে। অন্যদিকে, ২৩,৪৬০-এর উপরে বন্ধ হলে স্বল্পমেয়াদী উত্থান দেখা যেতে পারে।
৮. বন্ড ইল্ড, টাকা এবং ক্রুড অয়েল (Bond Yields, Rupee, Crude Oil)
মার্কিন বন্ড ইল্ড এবং ডলার ইন্ডেক্সও বাজারকে প্রভাবিত করবে। এই দুটিতে কোনও পাল্টা পরিবর্তন বিশ্ব বাজারে ইতিবাচকতা আনতে পারে। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম কমেছে এবং টাকার অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ হবে। ডলারের তুলনায় টাকা দুর্বল হলে ব্যয়বহুল আমদানি এবং মূল্যস্ফীতির চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
